বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্য
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
প্রথমবারের মতো ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার গত ১৪ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে আগের বাড়তি দামেই এগুলো বিক্রি হচ্ছে বাজারে। প্রতিটি ফার্মের ডিমের দাম ১২ টাকা, আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৪-৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অথচ নির্ধারণ করে দেওয়ার ১৫ দিন পরেও বাজারে এসব দ্রব্যের দাম কার্যকর হয়নি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। আর প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। ফলে একটি ডিমের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা। অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিমের দাম বেঁধে দিয়েছিল সর্বোচ্চ ১২ টাকা।
একইভাবে বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, যেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর দাম বেঁধে দিয়েছিল ৩৫-৩৬ টাকা। ফলে নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে ১৪/১৫ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজের দাম সরকার ৬৪/৬৫ টাকা বেধে দিলেও বাজারে এর চেয়ে ১৫ থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ কর্মদিবসে বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা কেজি দরে, আর আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা কেজি দরে। সেই সঙ্গে ডিম প্রতি হালি সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
টিসিবির সহকারী পরিচালক (বাজার তথ্য) নাসির উদ্দিন জানান, যেই পেঁয়াজ বর্তমান বাজারে সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই সময় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৮ থেকে ৪৫ টাকায়। সেই হিসেবে এক বছরে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৯৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।
একইভাবে যে আলু বর্তমানে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গত বছর এই সময় সেই আলু বিক্রি হয়েছে ২৩ থেকে ৩০ টাকায়। ফলে এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে ৬৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। পাশাপাশি ডিমের দাম এক বছরে বেড়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
বাজারের এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। তারা বলছে, সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও আমরা ক্রেতারা এসব আলু, ডিম, পেঁয়াজ এখনও বাড়তি দামেই কিনছি। বাজার মনিটরিং যদি না থাকে তাহলে দাম নির্ধারণ করে দিয়ে কি লাভ হলো? দাম নির্ধারণের আগেও যে দামে কিনেছি এখনও সেই বাড়তি দামেই কিনছি।
মহাখালীতে বাজার করতে আসা ক্রেতা এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, বাজারে এমন কিছু নেই যার দাম বাড়তি না। এই পরিস্থিতিতে আমরা সাধারণ ক্রেতারা খুব খারাপ অবস্থায় আছি। সব কিছুর দাম বাড়তি এর মধ্যে বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ দেখছি না। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো যেগুলোর দাম সরকার কমালো সেগুলোও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ, আলু, ডিমের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও তারচেয়ে অনেক বেশি দামে আমাকে এগুলো কিনতে হলো। তাহলে লোক দেখানো দাম নির্ধারণের প্রয়োজন কি ছিল। নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বাড়তি দামে এগুলো বাজারে ওপেন বিক্রি হচ্ছে অথচ দেখার কেউ নেই।
এদিকে, শীতের সবজিতে বাজার জমজমাট না হলেও আগাম বেশ কিছু শীতকালীন সবজি এরইমধ্যে চলে এসেছে বাজারে। তবে এর মধ্যে হাতেগোনা কিছু সবজির দামই নাগালের মধ্যে, বাকি সব সবজির দাম আকাশছোঁয়া।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখনও পর্যাপ্ত সবজি আসেনি, যে কারণে দামও তুলনামূলক বেশি। তবে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে এই দাম কমে আসবে। শীতকালে বাজারে সাধারণত লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, দেশি পেঁয়াজ, ভারতীয় পেঁয়াজ, বেগুন, মূলা, লালশাক, পালংশাক, পটোল, ঢেড়স, বরবটি, ঝিঙা, পেঁপে, আলু, করলা, কচু, শসাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরপুর থাকে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি শিম ২০০ টাকা, চায়না গাজর ১৪০ টাকা, মূলা ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৬০ টাকা। এ ছাড়া, প্রতি কেজি গোল বেগুন ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, কচুরমুখি ৯০ টাকা এবং কচুর লতি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতি পিস জালি কুমড়া (চাল কুমড়া) ৬০ টাকা ও লাউ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলেন, বাজারে কোনো পণ্যের দামে নিয়ন্ত্রণ নেই। ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছে মতো যখন ইচ্ছে দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। আমি মনে করি এটা সরকারের বড় ব্যর্থতা। বাজারে শিম এসেছে আরও দুই সপ্তাহ আগে, তারপরও দাম এখন ২০০ টাকা কেজি। বাজারে জিনিসপত্রেন এতো দাম, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কেনার অবস্থা নেই। যে সবজিরই দাম জিজ্ঞেস করি, ৫০/৬০ টাকার নিচে কিছুই নেই। বাজারে এলেই হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়। শীতের সবজি বাজারে এলেও চাহিদা অনুপাতে পরিমাণ খুবই কম। আমরাও চাহিদা মতো আড়ত থেকে কিনতে পারছি না। যে কারণে বাধ্য হয়েই একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আগামী সংসদে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে প্রতিনিধি নির্বাচনের দাবি চরমোনাই পীরের
কোন শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও অনুপ্রবেশকারীর দলে জায়গা হবে না-কেন্দ্রীয় যুব দলের সাধারণ সম্পাদক নুরল ইসলাম নয়ন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে সমাবেশ
বিগত ৫৩ বছরের জঞ্জাল দূর করে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি
তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের
রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে নিহত ১, থমথমে পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা জারি, ৭২ ঘন্টার অবরোধের ডাক
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান
নিরাপদ ও নির্ভয়ে উদযাপন হবে শারদীয় দূর্গোদসব এবং দূর্গাপূজা- এসএমপি কমিশনার রেজাউল করিম
মব কিলিং সরকার সমর্থন করে না: উপদেষ্টা নাহিদ
চট্টগ্রামে রাতের আঁধারে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর
বলিউডে কারিনা কাপুরের ২৫ বছর
মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে ঢাবি কর্তৃপক্ষ
রাজশাহীতে ট্রেনে বরযাত্রীদের ওপর হামলা
চিহ্নিত গোষ্ঠী আবার দখলদারি ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে : সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম চরমোনাই
গায়িকা রুকসানার রহস্যজনক মৃত্যু!
যে কোনো মূল্যে লাহোর কর্মসূচি সফল করুন: ইমরান খান
চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় সিএনজি চালকসহ নিহত ২
যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ভবনে বিচারককে গুলি করে হত্যা
ডিবির সাবেক ডিসি ৭ দিনের রিমান্ডে দলীয় বিবেচনায় শুদ্ধাচার পুরস্কার পান মশিউর
খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সংঘর্ষ: তিন জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের