ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

সিলেটে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কাজ শুরু, বিনামূল্যে প্রথম ধাপে এ সেবায় সংযুক্ত হবেন ৫০ হাজার গ্রাহক

Daily Inqilab সিলেট ব্যুরো

১৮ আগস্ট ২০২৩, ০৬:২৭ পিএম | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০৬:২৭ পিএম

 


সিলেটে জালালাবাদ গ্যাসের আওতাধিন গ্রাহকদের প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানি মিটার ও মিটার স্থাপনের কাজে ব্যবহৃত পাইপ ফিটিংস বিনামূল্যে দিয়ে গ্রাহক আঙ্গিনায় স্থাপন করবে মিটার ।

জালালাবাদ গ্যাস সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র ১টি চুলা দ্বারা যেসকল গ্রাহকগণের গ্যাস সংযোগ রয়েছে সে সকল গ্রাহককে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মিটার স্থাপন করবে।

জালালাবাদ গ্যাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিটার স্থাপন কাজে যারা নিয়োজিত থাকবে তাদের সাথে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করবেন না। এই আর্থিক লেনদেনের কারণে জালালাবাদ গ্যাস এর সাথে নিয়োজিত ঠিকাদারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে এবং বাধাগ্রস্থ হচ্ছে চলমান প্রি-পেইড মিটারের কাজে।

যে সকল গ্রাহক আঙ্গিনায় দুইবা ততোধিক চুলার মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেম লিঃ এর তালিকাভূক্ত ১.১ শ্রেণির ঠিকাদারের নিয়োগ করে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে জেজিটিডিএসএল’র গৃহস্থালী পর্যায়ের ৫০ হাজার গ্রাহক প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আসবেন। এতে করে গ্যাসের অপচয় রোধ হবে এবং গ্রাহকরা অতিরিক্ত বিল প্রদান থেরকে রেহাই পাবেন বলে জানিয়েংছেন সংশ্লিস্টরা।

সিলেটে আবাসিক পর্যায়ে গ্রাহকদের প্রি-মেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসার এটিই প্রথম উদ্যোগ। প্রাথমিক অবস্থায় প্রি-মেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসা হবে সিলেটের ৫০ হাজার গ্রাহককে।

এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লিটন চন্দ্র নন্দী বলেন, ২০১৯ এ ব্যাপারে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই প্রকল্প অনুমেদিত হয়। এই প্রকল্পে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের মাধ্যমে একদিকে যেমন গ্যাসের অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে গ্রাহকের প্রতি মাসের খরচও কমবে। দুই চুলার গ্যাসের জন্য এখন প্রতি মাসে গ্রাহক এক হাজার টাকার উপরে বিল দিচ্ছেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ছোট পরিবারের একজন গ্রাহক এক হাজার টাকায় তিন মাস গ্যাস ব্যবহার করতে পারবেন। মাসে তার খরচ পরবে ৩০০ টাকার মতো। এছাড়া গৃহস্থালি পর্যায়ে প্রি-পেইড গ্যাস মিটার ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকদের মধ্যে গ্যাস ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মনিটরিং ব্যয়ও কমবে।
স্মার্ট কার্ডভিত্তিক উন্নত প্রযুক্তির মটিার জালালাবাদ গ্যাসের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের বিনামূল্যে লাগিয়ে দেয়া হবে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, মিটারের মূল্য মাসিক ভাড়া হিসেবে সমন্বয় করা হবে। নিকটস্থ রিচার্জ পয়েন্ট থেকে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ক্রেডিট কিনে প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করা যাবে। রিচার্জ শেষ হলেও এতে ইমার্জেন্সি ব্যালেন্সের সুবিধা থাকবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রিপেইড গ্যাস মিটার থাকলেও সিলেটে প্রথমবারের মতো চালু করা হচ্ছে এ পদ্ধতি।

সংশ্লিস্টরা জানান, একদিকে অপ্রয়োজনে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখার কারণে গ্যাসের অপচয় হচ্ছে। অপরদিকে বারবার গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে গ্রাহকরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এই দুই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দুই পক্ষই- গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় গৃহস্থালি পর্যায়ে গ্যাসের অপচয় রোধ এবং গ্যাসের কার্যকর ব্যবহারের লক্ষে সিলেটে প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেজিটিডিএসএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শোয়েব আহমদ মতিন বলেন, অনেকে ম্যাচের কাঠি বাঁচাতে অপ্রয়োজনে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখেন। প্রিপেইড মিটার যুক্ত হলে তারা এ কাজ থেকে বিরত থাকবেন। আবার অনেক গ্রাহক আছেন সারা মাস গ্যাস ব্যবহার না করলেও মাস শেষে নির্ধারিত বিল পরিশোধ করতে হয়। তাদের এখন থেকে আর গ্যাস না জ্বালালে দিতে হবে না বিল। যতটুক গ্যাস ব্যবহার করবেন কেবল ততটুকুর বিল দিতে হবে।

জেজিটিডিএসএল’র কর্মকর্তারা জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতিটি আবাসিক গ্রাহকের মাসিক গড় গ্যাস ব্যবহার ৬৬ ঘনমিটার থেকে ৪০ ঘনমিটারে নেমে আসবে। ফলে গ্রাহক প্রতি গ্যাস সাশ্রয় হবে গড়ে ২৬ ঘনমিটার। গ্যাস বিতরণ লাইন লিকেজজনিত অপচয়ও রোধ হবে।
বর্তমানে জালালাবাদ গ্যাসের প্রায় ৩ লাখ আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন। প্রথম অবস্থায় ৫০ হাজার গ্রাহকদের মধ্যে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। পর্যায়ক্রমে বাকীদেরও মিটারের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা