বিরোধী দল মোকাবিলায় তৃণমূলে নতুন কমিটি না করার কৌশল আ.লীগের
২৪ জুন ২০২৩, ১০:১২ পিএম | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে কমিটি না করতে নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এর মধ্য দিয়ে দলীয়ভাবে ঐক্য বাড়ানোর কৌশলের পাশাপাশি আগামীতে বিএনপিসহ বিরোধীদলের আন্দোলন মোকাবেলা করতে চায় ক্ষমতাশীনরা। তবে সম্মেলন হয়ে গেছে এমন কমিটিগুলো দ্রুত করে ফেলার নির্দেশনাও রয়েছে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে দলের নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রধান। এ ছাড়া ত্যাগী কিন্তু নিষ্কিয় নেতাদের দলীয় কর্মসূচিতে টানতে দলীয় প্রধানের নির্দেশনা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সূত্রগুলো বলছে, বিএনপিসহ বিরোধীদের আন্দোলন কর্মসূচি বিবেচনায় রেখে দলের সব স্তরে ঐক্য আগামী নির্বাচন পর্যন্ত ধরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য এই সময়ে কোন বিতর্কিত কোন কর্মকান্ড সহ্য করবে না দলীয় কাঠামো। আওয়ামী লীগ মনে করে, আগামী ঈদের পর থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএনপি রাজপথ দখলে রাখার চেষ্টা করবে বিএনপি। ফলে এই সময়ে যদি আওয়ামী লীগের থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিগুলো হলে দলের ঐক্যে ভাটা পরতে পারে বলে দলীয় নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলে নতুন কমিটি এখনই না হলে যারা নির্বাচনে ভাল কাজ করতে আগামীতে তারা পুরস্কার হিসেবে দলীয় নেতৃত্বে আসবে। এতে দলে ভাল নেতৃত্ব যাচাই করারও একটি সুযোগ তৈরী হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকে সারা দেশের সকল জেলা- উপজেলার সাংগঠনিক বিষয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণের হয়েছে। এর পাশাপাশি দলের নিষ্কিয় কিন্তু ত্যাগী নেতাদের দলীয় কর্মসূচিগুলোতে ফিরিয়ে আনতে দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, ওই সভায় যে সকল জেলা এবং উপজেলায় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়নি সেগুলো সম্মেলন না করান নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কারণ সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এখানে নতুন করে সম্মেলন না দিয়ে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভাপতি। তবে যে সকল জেলা এবং উপজেলার সম্মেলন হয়ে গেছে সেগুলোর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে ফেলতে বলেছেন দ্রুত। এর মাধ্যমে নির্বাচনে দলের সাংগঠনিক শক্তিশালী করার নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় প্রধান।
দলীয় সূত্র বলছে, এখন থেকে সাংগঠনিক কাজের চেয়ে নির্বাচনী প্রচার ও বিরোধী দলকে কোণঠাসা করার কর্মসূচিতে বেশি জোর দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে রাজধানী ঢাকাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ জন্যই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি এখনই ঘোষণা করা হচ্ছে না। নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন দলের নেতা-কর্মীরা। এটি একই সঙ্গে দলের কৌশল এবং নির্বাচনী প্রস্তুতিরও অংশ।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দুই মহানগরের থানা ও ওয়ার্ডগুলোতে সম্মেলন হয়েছে এক বছর আগে। কিন্তু এখনো কমিটি গঠন করা হয়নি। এমন অবস্থার নতুন করে আর কমিটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, কমিটি হলে দলের ভেতরে বিভক্তি বাড়তে পারে। এ বিভক্তি না করতে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকেই তাদের ওপর নির্দেশনা রয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের থানা পর্যায়ের কমিটিগুলো আগামী নির্বাচনের আগে না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইনকিলাবকে জানিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা কমিটিগুলো প্রস্তুত করেছি। কিন্তু নির্বাচনের আগে কমিটি নাও হতে পারে। কারণ এখন নির্বাচন কাছে চলে এসেছে। কমিটি হলে অনেকের ক্ষোভ-দু:খ বাড়তে পারে। কমিটি ৬ মাস আগেই হওয়া প্রয়োজন ছিল।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অধীনে ২৪টি থানা, ৭৫টি ওয়ার্ড এবং ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তরের অধীনে ২৬টি থানা, ৬৪টি ওয়ার্ড ও একটি ইউনিয়ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবে দলের তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া যে সকল ত্যাগী নেতা নিষ্কিয় হয়ে গেছেন তাদের সক্রিয় করতে বলেছেন তিনি। সভা-সমাবেশসহ দলের সব আয়োজনে তাদের গুরুত্ব নির্দেশনা দিয়েছেন। দলীয় প্রধান বলেছেন, দলের দু:সময়ে যারা কাজ করেছে তাদের সঠিক মূল্যায়ন না হলে দল ফের যখন দু:সময়ে পরবে তখন দলীয় সেই কর্মীরা আসবে না। কিন্তু সুবিধাবাদীরা সেই সময়ে একজনও থাকবে না। এ ছাড়া দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ৮ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের বলেছেন, নির্বাচনের আগে তৃণমলে কোথাও দ্বন্দ্ব- সংঘাত দেখতে চান না তিনি। দলীয় প্রধান নবলেছেন, এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের ত্যাগী কর্মীদের কথা শুনুন। কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে তা মিটিয়ে ফেলুন। যদি কোথাও সমস্যা মেটাতে সক্ষম না হন, আমাকে জানাবেন। যারা এই সমস্যা সৃষ্টি করবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, দলীয় প্রধান নির্বাচনের আগে প্রত্যোক দলীয় নেতাদের পালা করে এলাকায় যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তৃণমূলকে আরো শক্তিশালী করা নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। তিনি এলাকার গিয়ে সকল পর্যায়ের সাধারণ মানুষদের সঙ্গে বলার নির্দেশনা দিয়েছেন। উঠান বৈঠক করতে বলেছেন। সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগাযোগ বাড়াতে বলেছেন। টানা ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন কর্মকান্ড এলাকায় গিয়ে তুলে ধরার নির্দেশনা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বড় পরাজয়ের মুখে বাংলাদেশ
বেগমগঞ্জে নামাজ পড়ে ফেরার পথে প্রাণ গেল বৃদ্ধের
কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানগ্লোবাল ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যাওর্য়াডস পেল ইসলামী ব্যংক
কোন শ্রমিক তার কারখানার ক্ষতি করবে না: শ্রম সচিব
নাঙ্গলকোটে প্রাথমিক শিক্ষা পদকে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন যারা
সিলেটে বজ্রপাতে পৃথক স্থানে নিহত ২
আ'লীগের চিহ্নিত সুবিধাভোগী সিলেট করিমউল্লাহ মার্কেট মালিকপক্ষের প্রতারণার শিকার এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর আর্তনাদ !
জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে শহিদ ছাত্র-জনতা চোখে আঙুল দিয়ে অনেক কিছু দেখিয়ে গেছেন-বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি
লৌহজংয়ে বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত
শান্তর ফিফটির পর দিনের খেলার ইতি
নিউইয়র্কে বৈঠকে বসছেন তৌহিদ-জয়শঙ্কর
ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই আউট মুশফিক
ঝাড়খন্ডে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমিত শাহের
মুমিনুলকেও হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ
রাবির মাদার বখ্শ হলের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হলো দেশীয় অস্ত্র
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর
ঢাবির হত্যার ঘটনায় প্রভোস্টকে অব্যাহতি
আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মেক্সিকোতে মাদক কারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সপ্তাহে নিহত ৫৩
বিদ্যুৎ সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামে থাকে না