লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ জ্বালানি সংকট

রফতানি আয়

লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ জ্বালানি সংকট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার :

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম

শিল্পে বিদ্যমান জ্বালানিসংকটের মধ্যে চলতি অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়। এমন দাবি করে লক্ষ্য অর্জনে ব্যাংকের হয়রানি ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে নিট শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। এদিকে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এ খাতে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চাভিলাষী হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
সম্প্রতি সচিবালয়ে চলতি অর্থবছরের জন্য পণ্য রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ নির্ধারণের কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এরপরই ব্যবসায়ীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) নাকি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের ওপর ভর করে। বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, চলতি বছর এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পণ্য রফতানি হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে নাকি ইপিবির বা এনবিআরের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে-সেটি পরিষ্কার নয়।
রফতানি আয়ের ৮০ ভাগের বেশি জোগান দেয়া তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংশয়ে পড়ার কারণ গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই দুই সংস্থার হিসাবের গরমিল দাঁড়ায় এক হাজার ৮১ কোটি ডলার। এমন তথ্য বিভ্রাটে পড়ে বিকেএমইএ বলছে, জ্বালানিসংকট, ব্যাংক খাতের হয়রানি আর কাস্টমস কর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা না কাটলে কোনোভাবেই সরকার নির্ধারিত রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এবার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো জ্বালানিসংকট। কারণ সরকার গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট এবং ব্যাংকিং খাতের চলমান অস্থিরতা সমাধান করতে না পারলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে না। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের দূরদর্শী নেতৃত্বে ব্যাংকের বোর্ড পরিবর্তনসহ নানামুখী পদক্ষেপে ব্যাংকিংখাতে কিছুটা আস্থা ফিরলেও এখনো পোশাকখাতে অস্থিরতা চলছে। স্বৈরাচার হাসিনা ও ভারতীয় ষড়যন্ত্রে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না শ্রমিক অসন্তোষ। এছাড়া বিদ্যুৎ-গ্রাস সঙ্কট দূরীভূত করতে না পারলে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইউরোপ-আমেরিকার বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল চাহিদার বিপরীতে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ব্যবসায়ীদের দাঁড় করাবে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, রফতানি আয়ের এ লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী। বিশ্ববাজারের অবস্থা বর্তমানে কিছুটা নাজুক; সব দেশে পণ্যের আশানুরূপ চাহিদা নেই। তাই প্রবৃদ্ধির এ লক্ষ্যমাত্রা ব্যবসায়ীদের কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করতে পারে। বৈচিত্র্যময় পণ্য নিয়ে রফতানি বাজারে যেতে পারলে ক্রেতা টানতে বাংলাদেশ সুবিধা করতে পারবে- এমন আরেক চ্যালেঞ্জের কথাও মনে করিয়ে দেন তারা।

বিভাগ : বাংলাদেশ