জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ বাসচালক আবু জাফর বাদশার পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
জুলাই অভ্যুত্থানে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার শহীদ বাসচালক মো. আবু জাফর বাদশার পরিবার অর্থাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তার ছেলের একটি চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের নিকট আকুতি জানিয়েছেন নিহত বাসচালক বাদশার স্ত্রী হাসিনা বেগম। বাদশা উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের ছোটমাছুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ হাওলাদারের ছেলে।
বাদশা শ্যামলি পরিবহনের বাসচালক ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে ১৮ জুলাই সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ডাকা হয়। এসময় সারা দেশে পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও শ্যামলি পরিবহনের মালিক গাড়ি চালাবার জন্য চালকদের চাপ দেয়। চাকরি বাঁচাবার জন্য বাদশা বাধ্য হয়ে শ্যামলিতে বাস কাউন্টারে যাওয়ার জন্য সায়েদাবাদ তার বাসা থেকে বের হয়। তখন বাজধানী জুড়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনী ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে গণহত্যায় মেতে উঠেছিল। এসময় বাদশা যাত্রাবাড়ী এলাকার গোলাপবাগ ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে পৌঁছলে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে তার সারা শরীর ঝাঁঝরা হয়ে যায়। পথচারিরা উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত শেষে বাদশার লাশ পরের দিন রাতে পুলিশ পাহারায় বাড়িতে নিয়ে এসে তার পরিবারকে ১০ মিনিটের মধ্যে দাফন দিতে বাধ্য করে।
মা, স্ত্রী ও ৩ ছেলে সন্তান নিয়ে ছিল বাদশার পরিবার। নিজে লেখাপড়া করতে না পাড়ায় তার স্বপ্ন ছিল সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। বড় ছেলে শাওন (২০) এইচএসসি পাশ করলেও অর্থাভাবে পড়ালেখা বন্ধ করে শ্যামলি এন এর ট্রাভেলসে সুপারভাইজারের চাকরি নেয়। মেঝ ছেলে নুহুকে (১৩) আলেম বানাবার জন্য ঢাকা নিজের কাছে রেখে বালুচর ফজলুল হক উলূম খাদেমুল ইসলাম মাদরাসায় কাফিয়ায় ভর্তি করেছিলেন। এখন তার লেখাপড়াও অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। ছোট ছেলে নাঈম (১০) পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। সংসার চালানো এবং সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে কয়েক লাখ টাকার ঋণগ্রস্ত হয় বাদশা। সংসারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যাক্তির মৃত্যুতে শাশুড়ি ও ৩ সন্তানকে নিয়ে দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন মা হাসিনা বেগম। বড় ছেলে শাওন জানান, তুচ্ছ ঘটনায় শ্যামলি এন আর ট্রাভেলস ২ মাস আগে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। এখানে তার ৩০ হাজার টাকা জামানত দেয়া আছে। বর্তমানে তাকে চাকরি অথবা ৩০ হাজার টাকা কোনটাই ফেরত দেয়া হচ্ছে না বলে শাওন জানান।
শহীদ বাদশার স্ত্রী হাসিনা বেগম জানান, এখন পর্যন্ত জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে ৫ লাখ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে ২ লাখ এবং আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশেন থেকে ১ লাখ মোট ৮ লাখ টাকা সহায়তা পেয়েছেন। এই টাকা দিয়ে স্বামীর ধার দেনা পরিশোধ করেছেন। বর্তমানে সংসারে উপাজর্নক্ষম কেউ নাই। হাসিনা বেগম তার স্বামীর অপুরনীয় স্বপ্ন পূরণের জন্য বড় ছেলে শাওনকে একটি চাকরি দেয়ার জন্য সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পিআইবির উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন করেন ডঃ মানোয়ার হোসেন মোল্লা
বিজয় দিবস হ্যান্ডবল আজ শুরু
শান্তি ও মানবতার জয়গানেই খুলনায় বড়দিন উদযাপন
চুয়াডাঙ্গায় সারাবাংলা ৮৮ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সপ্তাহ ব্যাপী কম্বল বিতরণ কার্যক্রম শুরু
কালিগঞ্জে বিভিন্ন সড়ক মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ ডাম্পার
রাজনৈতিক মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে জামির আলী মার্কেট দখলের পাঁয়তারা
দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক সংকট ,অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন আদালতে হাজির হননি
সালথায় দু'গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর
শুধু নির্বাচনের জন্য মানুষ জীবন দেয়নি : আসিফ মাহমুদ
নোয়াখালীর কবিরহাটে ১৩ বান্ডেল জাল ডলার ও টাকা জব্দ, গ্রেপ্তার-১
জম্মু-কাশ্মীরে ৫ ভারতীয় সেনা নিহত
অ্যাবারক্রোম্বি সিইও যৌন পাচার মামলায় অভিযুক্ত
চাঁদপুরে সেভেন মার্ডার: নৃশংসতার বর্ণনা দিলো র্যাব
ধার্মিক জামাই পেলে শোবিজ ছাড়বেন প্রিয়াঙ্কা, শেষ ইচ্ছা হাফেজ হওয়া
আন্দোলনে নামলেন এবার ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা
রূপগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক নিহত
চাঁদপুরে জাহাজে সাতজনকে হত্যা: সেই ইরফান গ্রেপ্তার
নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মোজাম্বিকে নিহত ১০৩
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের দেশের গর্ব : সেনাপ্রধান
ব্যারিস্টার ফুয়াদের ছবি সম্পাদনা করে ভুয়া প্রতিবেদন প্রচার