বাঙালি সেনারা পাকিস্তানের নির্দেশ কর্ণপাত করেননি
১২ মার্চ ২০২৩, ১১:২৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৪৭ এএম
পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক প্রধান লে. জেনারেল টিক্কা খান একাত্তরের ১৩ মার্চ এক সামরিক ফরমান জারি করেন। এই সামরিক ফরমানে তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা বাজেট থেকে যারা বেতন উত্তোলন করেন, তারা ১৫ মার্চের মধ্যে কর্মস্থলে যোগ না দিলে সবাইকে চাকরিচ্যুত করা হবে। শুধু তাই নয়, সামরিক আইনের বিচারে এসব আইন অমান্যকারীকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড দেওয়া হবে।’ টিক্কা খানের এ আদেশের পরও কর্মস্থলে যোগ দেননি কোনো বাঙালি সেনা কর্মকর্তা। স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর অকুতোভয় বাঙালি পাকিস্তান সামরিক সরকারের কোনো আদেশ-নির্দেশের প্রতিই কর্ণপাত করেননি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেনারেল টিক্কা খানের সামরিক ফরমানকে উস্কানিমূলক আখ্যায়িত করে বলেন, কোনো শক্তিই বাংলার জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না। পাকিস্তানের সামরিক সরকারের হুমকি-ধমকি বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনকেও ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। জেনারেল টিক্কার এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ সমগ্র জাতি প্রতিবাদ ও ক্ষোভে আরও ফুঁসে ওঠে। সর্বত্র অহিংস অসহযোগ আন্দোলন আরও বেগবান হতে থাকে। ধীরে ধীরে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন রূপ নিতে থাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিকে।
স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ যেসব জেলা ও থানায় তখনও গঠন হয়নি, অতি অল্প সময়ের মধ্যে সেসব স্থানে কমিটি গঠনের জন্য তাগিদ পাঠানো হয়। অসহযোগ আন্দোলন তখন এতটাই স্বতঃস্ফূর্ত যে, কেউ আর পাকিস্তান সরকারের আদেশ-নির্দেশের পরোয়া করছে না। পূর্ব পাকিস্তান তথা গোটা বাংলাদেশে তখন নেতা একজনই। তিনিই দেশ, তিনিই সরকার।
এদিকে বঙ্গবন্ধু তার ৩২ নাম্বারের বাসভবনে শীর্ষস্থানীয় চার ছাত্রনেতা শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে ডেকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু কলকাতার ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্কের ২১ রাজেন্দ্র রোডের একটি বাসার ঠিকানা দিয়ে বলেন যে, প্রবাস থেকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য এটিই হবে মূল কেন্দ্র। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ দলের সর্বস্তরের নেতা এবং ১৭ জেলার নেতাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় আদেশ-নির্দেশ দিতে থাকেন।
চট্টগ্রাম, রাজেন্দ্রপুর, কুমিল্লাসহ দেশের অন্যান্য সেনানিবাসে কৌশলে বাঙালি অফিসার ও সৈনিকদের নিরস্ত্র করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবস্থা টের পেয়ে বাঙালি সেনা কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে গোপনে ও কৌশলে আলোচনা করে প্রতিআক্রমণের প্রস্তুতিও গ্রহণ করেন। বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকরা গোপনে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সময় ও সুযোগের অপেক্ষা করতে থাকেন।
চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পরই বাঙালি সেনা কর্মকর্তারা ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি শুরু করেন। আজকের দিনে তদানীন্তন ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম (সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বীরউত্তম) ষোলশহর এলাকা থেকে তার সৈন্য বাহিনীসহ বের হয়ে এসে বহু পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিককে আটক করে প্রতিরোধ আক্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।
বিভাগ : আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিজিবি, জেলা পুলিশ ধরতে পারেনি ভারতীয় চিনির অবৈধ চালান, ধরলো এসএমপির ডিবি অভিযানে বিপুল মূল্যের চিনি সহ ৪ চোরাকারবারী আটক
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের গুলি, ছুরিধারী নিহত
ভারতের মুসলমানদের কেন ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি?
আমার মা তো দেশের জন্য মঙ্গলসূত্র বিসর্জন দিয়েছেন: প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
হাজীগঞ্জে শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা
মুসলিম-বিরোধী ভাষণ, মেরুকরণের রাজনীতিতে ফিরছেন মোদী?
ওএমএসের চাল জব্দ করলো ইউএনও
ইবি শিক্ষকের পরিবারের সাথে অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগ নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
প্লাস্টিক সার্কুলারিটি ও একাডেমিক উন্নয়নে ইউনিলিভার ও ঢাবি’র আইবিএ অনুষদের যৌথ প্রকল্প
আটটি চুক্তি সাক্ষর: বিনিয়োগ বাড়াতে কাতারকে আহ্বান নেপালের
কিরগিজ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভাজবেক আতাখানভ এর বেক্সিমকো শিল্প পার্ক পরিদর্শন
মোল্লাহাটে বালুবাহী ট্রলি চাপায় দুই জন নিহত
বগুড়ায় বৃষ্টির আশায় ইস্তিসকার নামাজ আদায়
খুলনা জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব বাপ্পীসহ ৩০ নেতাকর্মীকে জেলহাজতে প্রেরণ
বগুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে ভবঘুরের মৃত্যু
সংসদ সদস্য কোন প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারনায় যেতে পারবেন না -ইসি মো. আলমগীর
মাদারীপুরে খেলাধুলায় নিষেধ করায় রাতের আঁধারে দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা
ময়মনসিংহে ট্রেনের ধাক্কায় দুইজন নিহত: তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি
ঈদগাঁওর পাঁচ ইউনিয়নের নির্বাচন ২৮ এপ্রিল -মহল বিশেষের প্রভাব বিস্তারের শঙ্কায় প্রার্থীরা
কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করেও সড়কে ট্রাফিক পুলিশ