ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী, অন্য কোনভাবে নয় -কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

Daily Inqilab কসবা (ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া) উপজেলা সংবাদদাতা

০১ মে ২০২৩, ০৬:৩০ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ০৬:৩০ পিএম

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সামরিক সরকার থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সময় একটা ভ্যাকুয়াম ছিল। সে কারণে সেই সময়ে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন ছিল নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য। ফলে একটা তত্ত্ববধায়ক সরকার নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিএনপি কলুষিত করেছে। তত্ত্বাবধায়কের বিষয়ে আদালতে মামলা থাকায় উচ্চ আদালত তত্ত্ববধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। পরে সংসদে ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া হয়েছে এবং সেইভাবে বাংলাদেশে নির্বাচন হয়ে আসছে। আমরা সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন করে আসছি। আর সেই সুষ্ঠু নির্বাচনে বিএনপি যদি না আসে কিংবা অগ্নিসন্ত্রাস করে সেই দোষ কি আওয়ামী লীগের, সেই দোষ কি শেখ হাসিনার, না বাংলাদেশের জনগণের? এই দোষ হচ্ছে বিএনপির সস্ত্রাসীদের। ২০২৩ অথবা ২০২৪ সালে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের যে তারিখে ঘোষণা করবে সেই অনুযায়ী বাংলাদেশে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্য কোন ভাবে নয়। সোমবার (০১ মে) দুপুরে ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের সিরাজুল হক স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে কসবা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আয়োজনে মতবিনিময় সভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির কারণে জেল খেটেছেন। উনি জেল খেটেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা মামলার কারণেই। মন্ত্রী বলেন, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়োগ করেছিল খালেদা জিয়ার বানানো রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন।
মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মামলায় বিচারিক আদালত পাঁচ বছর কারাদন্ড দিয়েছেন। আপীল করায় উচ্চ আদালত সাজা বৃদ্ধি করে ১০ বছর করেছেন। করোনার সময়ে খালেদা জিয়া অসুস্থ হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় আইন অনুযায়ী দুটি শর্তে সাজা স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা তাঁকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, বিদেশ যাওয়ার চেয়ে উনি যদি দেশে চিকিৎসা পান আর সেই চিকিৎসায় তিনি যদি সুস্থ হন তাহলে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন কি? তিনি বলেন, উনি নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে গেছেন। তিনি সুস্থ আছেন। চিকিৎসা শেষে আল্লাহর রহমতে বাসায় ফিরে আসবেন। বিএনপি’র উদ্দেশ্যে বলেন, এ নিয়ে আন্দোলন করে কিছুই করতে পারবেন না। আন্দোলনে তিনি মুক্তি পান নাই। তিনি মুক্তি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায়। এদিকে উনারা কি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন মা। খালেদা জিয়ার ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর শেখ হাসিনা সহমর্মিতা জানানোর জন্য খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়েছিলেন, কিন্তু উনারা গেইট খুলেননি।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, আমেরিকা সংবিধান পেতে অনেক দিন লেগেছে। পাকিস্তানের সংবিধান এখনো নড়বড়ে। অথচ বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীনের মাত্র ১০ মাসের মাথায় একটি পূর্ণাঙ্গ সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের ১৭জন সদস্যকে হত্যা করে। উনারা চেয়েছিল বাংলাদেশ যেন না থাকে। সেখান থেকে জননেত্রী দেশকে উদ্ধার করেছেন।
মন্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা শিক্ষক। আপনাদের মর্যাদা সবসময় বেশী। আপনারা মন বড় রাখবেন। তাহলে শিশুদের মনও বড় হবে। আপনারা হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। আপনারা শিক্ষার ভিত গড়ে দেন। মন্ত্রী শিক্ষকদের বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আমি আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের যুক্তিসংগত দাবি দাওয়া মেনে নেবেন। কেননা স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছেন। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা একই সাথে ২৩ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন।
কসবা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এইচ এস সারওয়ারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া, কসবা উপজেলা অফিসার মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খান। বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন, প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, আয়েশা আক্তার, গোলাম রব্বানী, নাছির আহাম্মদ, আসাদুজ্জামান, নাজির আহাম্মদ প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. আজহারুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন ভূইয়া, কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়াম্যান মো. মনির হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ছিদ্দিকী, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবদুল আজিজ, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. এমরান উদ্দিন, কসবা উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক মো. আফজাল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মানিক প্রমুখ।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা