গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিষ্কৃত ও আ.লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বৃহত্তর বিরোধীদল বিএনপি দলকে সুসংগঠিত করাসহ জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ততার বাড়ানোর জন্য কাজ শুরু করেছে। প্রায় ১৭ বছর পর বিএনপি সম্প্রতি জেলার বিভিন্নস্থানে সংগঠনের কার্যালয় বসিয়ে হররোজ জনগণের সাথে সামাজিক আচার অনুষ্ঠান শুরু করেছে। কিন্তু দলের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হওয়ায় ব্যক্তিগত অফিস খুলে বসেছে কেউ কেউ। তার ধারাবাহিকতায় গোপালগঞ্জ শহরে ১ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে দুইটি ব্যক্তিগত অফিস খুলে জেলা বিএনপির কার্যালয় দাবি করা হচ্ছে। এতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। দুইটি কার্যালয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন বহিষ্কৃত ও পদত্যাগকারী জেলা বিএনপির সাবেক দুই সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জু ও সিরাজুল ইসলাম সিরাজ।
অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে অফিস দুইটিতে তাদের বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকা- সবর। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলা বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠন জেলা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, বর্তমান জেলা বিএনপিসহ সহযোগী কোনো সংগঠন ওই দুই নেতার রাজনীতি সমর্থন করে না। আর জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসিত করতেই বিএনপির ব্যানার ব্যবহার করে তারা ব্যক্তিগত অফিস খুলে জেলা কার্যালয় দাবি করছে।
দৈনিক ইনকিলাবের অনুসন্ধানে ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর গোপালগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের লঞ্চঘাট এলাকায় জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জু তার তিনতলা বিশিষ্ট ব্যক্তিগত অফিসকে জেলা কার্যালয় দাবি করে উদ্বোধন করেন। মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যেই চলতি মাসে শহরের গেটপাড়া এলাকায় একটি টিনের ঘরে অপর একটি জেলা কার্যালয় দাবি করে উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির পদত্যাগকারী সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে বিভ্রান্তি। আর ১ কিলোমিটার দূরত্ব ব্যবধানে দুইটি কার্যালয়ের মধ্যেই জেলা কার্যালয় কোনটি সেই প্রশ্ন সারাক্ষণ ঘুরপাক খাচ্ছে এখন জনমনে। এ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় ইমেজ নষ্ট হচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলা কার্যালয় হচ্ছে সেটি যেখানে সভাপতিসহ কমিটির সবাই রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করে। কিন্তু তারা দুজনই ৫ তারিখের পর গোপালগঞ্জ এসে অফিস দুটি খুলে বিএনপির জেলা কার্যালয় দাবি করছে। তাদের এই দাবি আমরা সমর্থন করি না এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কিছুদিনের মধ্যেই দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে আমাদের জেলা কার্যালয় উদ্বোধন হবে। সেটিই হবে জেলা কার্যালয়।
গোপালগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন সিকদার বলেন, ৫ আগস্টের আগে যেসব নেতাকর্মী রাজপথে ছিলাম তারা কেউই ওই দুই নেতার রাজনীতি সমর্থন করি না। তারা যে কার্যালয় খুলে বসেছেন, সেখানে আমরা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেউ যাই না। এক কথায় বলা যায় তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই ব্যক্তিগত অফিস খুলে জেলা বিএনপির কার্যালয় দাবি করছেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, ওই দুই নেতা বিগত সরকারের নানা সুবিধা নিয়েছে। তারা উভয়ই আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের সঙ্গে লুকিয়ে দেখা করতেন। গত কয়েক বছরে বিএনপির বিভাগীয় কোনো প্রোগ্রামে তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি জেলার কোনো প্রোগ্রামেও তাদের পাওয়া যায়নি। এখন তারা দলের সুবিধা নিতে রাজপথে নেমেছে। জেলা কার্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে অনুমোদন হয়ে আসে এবং সেখানে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তাদের রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হলে আহ্বায়ক কমিটি সেখান থেকে রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করে। কিন্তু সেখানে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বা জেলা বিএনপির সহযোগী কোনো সংগঠন যায় না। তাহলে কীভাবে ওই দুইটি ব্যক্তিগত অফিস জেলা কার্যালয় হয়? তারা তাদের ব্যক্তিগত অফিস খুলে যদি জেলা কার্যালয় দাবি করে, তাহলে সেটি জেলা বিএনপি ঘৃণ্যভাবে প্রত্যাখান করে এবং তাদের এই কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
এ বিষয় জানতে চাইলে জেলা বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, আমি বিগত দুইবারের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলাম। জেলা বিএনপির সভাপতিও ছিলাম। তবে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি আমার পছন্দ হয়নি, যার কারণে আমি ওই কমিটি নিয়ে অনাস্থা দিয়েছি। তবে পদত্যাগ করিনি। আর বিগত কয়েক বছরে মামলা হামলার জন্য রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করতে পারিনি। তবে আমার অফিসটাই জেলা কার্যালয়। কারণ আগামীদিনে আবারো আমি সভাপতি হবো। এটি দলের হাইকমান্ড থেকে আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তখন আর আমার অফিস নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না।
এ বিষয়ে জানতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জেলা বিএনপি বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জুকে কল করা হলে প্রশ্ন শুনেই ফোন কেটে দেন।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় কমিটি ২০১৯ সালে গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয় সেই থেকে গোপালগঞ্জ জেলার বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকা- আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলছে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
লামায় ১৭টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতঘর পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় ৪জন গ্রেপ্তার
বিজয় দিবস টেনিস শুক্রবার শুরু
আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ
আজানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে।
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় মামলা
শরীয়তপুরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
হেঁটে টেকনাফ গেলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেদুল
বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ!
বাগেরহাটে জেলা একীভূত চক্ষু সেবা কর্মসূচির এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত
সাতক্ষীরায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
অল্পতেই শেষ পাকিস্তানের ইনিংস
খেপুপাড়া সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনী ২৮ ডিসেম্বর
হামলা-নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী