তবে কি অর্থই সকল অনর্থের মূল!
০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ এএম | আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ এএম
আগের দিন রাতে নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে যখন সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপাজয়ের উচ্ছ্বাস, ঠিক সেই সময় চট্টগ্রামের বিলাসবহুল হোটেলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের চোখে মুখে লজ্জার ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কা। গতকাল নেপাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ঝা চকচকে ট্রফিটি নিয়ে সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্না চাকমারা যখন গোটা বাংলাদেশকে আনন্দের জোয়ারে ভাসিয়ে ঢাকায় ফিরেছে, ঠিক তখন বন্দরনগরীর সাগরিকায় নিজেদের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশের হতাশায় মুষড়ে পড়া নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিমরা। বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজ ও নারী সাফ টুর্নামেন্ট একই সময় চলায় মোটাদাগেই চোখে পড়েছে বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল ও নারী ফুটবল দলের বর্তমান চিত্র। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে এমতো হবার কতা ছিল না!
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কেন্দ্রীয় চুক্তির অধীনে খেলোয়াড়দের মাসিক বেতন দেয়। এতে অনেকেরই বছরে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আয়। নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি রয়েছে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টির জন্য আলাদা ম্যাচ ফি। এ ছাড়া বিদেশি কোচিং স্টাফ ও আধুনিক সরঞ্জামাদির পাশাপাশি অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাতো রয়েছেই। এত সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পরও ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্স গড়পড়তা। এরপরও তারা নানা সময় নানা মন্তব্য ও কর্মকা-ে উল্টো বোর্ড এবং দেশকে বিব্রত করে।
একেবারে উল্টো চিত্র বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলে। ২০২২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সাবিনারা। কষ্টের দিন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও উল্টো আরও সংগ্রাম করতে হয়েছে। বেতন বৃদ্ধির জন্য করতে হয়েছে আন্দোলন। অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের পর বেতন বৃদ্ধি হলেও সেটা অনিয়মিত। সাফ খেলতে যাওয়ার আগে সাবিনারা সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পাননি। এক বছর ধরেই বেতন অনিয়মিত। দুই-তিন মাস পর এক মাসের বেতন পেয়েছেন। সাবিনা, কৃষ্ণা ও সানজিদারা মাসে ৫০ হাজার টাকা পান। বাফুফে নতুন চুক্তিতে একাদশে থাকলে ১০ হাজার টাকা ম্যাচ ফি নির্ধারণ করেছে। সেই ফিও থাকে বকেয়া।
একদিকে যেমন বেতন নেই তেমনি নেই খেলার সুযোগও। বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা কঠোর পরিশ্রম করেন। প্রতিদিন অনুশীলন করলেও প্রস্তুতি ম্যাচ, টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পান কালেভদ্রে। বাফুফে অনেক সময় প্রীতি ম্যাচের জন্য দল ঠিক করে। পরে নানা কারণে সেই দল আসতে পারে না অথবা সাবিনাদের যাওয়া হয় না। আবার অনেক সময় অর্থের অভাবে বাফুফে সাবিনাদের খেলা আয়োজন করে দিতে পারে না। পুরুষ ফুটবলাররা বিদেশে খেলার আমন্ত্রণ তেমন পান না। নারী ফুটবলারদের বিদেশে খেলার সুযোগ আসে হরহামেশায়। নারী ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের আশ্বাস দিয়েছিল বাফুফে। সেই লিগের জন্য বাইরের দেশে খেলার অনুমতি পায়নি কয়েকজন নারী ফুটবলার। এতে আরো হতাশ হয়ে পড়েন ফুটবলাররা।
২০১৬ সাল থেকে বাফুফে ভবনে থাকেন নারী ফুটবালরা। সানজিদা-কৃষ্ণাদের মাধ্যমে শুরু হওয়া সেই ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন অনেক নতুনরা। বাফুফে ভবনের চার তলায় কয়েকটি কক্ষে অনেক সময় ৭০ জন ফুটবলার থাকেন। এক রুমে ৬-৭ জনও থাকতে হয়। নারী ফুটবল দলে আবাসনও একটা সমস্যা। ফুটবল এবং ইনজুরি সমার্থক শব্দ। ২০২২ সাফের ফাইনালে জোড়া গোল করেছিলেন কৃষ্ণা রানী সরকার। সাফের পর থেকে পায়ের আঙুল শুকিয়ে যাওয়ার রোগে ভুগছিলেন। ব্যথা কমছিল না এই ফরোয়ার্ডের। বাফুফের যেখানে কৃষ্ণার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথা, সেখানে কৃষ্ণাকে ফিট না থাকায় ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ার উপক্রম হয়েছিল। গণমাধ্যম ও ফুটবলপ্রেমীদের চাপে অবশ্য বাফুফে কৃষ্ণার ভারতে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করে ফেডারেশন।
গত দেড় বছরের মধ্যে নারী দলে কোচ পরিবর্তন হয়েছে কয়েকবার। নারী দলে ছোটন হেড কোচ থাকলেও মূল চাবিকাঠি ছিল টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির। ছোটন ও স্মলি চলে যাওয়ার পর সাইফুল বারী টিটু সাবিনাদের কোচ হন। বাফুফে কয়েক মাস পর টিটুকে বদলে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে আনেন নারীদের দায়িত্বে। নতুন কোচ, নতুন তত্ত্ব। জুন ও জুলাইয়ে চাইনিজ তাইপে এবং ভুটানে সেই তত্ত্বের প্রয়োগ করেছিলেন পিটার বাটলার। এতে সিনিয়র ফুটবলারদের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়। সাফে সেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রুপ নেয়। বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের কোচের সঙ্গে দূরত্ব থাকলেও মাঠে শতভাগই দিয়েছেন। দেশের জার্সিতে কোনো কার্পণ্য করেননি।
বাংলাদেশে অনেক জাতির বসবাস। সবার একটাই পরিচয় বাংলাদেশি। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল সবাই মিলে বাংলাদেশির দারুণ উদাহরণ। চাকমা, গারো, সাওতাল, বাঙালি সবাই বাংলাদেশের জন্য লড়েন ও জেতেন। আর ক্রিকেট দলে...।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
অমিত শাহকে অভিযুক্ত করলেন কানাডার মন্ত্রী, কোনপথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক?
টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন
না.গঞ্জে ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৫০ জন আক্রান্ত
উত্তরায় ডেঙ্গু সচেতনতা লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপি নেতা মোস্তফা জামান
ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে সামরিক বাজেট দ্বিগুণ বাড়াচ্ছে ইরান
ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সিলেটে প্রথম শহীদ জিলুর মৃত্যু বার্ষিকীতে সিলেট যুবদলের দোয়া মাহফিল
বগুড়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে ১৯ বছর পর স্বামীর মৃত্যুদন্ড
ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধবিরতি চুক্তি শিগগিরই হচ্ছে : লেবাননের প্রধানমন্ত্রী
সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মুজেজায় সিলেটে (এক লাফে) অধ্যক্ষ হয়ে যান হাকিম মুহিব বুল্লাহ
আদর্শিক ছাত্র জনতার ভূমিকা রাখতে হবে -মাওলানা ইমতিয়াজ আলম
গাড়িতে অগ্নিসংযোগকারীরা পতিত সরকারের প্রেতাত্মা- মাওলানা ইউনুছ আহমাদ
জকিগঞ্জকে স্বধীন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল হিসেবে ঘোষণার দাবী
ফ্যাসিবাদ হাসিনা গত ১৫ বছরে দেশটাকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেছিল -আমতলীতে ভিপি নুরুল হক নুর
সায়মা ওয়াজেদের সাথে কাজ করতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার
রেঞ্জ কর্মকর্তার (এসিএফ) বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে শরণখোলায় সুন্দরবনের জেলে মৎস্যজীবিদের মানববন্ধন
তূণমূল নেতাকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে এসেছে দেশের স্বাধীনতা : সিলেট মহানগর বিএনপি সেক্রেটারী ইমদাদ চৌধুরী
মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল বাকৃবির রেলস্টেশন
মানব কল্যাণে চাই সকলের একত্রিত প্রচেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব দ্রুত সংস্কার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন
সেন্টমার্টিনের অস্তিত্ব ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে