যেখানে সাকিব সেখানেই মাহমুদউল্লাহ
১০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম
আর মাত্র একটি ম্যাচ খেলবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তারপর বিদায় নেবেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে। তাতে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবেন এই ম্যাচটি খেলার পর (১৪১)। বাংলাদেশ থেকে তার কাছাকাছি থাকবেন ১২৯ ম্যাচ খেলা সাকিব আল হাসান। কিন্তু সাকিব তো এবার ভারত সিরিজেই কানপুর টেস্টের আগে টেস্টের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর ঘোষণা করেছেন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে যা-ই হোক, বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ আপাতত থেকে যাবেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে একটি ধারাও কিন্তু খেয়াল করা যায়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর যত রেকর্ড, তার ধারেকাছে কোনো না কোনোভাবে আছেন সাকিব। কিংবা সাকিব এগিয়ে, তার ধারেকাছে মাহমুদউল্লাহ।
যেমন ধরুন, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে ৪৩ ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের হয়ে এটি রেকর্ড। দ্বিতীয় কে? ৩৯ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা সাকিব। কিন্তু ম্যাচ জয়ে আবার দুজনে সমানে সমান। মাহমুদউল্লাহর মতো সাকিবের নেতৃত্বেও ১৬টি করে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে তাকালে দুজনের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় আরও একটি- এই সংস্করণে দুজনের ব্যাটিং গড়ই ২৩- এর ঘরে। মাহমুদউল্লাহর ২৩.৪৮, সাকিবের ২৩.১৯।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ২৬ বার। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তালিকায় তিনিই শীর্ষে, সাকিব ১৭ বার অপরাজিত থেকে দ্বিতীয়। দুজনে হাত ধরাধরি কার হাঁটছেন আরও একটি জায়গায়। অপরাজিত থাকা ইনিংসগুলোয় স্ট্রাইক রেটের হিসাবেও খুব কাছাকাছি দুজন। অন্তত ১৫ বার অপরাজিত ছিলেন-বাংলাদেশের এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের স্ট্রাইক রেটই ১৪০- এর ওপরে। আর রানের বিষয়টি নিশ্চয়ই আপনার জানা। ২৩৯৫ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ। ২৫৫১ রান নিয়ে শীর্ষে সাকিব। মাহমুদউল্লাহ যেহেতু আরও দুটি ম্যাচ খেলবেন, তাই ১৫৬ রানের এই ব্যবধান কমার সম্ভাবনাই বেশি। এমনকি এই শেষ দুই ম্যাচে দুটি ভালো ইনিংস খেলে ফেললে মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব চলে আসবেন আরও কাছাকাছি।
ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। ধরুন, গতকাল দিল্লির দ্বিতীয় ম্যাচ (চলছিল) ও হায়দরাবাদে তৃতীয় ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। তখন কী হবে? আনন্দ-উল্লাস তো হবেই, এর পাশাপাশি রেকর্ড বইয়েও একটি হিসাব পাল্টে যাবে। তখন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ৫০ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের অংশ হয়ে থাকার গৌরবতিলক থাকবে শুধু সাকিব-মাহমুদউল্লাহর। আপাতত তা শুধুই সাকিবের। বাংলাদেশের ৫২টি জয়ের অংশ সাকিব। মাহমুদউল্লাহ ৪৯টি জয়ের অংশ।
হায়দরাবাদে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলার পর এই সংস্করণে মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের বয়স হবে ১৭ বছর ৪১ দিন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি হবে কোনো খেলোয়াড়ের তৃতীয় দীর্ঘ ক্যারিয়ার। বাংলাদেশ থেকে শুধু আর একজন খেলোয়াড়ের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারই ১৭ বছর টিকে থেকেছে। ঠিকই ধরেছেন। সাকিব আল হাসান। ১৭ বছর ২০৯ দিন। এই সংস্করণে তার ক্যারিয়ারই দীর্ঘতম।
টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ
১৬ টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে যৌথ সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ডে আছেন মাহমুদউল্লাহ। তার মতো সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বেও ১৬ ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা।
২৯ বাংলাদেশকে টানা সর্বোচ্চ ২৯টি টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। পরের অবস্থানে থাকা মাশরাফি বিন মর্তুজা টানা ২৬টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন।
৪৩ এই সংস্করণে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ৪৩ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৯ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে দুইয়ে আছেন সাকিব।
৫০ আউটফিল্ড ফিল্ডার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫০টি ক্যাচ নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। এই তালিকায় সৌম্য সরকার আছেন তার পরের স্থানে। তার ধরা ক্যাচের সংখ্যা ৪৬টি।
৬৬ বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে শ‚ন্য ছাড়া একটানা সবচেয়ে বেশি ইনিংস খেলার কীর্তি মাহমুদউল্লাহর দখলে। তিনি ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের অগাস্ট পর্যন্ত টানা ৬৬ ইনিংসে কোনো ডাক মারেননি। পরের নামটি বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর। তিনি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে অভিষেকের পর থেকে খেলা ৪৫ ইনিংসে একবারও শ‚ন্য রানে আউট হননি।
৭৪ ক্রিকেটেরক্ষুদ্রতম সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। লিটন দাস দুইয়ে আছেন ৫৭টি ছক্কা নিয়ে।
১০০ বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ ১০০তম ম্যাচ খেলেন ২০২১ সালে। মিরপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড।
১৩২ এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটির সঙ্গেও মিশে আছে মাহমুদউল্লাহর নাম। ২০১২ সালে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তামিম ইকবাল ও তিনি মিলে দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১৩২ রান যোগ করেছিলেন। ।
১৪০ বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ১৪০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ (গতকালসহ) খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। সাকিব দ্বিতীয় স্থানে আছেন ১২৯টি ম্যাচে মাঠে নেমে।
৮০৪ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে একটি নির্দিষ্ট ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ৩৬ ইনিংসে তার সংগ্রহ ৮০৪ রান। দুইয়ে সাকিব আছেন মিরপুরেই ৩৪ ইনিংসে ৫৪৭ রান নিয়ে।
২৩৯৫ এই সংস্করণে টাইগারদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩৯৫ রানের (গতকালেরটি বাদে) মালিক মাহমুদউল্লাহ। ওপরে আছেন কেবল সাকিব। তিনি করেছেন ২৫৫১ রান।
১৭ বছর ৩৫ দিন
বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় দীর্ঘতম ক্যারিয়ার মাহমুদউল্লাহর। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে কেনিয়ার বিপক্ষে অভিষেক থেকে ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচ খেলা পর্যন্ত তার ক্যারিয়ারের ব্যাপ্তি ১৭ বছর ৩৫ দিন। এই তালিকায় সবার ওপরে সাকিব (১৭ বছর ২০৯ দিন)। দুই টাইগার ক্রিকেটারের মাঝে অবস্থান জিম্বাবুয়ের শোন উইলিয়ামসের (১৭ বছর ১৬৬ দিন)।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত
শেষ তিন মাসে রেকর্ড বাজেট ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের