ডেভিড ওয়ার্নার: ‘রোমাঞ্চকর আর বিনোদোনদায়ী’ এক ক্রিকেটারের প্রস্থান
০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:০৮ এএম | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:০৮ এএম
পাকিস্তানের বিপক্ষে দলকে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দিয়ে যখন তিনি মাঠ ছাড়ছিলেন সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এসসিজি) দর্শকেরা তখন উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে বিদায় জানালেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক ওপেনারকে। দুই হাত উঁচিয়ে বিদায়ী শুভেচ্ছার জবাব দিলেন কিংবদন্তি। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে যে দারুণ এক অভিযাত্রার শুরু হয়েছিল, তার সমাপ্তি ঘটল আজ, এভাবেই। সাদা জার্সি আর লাল বলের ক্রিকেটে যে আর দেখা যাবে না ডেভিড ওয়ার্নারকে।
বিদায়ী সিরিজের শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে। শেষটা তিনি রাঙালেন ৫৭ রানের ঝলমলে ইনংসে। সিডনিতে ৮ উইকেটের জয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজটাও জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এমন ঝলমলে বিদায়েও নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি ওয়ার্নার।
ম্যাচ শেষে সতীর্থ দর্শকরা তো বটেই, পাকিস্তান ক্রিকেট দলও বিদায়ী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ওয়ার্নারকে। মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় নিজের গ্লাভস ও হেলমেট তিনি তুলে দিয়েছেন এক খুদে ভক্তের হাতে। যেন এর মাধ্যমে একটা বার্তাও দিলেন ৩৭ বছর বয়সী। দায়িত্বটা পরের প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়ার। ওয়ার্নারের বিদায়ে তাই চোখ মুছতে দেখা যায় দর্শকদেরও।
ম্যাচ শেষে মাঠে নেমে বিদায়ী সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ওয়ার্নার। তখনও দর্শকরা মাঠে ছিলেন প্রিয় খেলোয়াড়কে কাছ থেকে বিদায় জানারের জন্য। গৌরবজ্জ্বল ক্যারিয়ারের জন্য পরিবারকে কৃতজ্ঞতা জানান ওয়ার্নার।
‘তাদের সাহায্য ছাড়া আমি যেটা করি, সেটা করতে পারতাম না। মা–বাবার অবদানও কম নয়, তাঁরা আমার সুন্দর বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করেছেন। ভাই স্টিভ, আমি তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছি। এরপর ক্যানডিস এল আমার জীবনে।’
‘আমার পরিবারটা দারুণ, তাদের সঙ্গে প্রতিটি মুহূর্ত আমি উপভোগ করি। তাদের আমৃত্যু ভালোবাসি এবং আমি এটা নিয়ে বেশি কথা বলব না, আবেগতাড়িত হয়ে পড়ব। তবে ক্যানডিসকে ধন্যবাদ, সে আমার জন্য যা করেছে! তুমিই আমার জগৎ।’
সতীর্থদের যখন মাঠে নামতে দেখবেন তখন কি আবেগ ছুঁয়ে যাবে না ওয়ার্নারকে? উত্তর দিতে গিয়ে কোথায় যেন একটা টান অনুভব করলেন ওয়ার্নার।
‘আমার মনে হয় যখন তাদের মাঠে নামতে দেখব কিন্তু আমি খেলব না, তখন একটু আবেগতাড়িতই হব। তবে যেটা বলেছি, এই দলটা দারুণ। আমাদের বেশির ভাগের বয়সই ত্রিশের ওপাশে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা আরও তরুণ না হলেও এই দলটা কর্মক্ষম, বিশ্বমানের এবং অসাধারণ।’
ওয়ার্নারকে নিয়ে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বললেন, ‘দলে ওয়ার্নারের শূন্যস্থান পূরণ করা অনেক কঠিন।’
ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ার্নারকে মনে রাখার মতো ঘটনা আছে অনেক। ১১২ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২০৫ ইনিংসে ২৬টি সেঞ্চুরি ও ৩৭টি ফিফটিতে ৪৪.৫৯ গড়ে করেছেন ৮ হাজার ৭৮৬ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস অপরাজিত ৩৩৫ রানের।
তবু তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ক্রিকেট সমর্থকরা কেন তাকে মনে রাখবে। উত্তরে ওয়ার্নার বলেন,‘রোমাঞ্চকর ও বিনোদনদায়ী। যেভাবে খেলেছি, তাতে লোকের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি বলে বিশ্বাস করি এবং আশা করি তরুণেরাও আমাকে অনুসরণ করবে। সাদা বল থেকে টেস্ট ক্রিকেট—এটাই আমাদের খেলার শীর্ষবিন্দু। তাই কঠোর পরিশ্রম করো এবং লাল বলের ক্রিকেট খেলো; কারণ, এটাও মজার।’
সত্যিই তো! ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই তার মতো করে প্রতিপক্ষ বোলারদের শাসন করতে পেরেছেন ক’জন। সে দিক থেকে হয়তো সব সময়ের সেরাদেরই একজন হয়েই থাকবেন ওয়ার্নার।
তার বিদায়কে তাই রোমাঞ্চকর আর বিনোদোনদায়ী এক ক্রিকেটারের প্রস্থান বলা যেতেই পারে।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি: দোয়া চাইলেন তারেক রহমান
মাঘের শুরুতে আবার আসছে শৈত্যপ্রবাহ
আজহারীর মাহফিলের আগের রাতেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ
আজ ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, শীর্ষে করাচিতে
পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে বিদেশি অস্ত্রসহ ছাত্রলীগ নেতা আটক
ফ্যাসিস্টের দোসর সোহানা সাবা পেল ভারতে বড় দায়িত্ব
সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে অসন্তোষ বিএনপির
মাগুরার শ্রীপুরে কৃষক দলের বিশাল কৃষক সমাবেশ
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?
টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমল
নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ড্রেজারসহ ৬ জন গ্রেফতার
টিউলিপের পতন, এক রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান
অভিষেকের আগে শি জিনপিংকে ট্রাম্পের ফোন
সিরিয়ায় আটক নাগরিকদের দেশে বিচার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফ্রান্স
বিশ্ব ইজতেমার ৭০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন : ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার
আখাউড়া কালন্দি খালে বইবে জলধারা
টঙ্গীতে ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেফতার ১৩
৩৩ জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ৯৭৭ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল
যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল
আল-শারা ও শেখ মোহাম্মদের ঐতিহাসিক টেলি-আলোচনা