স্মৃতির ভেলায় চেপে ‘ঘরে’ ফেরা
২১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯ এএম
২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শেষবার যখন কোন ক্রিকেটীয় কার্যক্রম হয়, পেসার নাহিদ রানা তখন ¯্রফে ৩ বছরের শিশু। ঐতিহাসিক মাঠটিতে তিনি তাই ঢুকলেন প্রথমবার। নাহিদের কথা শুরতেই বলার কারণ বিসিবির ফিজিক্যাল পারফরম্যান্স অ্যাসেসমেন্টের রানিং প্রতিযোগিতায় এই তরুণ এক গ্রুপে হয়েছেন সেরা। দারুণ ফিটনেস দেখিয়ে তালি পেয়েছেন সবার।
২০০৫ সালের পর মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামই ক্রিকেটের ‘হোম’। এরপর বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টসহ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আর কখনই ক্রিকেটারদের পেশাদার কোন কাজে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। বর্তমান দলের ক্রিকেটারদের সবারই আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে ২০০৫ সালের পর, তাদের সেই মাঠে খেলার কথা নয়। তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা ছিলো মাহমুদউল্লাহর। অবশ্য এদিন স্বাভাবিকভাবে ব্যাটে-বলের কোন কার্যক্রম ছিল না এই মাঠে।
গতকাল সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে ক্রিকেটারদের রানিং রেখেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রেন্থ এন্ড কন্ডিশনিং কোচ নাথান কেইলি। দুই ভাগে ভাগ হয়ে ১৬’শ মিটার দৌড়েছন নাজমুল হোসেন শান্তরা। সবার মধ্যে সেরা হয়েছেন দুই পেসার। এক গ্রুপে প্রথম হয়েছেন নাহিদ রানা, আরেক গ্রুপে সবার আগে দৌড় শেষ করেন তানজিম হাসান সাকিব। বর্তমান দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার সিনিয়র ৩৮ পেরুনো মাহমুদউল্লাহ স্বাভাবিকভাবে দৌড় শেষ করেছেন সবার শেষে।
আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্প করার পরিকল্পনা করে বিসিবি। মূলত চলতি বছর সব সংস্করণে ঠাসা সূচির কথা বিবেচনা করে খেলোয়াড়দের ফিটনেসের অবস্থা পরীক্ষা করা হয়েছে। আগামী ৭ মাসে বাংলাদেশ দল খেলবে ৮ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে এবং অন্তত ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। অন্তত যেকোনো এক সংস্করণে বিবেচিত হতে পারেন এমন ৩৫ ক্রিকেটার ছিলেন এই সেশনে। নিয়মিত ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএলে থাকায় মুস্তাফিজুর রহমান, চোট থেকে ফেরার পথে থাকায় সৌম্য সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় ছিলেন না সাকিব আল হাসান। এছাড়া তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলামকেও দেখা যায়নি গত সপ্তাহে পেশির টান পাওয়ার কারণে।
৩৫ ক্রিকেটারের পদচারণায় এদিন সকালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিরে এলো হারিয়ে যাওয়া ক্রিকেটীয় আবহ। বর্তমান দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের এই মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেটিও কোনো স্বীকৃত ক্রিকেটে নয়। ২০০৪ সালে ঘরোয়া একটি টুর্নামেন্ট খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বিকেএসপির হয়ে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলেছেন মুশফিক। লম্বা সময় পর এই মাঠে এসেই গ্যালারির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেল মাহমুদউল্লাহকে। আঙুল উঁচিয়ে কিছু একটা বললেন তিনি বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামকে। কাছেই থাকা জাতীয় দলের ম্যানেজার নাফিস ইকবাল তখন যেন নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের সুখস্মৃতিতে ডুব দিয়েছেন।
সম্ভাবনার পূর্ণতা না পাওয়া ক্যারিয়ারের একমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরি এই মাঠেই করেছিলেন নাফিস ইকবাল। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞার সেই লড়িয়ে সেঞ্চুরির পথ ধরে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। এখন সংস্কার কাজ চলতে থাকা মাঠের ঘাস, নতুন অ্যাথলেটকস ট্র্যাক ও অন্যান্য স্থাপনা দেখে নিজের খেলোয়াড়ি সময়ের সঙ্গে মেলাতে পারছিলেন না সাবেক এই ওপেনার। বললেন, ‘আমাদের খেলার প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়া, খেলা দেখে শেখা সব এই স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করেই। এখনো মনে আছে খুব সম্ভবত ১৯৯৩ বা ১৯৯৪ সালে প্রথম এই মাঠে এসেছিলাম খেলা দেখতে। কাজিনরা যেহেতু খেলতেন, ফারুক ভাই (ফারুক আহমেদ) জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। পাশাপাশি আইকনিক যত খেলোয়াড়রা ছিলেন তাদের দেখে খেলা শুরু। আমার বাংলাদেশে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা এখানে শুরু। আমার প্রথম যে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটা আন্ডার নাইনটিতে একটা অনুশীলন ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে, সেটা এই মাঠে। জাতীয় দলে আমি এখানে কোন খেলা পাইনি, এটা আমার একটা আক্ষেপ। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গণ মানেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। এখানে আসলে আপনার ভালো না লেগে ফেরার কোন সুযোগই নাই।’
ফিটনেশ সেশনে শেষে ট্রেনার ইফতেখার ইসলাম ইফতি গণমাধ্যমে বলেছেন খেলোয়াড়দের সামগ্রিক ফিটনেসের অবস্থা বুঝতে চেয়েছেন তারা, ‘এই পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝলাম খেলোয়াড়দের অবস্থাটা কেমন। এটার মধ্যে পাশ-ফেলের কিছু নেই। ডিপিএল গিয়েছে, বিপিএল গিয়েছে। এরপরে ওদের ফিটনেসের অবস্থা কি সেটা জানার জন্য (এই উদ্যোগ)। এটা জানার পর খেলোয়াড়দের কাকে কি অনুশীলন করাতে হবে এটা খুঁজে বের করব। ওদের জানিয়ে দেব, ওভাবে আমরা প্রয়োগ করব।’ রানিং করার জন্য কেন অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক ব্যবহার করার কারণও ব্যাখ্যা করেন ইফতি, ‘অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক বেছে নেওয়া আসলে টাইমিংয়ের একটা বিষয় আছে। আমরা যদি আন্তর্জাতিকভাবে অনুসরণ করি তাহলে বেশ কিছু টেস্টিং মেথড আছে, আমরা আজ (গতকাল) ১৬শ মিটার টাইম ট্রায়াল নিলাম। অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে যদি নেই আমরা তাহলে প্রপার টাইমিংটা... কারণ ওইভাবেই ক্যালকুলেট করা হয়। এটা ওদের কাছে নতুন মনে হয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো।’
খেলোয়াড়দের ফিটনেসে সন্তুষ্ট হলেও আরও উন্নতির জায়গা দেখছেন ট্রেনাররা। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে রানিং সেশনের পর খেলোয়াড়রা ফিরেছেন মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে। সেখানে জিম সেশন আছে তাদের।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭
রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ
ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল
পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের
দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ
হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি
রাওয়ার নেতৃত্বে আবদুল হক ও ইরশাদ সাঈদ
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক