বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ড মিলিয়ে ইতোমধ্যে চার ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এই চার ম্যাচেই বাংলাদেশের ফুটবলাররা কার্ড দেখেছেন ১৪টি। এর মধ্যে একটি লালকার্ডও রয়েছে। খেলোয়াড়দের এই ‘কার্ডপ্রীতি’র জন্য চটেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো.সালাউদ্দিন। কার্ড পাওয়া চলবে না- এই বলে তিনি ফুটবলারদের সতর্ক করে দিলেন।
মিডফিল্ডার জুনিয়র সোহেল রানা বাছাইয়ের প্রথম পর্বে মালদ্বীপের বিপক্ষে ঢাকায় লালকার্ড পাওয়ায় মিস করেছেন মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। অন্যদিকে মেলবোর্নে ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন ও ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন হলুদ কার্ড দেখে নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন গত মঙ্গলবার লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচে। সাদ উদ্দিন আগের হলুদ কার্ড দেখেছিলেন মালেতে মালদ্বীপের বিপক্ষে সমতাসূচক গোলের পর জার্সি খোলার অপরাধে। আর রাকিব হলুদ কার্ড পেয়েছিলেন মালদ্বীপের বিপক্ষে ঢাকার হোম ম্যাচে। ফরে ঘরের মাঠে লেবাননের বিপক্ষে সাদ ও রাকিবকে না পাওয়া ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য বড় ধাক্কা। এ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন, ‘পরপর দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড পেলে সাসপেন্ড তা জানা ছিল না সাদ ও রাকিবের। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম। তারা জানতো তিন কার্ডের পর এক ম্যাচ অফ। আসলে কোয়ালিফাইং রাউন্ডে দুই হলুদ কার্ডের পর এক ম্যাচ অফ। এটা আসলে মিস কমিউনিকেশন।’ সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বা ও টিম ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তারা। কারণ, একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে জামাল ভূঁইয়ারও নিয়ম জানা উচিত ছিল। তিনি কেন সতীর্থদের তা আগে জানাননি? রাকিব-সাদের নিয়ম না জানার দায় অধিনায়কেরও। আরও বিস্ময়কর বিষয় হলো কার্ডের নিয়ম জানার পরও ঢাকায় লেবাননের বিপক্ষে অহেতুক তিনটি হলুদকার্ড দেখেছেন স্বাগতিক দলের ডিফেন্ডার শাকিল আহমেদ, মিডফিল্ডার সিনিয়র সোহেল রানা ও ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন। এর মধ্যে সোহেল রানার কার্ড আবার বিপদে ফেলেছে দলকে। ঢাকায় মালদ্বীপের বিপক্ষে সোহেল রানা হলুদকার্ড দেখেছিলেন। ফলে দুই কার্ড হয়ে গেছে তার। তাই পরের ম্যাচে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না এই অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার।
চলমান বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের চার ম্যাচ বাকি থাকতে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে আছেন বাংলাদেশের আরও সাতজন খেলোয়াড়। যাদের একটি করে হলুদকার্ড আছে। এরা হলেন- বিশ্বনাথ ঘোষ, মোহাম্মদ রিদয় খান, মো. সোহেল রানা (জুনিয়র), ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, মুরাদ হাসান, শাকিল আহমেদ ও শেখ মোরসালিন। এর মধ্যে জুনিয়র সোহেল রানা মালদ্বীপের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে লালকার্ড পেয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ মিস করলেও মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাওয়া হলুদ কার্ড রয়ে গেছে তার।
দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার মতো বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিনকেও। তাই গত মঙ্গলবার লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচের পর কার্ড পাওয়া মোরসালিনসহ অন্যদের সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় কার্ড পেয়ে লেবানন ম্যাচ খেলতে না পারা রাকিবকে দেখেও রাগ ঝেড়েছেন সালাউদ্দিন,‘তুমি এখানে কেন? এই ম্যাচ হারলে তোমরাই এর জন্য দায়ী থাকতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে এসব বরদাস্ত করা হবে না। আমি ম্যাচের পর মোরসালিনকে ডেকে বলেছি, কেন সে এমন উদযাপন করলো। কেন ওভাবে দৌড় দিয়ে শক্তি ক্ষয় করলো। তাকে এটাও বলেছি, আমি কোচ হলে তাকে শাস্তি দিতাম।’ সালাউদ্দিন যোগ করেন,‘আগেও ফুটবলারদের বলেছি, এভাবে গোলের উদযাপন না করতে। কিন্তু কেউ শুনছে না। অহেতুক কার্ড দেখছে। খেলোয়াড়রা ভালো রেজাল্ট করলে যেমন বোনাস দেবো, তেমন ডিসিপ্লিন ব্রেক করলে তাদের জরিমানাও করা হবে ভবিষ্যতে। আমি সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি।’