টার্গেটকৃত যাত্রী বা ব্যক্তির ওপর বমি করে দেয় চক্রের একজন। এরপর দুই- তিন সদস্য সেখানে হৈ-চৈ করে তৈরি করে জটলা। সুযোগ বুঝে দুই সদস্য ভিড়ের মধ্যে থাকা মানুষের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ নিয়ে বাইরে অপেক্ষমান বাকি সদস্যকে দিয়ে দেন। এরপর সবাই সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। এভাবে গণ পরিবহনসহ বিভিন্ন জনসমাগম স্থলে অভিনব পন্থায় এরা সহজ সরল মানুষের সব কিছু লুটে নিতো। গত বৃহস্পতিবার মিরপুর ৬০ ফিটের মনিপুর এলাকা থেকে এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাদের প্রতারণার রহস্য উদঘাটিত হয়।

এ দলে রয়েছে মাত্র ৭ সদস্য। দলের সবাই পৃথক জেলার বাসিন্দা। এজন্য নিজেদের গ্রুপের নাম দিয়েছে সেভেন স্টার। আশ্চর্য্যরে বিষয় হলো, তারা তিন বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করলেও কেউই কারও বাসা চেনে না। ওই চক্রের রয়েছে নিজস্ব সাংকেতিক ভাষা। তারা টার্গেটকে ডাকে মামা, পুলিশকে ডাকে লাতা নামে, এছাড়া দলনেতাকে মিস্ত্রি, সহযোগীকে তালবাজ কিংবা ঠেকো, গাড়িকে চাক্কা বলে।

ছিনতাইকৃত টাকা তারা তিন ভাগে ভাগ করেন। একভাগ দলনেতা, একভাগ তাদের মামলা মোকাবিলার এবং এক ভাগ বাকি সদস্যদের। তাদের কেউ একজন গ্রেফতার হলে বাকি সদস্যরা জামিন করান। তাদের দলনেতার নাম সাগর। মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৬০ ফিটের মনিপুর এলাকা থেকে পুলিশ সাগর, ওয়াসিম এবং জাহিদকে গেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি ছুরি জব্দ করে পুলিশ। অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। প্রথমে তারা কোনো বাসে উঠে। একজন টার্গেটের উপর বমি করে। এরপর কৌশলে তার মোবাইল, মানিব্যাগ নিয়ে বাইরে অপেক্ষমাণ বাকি সদস্যকে দিয়ে দেয়। এরপর সবাই সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে পাঁচ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এরা হলো, সাগর হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. আরিফ, মো. আতাউর রহমান ও মো. জুয়েল। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি চাকু জব্দ করা হয়।