ল্যানসেট নিয়ে আইসিডিডিআরবি’র তথ্য উস্থাপন

মৃত নবজাতকের ৫৫ দশমিক ৪ শতাংশই অপরিণত বয়সে জন্ম

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২৯ আগস্ট ২০২৩, ১০:১৩ পিএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০-৩২ লাখ ডেলিভারি হয়। এরমধ্যে ছয় লাখ শিশু অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। যা মোট জন্মের ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ। অপরিণত বা কম ওজনের জন্ম নেওয়া শিশু নানা জটিলতার শিকার হন। আর এই শিশুদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম থাকে। এছাড়া বিশ্বে বছরে তিন কোটি ৫০ লাখ শিশু অপরিণত বা কম ওজনের হয়ে জন্ম নেয়। ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, ২০ লাখ ৪০ হাজার নতুন জন্ম নেওয়া শিশু মৃত্যুর অর্ধেকই (৫৫ দশমিক ৪ শতাংশ) ছিল অপরিণত। এছাড়া অপরিণত জন্ম নেওয়া শিশুদের মাঝে যারা জীবিত থাকে তারাও নানা স্বাস্থ্য জটিলতা নিয়ে বেচে থাকে।

গতকাল রাজধানীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রে (আইসিডিডিআরবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন ফিনল্যান্ডের টাম্পেইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাম্পেইরে সেন্টার ফর চাইল্ড, অ্যাডোলোসেন্ট এবং দ্য ল্যানসেট এসভিএন সিরিজের প্রধান লেখক ড. পার অ্যাশন, অবস্টেট্রিকাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি প্রফেসর সামিনা চৌধুরী, বাংলাদেশ পেরিনেটাল সোসাইটির (বিপিএস) মহাসচিব এবং ন্যাশনাল টেকনিকাল ওয়ার্কিং কমিটি-নিউবর্ন হেলথের (এনটিডব্লিউসি-এনবিএইচ) সদস্য প্রফেসর মো. আব্দুল মান্নান, আইসিডিডিআরবির মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী এবং এনটিডব্লিউসি-এনবিএইচের সদস্য ডা. আহমেদ এহসানুর রহমান। অনুষ্ঠানে ল্যানসেটের প্রকাশিতব্য সিরিজের চারটি গবেষণাপত্রের সারমর্ম উপস্থাপন করেন ডা. এহসান। তিনি জানান, এই সিরিজে মৃত জন্ম এবং অপরিণত বা কম ওজনের শিশুর ঘটনা রোধে গর্ভাবস্থায় আটটি সহজ এবং সাশ্রয়ী ইন্টারভেনশনের পরামর্শ দেয়। মায়েদের ওপর এই আটটি বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া গেলে বছরে আনুমানিক পাঁচ লাখ ৬৬ হাজার মৃত জন্ম এবং ৫২ লাখ অপরিণত বা কম ওজনের শিশু জন্মের ঘটনা প্রতিরোধ করার সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র লাভবান হতে পারে। আটটি হস্তক্ষেপের মধ্যে রয়েছে একাধিক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সম্পূরক, সুষম প্রোটিন সম্পূরক, অ্যাসপিরিন, সিফিলিস চিকিৎসা, ধূমপান ত্যাগের শিক্ষা, গর্ভাবস্থায় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ, উপসর্গহীন ব্যাকটেরিয়ার চিকিৎসা এবং ভাজাইনাল প্রোজেস্টেরন সাপ্লিমেন্ট, অপরিণত জন্মের জটিলতা প্রশমিত করার জন্য দুটি প্রমাণিত কৌশল- প্রসবপূর্ব কর্টিকোস্টেরয়েড এবং বিলম্বিত কর্ড ক্ল্যাম্পিং। তিনি বলেন, এই সম্মিলিত হস্তক্ষেপগুলোর মাধ্যমে চার লাখ ৭ হাজার ৬০০ নবজাতকের মৃত্যু প্রতিরোধ করার সম্ভাব্যতা তৈরি হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে এই ব্যবস্থা বাস্তবায়নে আনুমানিক খরচ হবে এক দশমিক এক বিলিয়ন ডলার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ল্যানসেট সিরিজের মধ্যে একটি পৃথক বিশ্লেষণ স্মল ভালনারেবল নিউরনস (এসভিএন) সমস্যাকে বিশ্লেষণ করেছে। এই শব্দটির মাধ্যমে অপরিণত শিশু বা কম ওজনের শিশু, এবং কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২০ সালে জন্ম নেয়া ১৩ কোটি ৫০ লাখ শিশুর মধ্যে, প্রায় তিন কোটি ৫৩ লাখ শিশু এসভিএন বিভাগে পড়ে।

