২৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের লজ্জাজনক হার

স্পোর্টস ডেস্ক

০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম

ছবি: আফগানস্তান ক্রিকেট বোর্ড/ফেসবুক

শান্ত-মিরাজের জুটিতে জয়ের পথেই হাটছিল বাংলাদেশ। জুটি ভাঙতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। ২ উইকেটে ১২০ থেকে ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেল ইনিংস!

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ২৩৬ রানের লক্ষ্যে ৩৪.৩ ওভারে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে একাই বাংলাদেশকে ধ্বসিয়ে দেন ১৮ বছর বয়সী ডানহাতি অফস্পিনার আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফর। ২টি নেন রশিদ খান।

বাংলাদেশের শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছে ৫৩ বল আর ২৩ রানে। এর মধ্যে শেষ ৭ উইকেট পড়েছে ২৫ বল আর ১১ রানের ব্যবধানে, যেখানে গজনফরের একার শিকারই ৫ উইকেট! অথচ ক্যারিয়ারের আগের পাঁচ ম্যাচ মিলিয়ে তিনি নিতে পারেন ৪ উইকেট।

অধিনায়ক শান্ত বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন। ৩৩ রান করেন সৌম্য। ২৮ রান এসেছে মিরাজের ব্যাট থেকে।

লক্ষ্য তড়ার শুরুতে তানজিদ হাসানকে হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠেন সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত। সৌম্য ফিরলে মিরাজের সাথে আরেকটি ফিফটি জুটি উপহার দেন শান্ত।

দলপতি ফিরতেই ধ্বসের শুরু। শান্তর পরপরই সাজঘরে ফেরেন মিরাজও। অধিনায়কের মতোই গাজানফারের বলে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি। পরের ওভারে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ বোল্ড হয়ে যান রশিদের বলে।

এক ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে ৫ উইকেটের কোটা পূরণ করেন গজানফার। মুশফিককে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে শুরু। এরপর এলবিডব্লিউ করেন রিশাদকে। পরের বলে তাসকিনকে বোল্ড করে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা।

পরের ওভারে রশিদ খানকে হাঁকাতে গিয়ে লাইনমিস করে বোল্ড হৃদয়। এরপর বাংলাদেশের গুটিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।

এর আগে দারুণ বোলিংয়ে লক্ষ্যটা নাগালেই রেখেছিলেন বোলাররা। শুরুতে সুর বেধে দেন তাসকিন। পরে ধ্বংসলীলা চালান মুস্তাফিজুর। তাদের তোপ সামলে দলকে লড়াইয়ে ফেরান হাশমতউল্লাহ শহিদি ও মোহাম্মদ নবি। তবে শেষ দিকে আবার জ্বলে উঠেন তাসকিন। আফগানিস্তানকেও গুটিয়ে লক্ষ্য নাগালে রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেই লক্ষ্যই হয়ে যায় পাহাড়সম।

তাসকিন ১০ ওভারে দেন ৫৩ রান, মুস্তাফিজ ৫৮। দুজনেই নেন ৪টি করে উইকেট। এই প্রথম কোনো ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দুই পেসার নিলেন কমপক্ষে ৪ উইকেট।

৯.৪ ওভারে স্রেফ ৩২ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন আরেক পেসার শরীফুল ইসলাম।

পাওয়ার প্লের ভেতরে ৪ উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানকে চাপে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে ২০ ওভার হওয়ার আগে ফেরেন গুলবাদিন নাইবও।

৭১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন হাশমাতউল্লাহ ও নবি। দুজন মিলে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ১২২ বলে ১০৪ রান। শাহিদি ৯২ বলে ৫২ ও নাবি ৭৯ বলে ৮৫ রান করেন।

শেষ দিকে ২৮ বলে ২৭ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন নানগেয়ালিয়া খারোটে। আফগানিস্তানও পায় লড়াইয়ের পুঁজি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ৪৯.৪ ওভারে ২৩৫ (গুরবাজ ৫, সেদিকউল্লাহ ২১, রেহমাত ২, শাহিদি ৫২, ওমারজাই ০, নাইব ২২, নাবি ৮৪, রাশিদ ১০, খারোটে ২৭*, ফাজানফার ০, ফারুকি ০; শরিফুল ৯.৪-০-৩৪-১, তাসকিন ১০-০-৫৩-৪, মুস্তাফিজ ১০-০-৫৮-৪, মিরাজ ১০-০৩০-০, রিশাদ ৮-০-৪৪-০, মাহমুদউল্লাহ ২-০-১১-০)

বাংলাদেশ: ৩৪.৩ ওভারে ১৪৩ (তানজিদ ৩, সৌম্য ৩৩, শান্ত ৪৭, মিরাজ ২৮, হৃদয় ১১, মাহমুদউল্লাহ ২, মুশফিক ১, রিশাদ ১, তাসকিন ০, শরিফুল ১, মুস্তাফিজ ৩*; ফারুকি ৪-০-২২-০, গাজানফার ৬.৩-১-২৬-৬, নাবি ৪.২-০-২৩-১, ওমারজাই ৪.৪-০-১৬-১, নাইব ১-০-৯-০, রাশিদ ৮-০-২৮-২, খারোটে ৬-০-১৬-০)

ফল: আফগানিস্তান ৯২ রানে জয়ী।

ম্যাস সেরা: আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফর।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে আফগানিস্তান ১-০তে এগিয়ে।

বিভাগ : খেলাধুলা