সড়ক-সেতুতে ই-টোল সময়ের দাবি
২৮ মে ২০২৩, ০৯:৫৫ পিএম | আপডেট: ২৯ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর তার অধীনে ৯টি সেতু ও ২টি সড়কে ই-টোল কালেকশন সিস্টেম চালু করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে সওজ জানিয়েছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসের পরে কোনো যানবাহন ই-টোল ছাড়া টোল প্লাজা অতিক্রম করতে পারবে না। যেসব সেতুতে বাধ্যতামূলকভাবে ই-টোল দিতে হবে, সেগুলো হলো: কর্ণফুলী সেতু, মেঘনা সেতু, গোমতী সেতু, ভৈরব সেতু, পায়রা সেতু, খান জাহান আলী সেতু, চরসিন্ধুর সেতু, শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতু ও লালন সেতু। এছাড়া আত্রাই টোল প্লাজা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক পার হতে ই-টোল ব্যবহার করতে হবে। সড়ক-মহাসড়ক ও সেতুতে ই-টোল কালেকশন সিস্টেম চালু করার কার্যব্যবস্থা যে কোনো বিবেচনায় অভিনন্দনযোগ্য। প্রথমত, ই-সিস্টেম চালু হওয়ায় টোল কালেকশন সহজ হবে। দ্বিতীয়ত, টোল প্লাজায় যানজট সৃষ্টির আশংকা থাকবে না, তাতে দ্রুত যাতায়াত নিশ্চিত হবে। ইনকিলাবে প্রকাশিত খবরে ই-টোল দেয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে, নেক্সাস-পে, রকেট ও উপায় অ্যাপের মাধ্যমে ই-টোল দেয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংক ও ই-পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে ই-টোল দেয়ার সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রযুক্তি মানুষের কাজ ও জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার যেমন সময়কে সংক্ষেপ করেছে, তেমনি কাজকর্মে গতি ও সুবিধা সংযুক্ত করেছে। ইন্টারনেট বিশ্বজুড়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রসহ নানা ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে। আমরাও এই বিপ্লবের সুফল লাভ করছি। আমাদের দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যাংকিং প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে এবং মানুষ তার সুবিধা লাভ করছে। উন্নত দেশগুলোতে টোল আদায়ের ক্ষেত্রে ই-সিস্টেম চালু আছে। আমাদের দেশে চালু হচ্ছে, এটা প্রগতির লক্ষণ। তবে এখানেই থামলে চলবে না। দেশের সব সড়ক-মহাসড়স ও বড় বড় সেতুতে টোল আদায়ের ব্যবস্থা নেয়া উচিত এবং এর টোল আদায় ই-সিস্টেমেই হওয়া সঙ্গত।
সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে অনেক বড় বড় কাজ হয়েছে। বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানের সড়ক ও সেতু হয়েছে। ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে টানেল প্রভৃতি নির্মিত হয়েছে। এসব নির্মাণে বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় হয়েছে। অর্থের যোগান এসেছে বৈদেশিক ঋণ এবং জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ বা ট্যাক্স থেকে। দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, সড়ক-সেতু ইত্যাদি নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। এত অর্থ ব্যয় কেন হয়েছে, সেটা কারো অজানা নেই। দুর্নীতি ও লুটপাটই এর কারণ। প্রায় কোনো নির্মাণই যথাসময়ে ও নির্ধারিত বাজেটে সম্পন্ন হয়নি। সময় বাড়ানো হয়েছে, বাজেটও বাড়ানো হয়েছে। লাভ হয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের। তারপরও কাজ অনেক ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন হয়নি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের লেন বাড়ানোর কাজ মানসম্পন্ন না হওয়ার জন্য মন্ত্রীকে পর্যন্ত উষ্মা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে হয়েছে। সড়ক নির্মাণের কয়েক মাসের মধ্যে ভেঙ্গে চুরে যাওয়া কিংবা স্বল্পকালের মধ্যে নির্মিত সেতুতে ত্রুটি বা ফাটল দেখা দেয়া কোনো বিরল ঘটনা নয়। এ পর্যন্ত যত সড়ক ও সেতু, ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেস ইত্যাদি নির্মিত হয়েছে, সেসব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন। আমাদের অর্থনীতির পক্ষে এ অর্থের যোগান দেয়া সম্ভব নয়। এমনিতেই দেশের ওপর ঋণের বোঝা ক্রমাগত বাড়ছে। ঋণের আসল পরিশোধ তো পরের কথা, সুদ পরিশোধের জন্যই বাজেটে লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে। আগামীতে পরিস্থিতির আরো অবনতির আশংকা করছেন অর্থনীতিবিদরা। রাস্তাঘাট, সড়ক-সেতু ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার নিয়মিত ও অপরিহার্য কাজ। এটা ফেলে রাখা সম্ভব নয়। ফেলে রাখলে আরো ক্ষতির আশংকা থাকে। সেহেতু রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার মেরামতের জন্য অর্থের ব্যবস্থা করতেই হবে। এ জন্য সড়ক-সেতুর টোল আদায় ব্যবস্থাকে সম্প্রসারিত করার বিকল্প নেই।
টোল যথাযথভাবে এবং সহজে যাতে আদায় হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন সড়ক ও সেতুতে এখন টোল আদায়ের যে ব্যবস্থা চালু আছে, তা ত্রুটিমুক্ত নয়। এ বিষয়ে অভিযোগও যথেষ্ট। টোল ঠিকমতো আদায় হয় না, আদায়কৃত টোলের সব অর্থ যথাস্থানে জমা হয় না, আদায় প্রক্রিয়া শ্লথ ইত্যাদি অভিযোগ আছে। এই সঙ্গে টোল প্লাজার দু’ পাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন সহজেই দৃষ্ট হয়। টোল আদায়ে ই-পদ্ধতির ব্যবহার এসব অভিযোগ ও দুর্ভোগের অবসান ঘটাবে বলে আশা করা যায়। তবে ই-পদ্ধতিটাও যতটা সম্ভব সহজ করতে হবে। আমাদের যানবাহন চালকরা সবাই সমান শিক্ষিত নয়। এমন অনেকে আছে বা থাকতে পারে, যাদের পক্ষে এ পদ্ধতিতে টোল আদায় সম্ভব নাও হতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে কী হবে, সেটাও ভাবতে হবে। পদ্ধতি যত সহজ হয়, ততই ভালো। মনে রাখতে হবে, আধুনিক ও উন্নততর প্রযুক্তিকে আমরা এড়িয়ে যেতে পারবো না। গেলে কাক্সিক্ষত সুবিধা ও সুফল পাবো না। সুতরাং, প্রযুক্তিকে স্বতঃর্স্ফূতভাবে গ্রহণ করতে হবে, কাজে লাগাতে হবে। এর বিকল্প নেই।
বিভাগ : আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মাগুরার মহম্মদপুরে বজ্রপাতে কোরআনে হাফেজসহ দুইজন নিহত
টানা ৮ জয় আবাহনীর
বিদ্রোহের অবসান ঘটিয়ে অনুশীলনে জিমিরা
বাফুফের নতুন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর টিটু
সিরাজ স্মৃতি সংসদে ইয়ারজান
বর্তমানে দেশে খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই : কৃষিমন্ত্রী
এবার রূপায়ণ সিটির সঙ্গি সাকিব
বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে
শেরপুরের পৃথক ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিদেশী প্রভুদের কাছে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছে: আমিনুল হক
আধিপত্যবাদী শক্তিকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে হবে
স্বাধীনতা আন্দোলনের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি : শিল্পমন্ত্রী
চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়
সরকারের এমপিরা ঘোষণা দিয়ে লুটপাট শুরু করেছে- এবি পার্টি নেতা এড. তাজুল ইসলাম।
জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান
নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতেই বিএনপির ভারত বর্জন কর্মসূচি : নাছিম
শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করলো গণস্বাক্ষরতা অভিযান
পাকিস্তানের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ
কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন কৃষিমন্ত্রীর
ইসলাম ও দেশবিরোধী সকল আধিপত্যবাদী শক্তিকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে হবে : পীর সাহেব চরমোনাই