আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯ এএম | আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪০ এএম
জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবিধান সংস্কার : আমাদের ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট বাংলাদেশের সংবিধানে ইসলামকে নৈতিক দিকনির্দেশনার ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বহাল রাখার পাশাপাশি কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থি কোনো আইন প্রণয়ন না করার বিষয়টিও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের উদ্যোগে সংবিধান সংস্কার: আমাদের ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। পরিষদের আহবায়ক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খানের সভাপতিত্বে ও ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মোহাম্মদ নজমুল হুদা খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ এ.বি. মাহমুদুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সদস্য সচিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এরফোর্ট ইউনিভার্সিটি জার্মানির পিএইচডি গবেষক মারজান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী।
মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী বলেন, এদেশের মানুষ সময়ে সময়ে শোষণ বঞ্চণা নির্যাতন-নিপীড়ন ও স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ইতিহাসের সে ধারারই অংশ। জুলাই বিপ্লবের পর নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সংস্কার ও উন্নয়নে নানা প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সংবিধান সংস্কারের জন্য গঠন করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশন। এ কমিশন দেশের সকল নাগরিকের নিকট থেকে সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রস্তাব আহ্বান করেছে। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) এর বিপ্লবী চেতনা উজ্জীবনের লক্ষ্যে গঠিত বালাকোট চেতনা উজ্জীবন পরিষদ এর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে ১৯ দফা প্রস্তাব পেশ করেছি। সংবিধানে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে এবং শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ড. এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান নিজামী, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, কবি ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন, হিযবুল্লাহ জমিয়াতুল মুছলিহীনের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী, চরমোনাই আহছানাবাদ রশিদীয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, ইসলামি শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের সভাপতি ড. এ কে এম মাহবুবুর রহমান, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রূহুল আমীন, মুফতী আবু নছর জিহাদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক সভাপতি ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, মহাখালী দারুল উলূম হোসাইনিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আল মারুফ, দারুল ফিকর ওয়াল ইফতা আল-ইসলামী বাংলাদেশের সদস্য সচিব মাওলানা আবু সালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম, মাসিক পরওয়ানা’র সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ এস এম মনোয়ার হোসেন। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি শান্তি শৃঙ্খলা বজায় ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করণে সর্বত্র ইসলাম প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। আর এজন্য সংবিধান হতে হবে ইসলাম সমর্থিত। জমিয়াত মহাসচিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, ৯৫ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের সংবিধান হবে ইসলামী ভাবগাম্ভির্যের সমন্বয়ে এটিই স্বাভাবিক। তদুপরি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও শৃঙ্খলা অটুট রাখতে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (সা.) এর নির্দেশিত পন্থা অবলম্বন করা বাঞ্চনীয়। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের পূর্বসূরীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সভাপতি আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীনের বলিষ্ঠ ও সাহসি নেতৃত্বে আমরা একটি ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ইসলাম ও মুসলমানদের নীতি-নৈতিকতা ম্লান করার জন্য ইতিপূর্বে বহু প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র হয়েছে, সেসকল হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অন্তরায় হিসেবে সবসময় জমিয়াতুল মোদার্রেছীন ছিল সোচ্চার।
মহাসচিব বলেন, সময় এসেছে সংস্কারের। এ সুযোগকে যথাযথ কাজে লাগিয়ে দেশকে আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আর এসকল কাজকে তরান্বিত ও সহজতর করতে সাংবিধানিক ধারা, উপধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আসা দরকার। সংবিধানে ইসলামকে প্রাধান্য দেয়া হলে যেমনিভাবে দেশ স্থিতিশীল থাকবে, অনৈতিকতা, অরাজকতা মুক্ত দেশ বিনির্মান হবে, তেমনিভাবে নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি বজায় থাকবে ইনশাআল্লাহ। মূল প্রবন্ধে সংবিধান সংস্কারে ১৯ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়। এর মধ্যে- সংবিধানের প্রস্তাবনায় সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্ব ও ইসলামকে নৈতিক দিকনির্দেশনার ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বহাল রাখা, কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থি কোনো আইন প্রণয়ন না করা, আলিম-উলামা ও ইসলামী আইনজ্ঞদের সমন্বয়ে ‘ইসলামিক আইডোলজি কাউন্সিল গঠন করতে হবে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এমবাপ্পের জোড়া গোলে জিতে শীর্ষে রিয়াল
ব্রাইটনের বিপক্ষেও বিপর্যস্ত ইউনাইটেড
‘ন্যায়বিচারকে হত্যা’ করা হয়েছে: পিটিআই
নতুন ভূগর্ভস্থ নৌ ঘাঁটি উন্মোচন ইরানের
রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করছে অনেক আফ্রিকান সেনা
পাওয়ার প্ল্যান্টের ৩৬০ মেট্রিকটন তেল ডাকাতি
বাংলাদেশি কর্মী নিতে প্রস্তুত রাশিয়া: রাষ্ট্রদূত
রাজনৈতিক দলগুলো বেশি কিছু সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন: প্রেস সচিব
এবার ওলমোর ইনজুরি দুঃসংবাদ বার্সার
কুড়িগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ইমন ও আলামিন
এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন চেয়ারপার্সন মো. মুশফিকুর রহমান
বিয়ের ওপর কর বাতিলের দাবি
শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে আ.লীগ : মির্জা ফখরুল
নামাজের প্রথম কাতারে জামাত পড়াবস্থায় অজু ভেঙ্গে যাওয়া প্রসঙ্গে।
কয়েক মিনিটে বাংলাদেশ দখল করে নিতে পারে ভারত: শুভেন্দু অধিকারী
নরসিংদীতে নিখোঁজের ৫ দিন পর নদীতে পাওয়া গেল স্কুল ছাত্রের লাশ
বিএনপি : দেশবাদ যার রাজনীতির মূল কথা
পাহাড়ি উপজাতিরা আদিবাসী নয়
সংস্কার প্রতিবেদন : জাতির নতুন অধ্যায়ে অভিযাত্রা
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিনিয়োগে জোর দিতে হবে