শেরপুর জেলা উত্তরের উপজেলাগুলোর পাহাড়ি অঞ্চলের রাস্তাঘাটের অবস্থা বেহাল। এসব এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট কাঁচা এবং কার্দমাক্ত হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে হাজারো মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই। যুগ যুগ ধরে রাস্তাগুলোর নাজুক অবস্থার কারণে এলাকাবাসী সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

ঝিনাইগাতী গারো পাহাড় এলাকার আশরাফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, উপজেলার নলকুড়া ইউনয়িনরে গজারিপাড়া, বারুয়ামারী, কুশাইকুড়া (কলোনী) ও আংশকি পশ্চমি ভারুয়া গ্রামে দীর্ঘ্য দিন রাস্তা মেরামত না করা হয়নি। বেহাল রাস্তায় প্রতিদিন উপজেলা সদর, স্কুল, কলজে ও হাসপাতালে যেতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঝিনাইগাতী মইেন রোড থেকে আসা বনকালি হয়ে রাস্তা অথবা মরয়িম নগর হয়ে গজারি পাড়া সরকারি প্রাথমকি বদ্যিালয় পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করণ করা জরুরি। ফায়ার বারুয়ামারি-ঝিনাইগাতী রাস্তায় ৫ থেকে ৭ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। অবহেলিত পাহাড়ি এলাকা ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার গ্রামীণ পাহাড়ি অনেক রাস্তাই বেহাল। উপজেলা সদরের সাথে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় রাস্তাঘাটের উন্নয়নের তেমন ছোয়া পড়েনি বলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগ। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও পাহাড়ি ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের করুণ অবস্থায়ই রয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় রয়েছ বৃহৎ পাহাড়ি এলাকা। প্রতিটি গ্রামের মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। গ্রামীণ রাস্তাঘাট পাকা না হওয়ায় ভালো যোগাযোগের অভাবে তারা ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জেলা শহর শেরপুর এবং উপজেলা সদর ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাদের ৩ থেকে ৪ মাইল পর্যন্ত ঘুরে যেতে হয়। এতে করে এক দিকে যেমন সময় অপচয় হচ্ছে তেমনি দ্বিগুণ অর্থ খরচ হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন এলে চেয়ারম্যান-মেম্বার, ভাইস চেয়ারম্যান, এমপি প্রার্থীরা এলাকার উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট পাকা করণের জন্য নানা আশ্বাস দিয়ে যায়। কিন্তু বিজয়ের পর তারা ভুলেই যায় রাস্তাঘাট উন্নয়নের কথা। এভাবেই কেটে গেছে ৫৩ বছর কিন্তু রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি। ফলে ভাগ্যেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। পাঁচ গ্রামের হাজারো মানুষের যাতায়াতের রাস্তাটি দিয়ে বারোয়ামারি গজারিপাড়া, কুসাইকুড়া, ভারুয়া ও নলকুড়াসহ হাজারো মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। বনকালি থেকে গজারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তায় বড় বড় গর্তের কারণে যাতায়াত করা যায় না।

কাংশা ইউনিয়নের গান্দিগাও গ্রামের সাজ্জাদুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান মিজান জানান, গান্দিগাঁও রিকশা গ্যারেজ থেকে নতুন বাজার রাস্তায় বর্ষায় কাদা ও শুস্ক মৌসুমে ধূলায় যাতায়াত করা যায় না। শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া গ্রামের খামার পাড়া থেকে প্রফেসর বাড়ির রাস্তার বেহাল অবস্থা। এসব ইউনিয়নবাসী সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। প্রত্যেক ইউনিয়নে ৬ থেকে ৭টি গ্রাামে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি উপজাতির বসবাস রয়েছে। যুগ যুগ ধরে তারা নানাভাবে অবহেলিত। বিশেষ করে রাস্তাঘাটের খুবই বেহাল অবস্থা। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার উপর হাঁটু পানি জমে। ফলে যানবাহন চলাচল দুরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা বলেছেন, তাদের এলাকার রাস্তাঘাটগুলো অধিকাংশ কাঁচা হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে কাদা হয়। ফলে চলাচল কষ্টসাধ্য। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং এমপির সঙ্গে সমন্বয় করে কাঁচা রাস্তা উন্নয়নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, যে সব রাস্তা আইডিভুক্ত তা অচিরেই সংস্কার আথবা পাকাকরণ করা হবে।