অপরিণত জন্ম এবং কম ওজনে জন্ম নেওয়া শিশুদের যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও এর অগ্রগতি অপর্যাপ্ত বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

ল্যানসেট সিরিজের প্রধান লেখক ডা. পার অ্যাশন বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে এসভিএন কমানোর লক্ষ্যে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি এবং লক্ষ্য থাকা সত্ত্বেও, বিশ্বের প্রতি চারজন শিশুর একজন খুব ছোট বা তাড়াতাড়ি জন্মগ্রহণ করে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢাকা জেলা যুবদলের শ্রদ্ধা নিবেদন
হিলিতে মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত
সদরপুরে জামায়াতের ইফতার মাহফিলে আওয়ামীলীগ নেতা! জনমনে কৌতূহল
রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে ঘুষ খাওয়ার চেষ্টা, ঘেরাও করে কাস্টমস কর্মকর্তাকে মারধর
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় মাছ শিকার করায় রায়পুরে ১২ জেলের অর্থদণ্ড
আরও
X

আরও পড়ুন

মানবিক চিকিৎসক আবু সাফিয়াকে বিনা বিচারে আটক, বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়

মানবিক চিকিৎসক আবু সাফিয়াকে বিনা বিচারে আটক, বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়

গাজায় ইসরায়েলি হামলার মধ্যেই ব্যাপক বিক্ষোভ ফিলিস্তিনিদের

গাজায় ইসরায়েলি হামলার মধ্যেই ব্যাপক বিক্ষোভ ফিলিস্তিনিদের

২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের দায়িত্বে সিমন্স

২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের দায়িত্বে সিমন্স

জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢাকা জেলা যুবদলের শ্রদ্ধা নিবেদন

জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢাকা জেলা যুবদলের শ্রদ্ধা নিবেদন

জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা

জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা

ইসরাইলি সেনাদের হাতে অস্কারজয়ী ফিলিস্তিনি নির্মাতা অপহরণ

ইসরাইলি সেনাদের হাতে অস্কারজয়ী ফিলিস্তিনি নির্মাতা অপহরণ

ঈদের পর হবে ইমরান-বুশরার মামলার শুনানি

ঈদের পর হবে ইমরান-বুশরার মামলার শুনানি

মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ চায় না পরিবার

মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ চায় না পরিবার

ব্রাজিলকে নিয়ে ছেলেখেলা করল আর্জেন্টিনা

ব্রাজিলকে নিয়ে ছেলেখেলা করল আর্জেন্টিনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত

যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত পূরণেই সিরিয়ার নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত পূরণেই সিরিয়ার নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সম্ভাবনা

জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

সপ্তমবারের মতো বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে লুকাশেঙ্কোর শপথ গ্রহণ

সপ্তমবারের মতো বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে লুকাশেঙ্কোর শপথ গ্রহণ

হিলিতে মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত

হিলিতে মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত

বাংলাদেশের জনগণকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন

বাংলাদেশের জনগণকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন

জাবালিয়া ছাড়তে ফিলিস্তিনিদের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি, হামলার হুমকি ইসরায়েলের

জাবালিয়া ছাড়তে ফিলিস্তিনিদের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি, হামলার হুমকি ইসরায়েলের

সদরপুরে জামায়াতের ইফতার মাহফিলে আওয়ামীলীগ নেতা! জনমনে কৌতূহল

সদরপুরে জামায়াতের ইফতার মাহফিলে আওয়ামীলীগ নেতা! জনমনে কৌতূহল

রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে ঘুষ খাওয়ার চেষ্টা, ঘেরাও করে কাস্টমস কর্মকর্তাকে মারধর

রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেয়ে ঘুষ খাওয়ার চেষ্টা, ঘেরাও করে কাস্টমস কর্মকর্তাকে মারধর

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় মাছ শিকার করায় রায়পুরে ১২ জেলের অর্থদণ্ড

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় মাছ শিকার করায় রায়পুরে ১২ জেলের অর্থদণ্ড

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৭, ইয়েমেনে হামলা অব্যাহত

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৭, ইয়েমেনে হামলা অব্যাহত