বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ৮.৭০ লাখ হেক্টরে আমন আবাদ লক্ষ্য অর্জিত, ২২ লক্ষাধিক টন চাল উৎপাদনের আশা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২৩ এএম | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২৩ এএম
ভাদ্রের বড় অমাবশ্যার ভড়া কাটাল কটে যাবার ফলে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের কৃষকের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাজ কিছুটা মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে চলতি খরিপ-২ মৌসুমে এ অঞ্চলে প্রায় ৮.৭০ লাখ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যে পৌছতে সক্ষম হয়েছেন কৃষি যোদ্ধাগন। ভাটি এলাকা বিধায় আরো অন্তত ১০ দিন আমন রোপনের সুযোগ পাবেন বরিশাল অঞ্চলের চাষীগন। ফলে চলতি মৌসুম আমন আবাদ লক্ষ্য অতিক্রমের সম্ভবনার আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল। চলতি খরিপ-২ মৌসুমে বরিশাল অঞ্চলে ২২ লাখ ৮ হাজার টন আমন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে এখনো মাঠে কৃষি যোদ্ধাগন। চলতি খরিপ-২ মৌসুমে দেশে প্রায় ৫৬ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের আমন আবাদের মাধ্যমে ১ কোটি ৬৮ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ্য স্থির করেছে কৃষি মন্ত্রনালয়।
তবে বছরের শুরু থেকে বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পরে আগষ্টেই শ্রাবনের অমাবশ্যায় ভর করে বরিশালে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৮০ ভাগ বেশী। ফলে বিগত দুটি খরিপ-২ মৌসুমের মত এবারের ভাদ্রের বড় অমাবশ্যা নিয়ে মারাত্মক দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন বরিশাল কৃষি অঞ্চলের কৃষকগন। পুরো ভাদ্র মাস শেষে অশি^নের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রোপা আমনের আবাদ চলে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে। কিন্তু এবার শুক্রবার সকালে ভাদ্রে বড় অমাবশ্যা শেষ হবার অঅগে পরে অসময়ের অস্বাভাবিক তাপ প্রবাহ এ অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের জন্য বাড়তি বিরূপ পরিস্থিতি তৈরী করছে। গত কয়েকদিন ধরেই বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছে পীঠে রয়েছে।
গত মাসের প্রথমভাগে শ্রাবনের অমাবশ্যায় একটি লঘু চাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক বর্ষণের সাথে ফুসে ওঠা সাগর ও উজানের ঢলের পানিতে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের আমন বীজতলা ও রোপা আমন ছাড়াও আধা পাকা আউশের প্রায় পুরোটাই প্লাবিত হয়েছিল। তবে সাগর দ্রুত শান্ত হয়ে উজানের পানি গ্রহন করায় নদ-নদী স্বাভাবিক ধারায় ফিরলেও প্রবল বর্ষণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পুরো সপ্তাহ পেরিয়ে যায়। ফলে জুলাই মাসে যেখানে বরিশালে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের ৫৮% কম, সেখানে আগস্টে তা ৮০% বেশী ছিল। গত মাসে বরিশালে স্বাভবাবিক ৪৩৩ মিলিমিটারের স্থলে ৭৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া বিভাগ।
চলতি মাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ৩১৬ মিলিমিটারের স্থলে ২৮৫ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের কথা বলা হলেও মাসের প্রথম ১৫ দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমান ১শ মিলির কিছু বেশী। তবে ১৪ সেপ্টেম্বর সূর্যোদয়থেকে ১৫ সেপ্টেমবর সূযোদয় পর্যন্ত ভাদ্রের অমাবশ্যায় ভর করে কি ধরনের বৃষ্টি হয় তাি নয়েকৃষকগন যথেষ্ঠ দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন। বিগত ৩টি বছরই ভাদ্রের অমাবশ্যার প্রবল বর্ষণের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ার আর উজানের ঢলের পানিতে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের আমন ফসলী জমি সয়লাব হয়ে যায়। ফলে ব্যাপক ক্ষতির কবলে পড়েন কৃষকগন।
অতীতের ক্ষত মাথায় রেখেই শংকিত ছিলেন বরিশাল কৃষি অঞ্চলের কৃষকগন। প্রায় ১৫ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ব দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থা এখনো সম্পূর্ণভাবেই প্রকৃতির ওপর নিভর্’রশীল। পুরো মৌসুম যুড়েই বৃষ্টির অভাবে খরিপ-১ মৌসুমে লক্ষামাত্রার চেয়ে অনেক কম, ১ লাখ ৬৮ হাজার হেক্টরে আউশের আবাদ হয়েছে। শণিবার পর্যন্ত ৯৮% কর্তন সম্ভব হলেও শ্রাবনের প্রথম সপ্তাহের প্রবল বর্ষণে প্লাবিত হয়ে আউশের উৎপাদন যথেষ্ঠ ব্যহত হয়েছে। এ পর্যন্ত যে ১.৬৫ লাখ হেক্টরের আউশ কর্তন হয়েছে, তাতে সদস্য সমাপ্ত খরিপ-১ মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না।
তবে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন নিয়ে আপতত দুঃশ্চিন্তা কেটে যাওয়ায় কিছুটা শংকা মূক্ত কৃষকগন। তবে অতীতে নভেম্বরর প্রথম ভাগে দক্ষিনাঞ্চলে একাধিক বড় মাপের ঘূর্ণিঝড় অঅঘত হানায় কৃষকরা সম্পূর্ণ নশচন্ত হতে পারছেন না। ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল আউশের ‘সামান্য ক্ষতি’র কথা স্বীকার করলেও আমন নিয়ে এখনই কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাদের মতে, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। যে কোন ক্ষতি পূণর্বাশণের প্রস্তুতি রয়েছে মাঠ পর্যায়ে।
বরিশাল অঞ্চলের কৃষি যোদ্ধাগন বিরূপ প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করেই প্রতি বছর আউশ,অমন ও বোরা ধান ঘরে তুলছেন। এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলা দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় ১৫ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত। ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’, ‘আইলা’ ‘মহাশেন’, ‘ইয়াশ’,‘অশণি’ ও ‘সিত্রাং’এর মত ভয়াবহ প্রকৃতিক দূর্যোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেই বরিশাল কৃষি অঞ্চলের কৃষি যোদ্ধাগন গত অর্থ বছরের খরিপ-১,খরিপ-২ ও রবি মৌসুমে প্রায় ৫০ লাখ টন দানাদার খাদ্য ফসল উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন। গত বর্ষা মৌসুমেও বছর যুড়ে বৃষ্টির অভাবের পরে মৌসুম শেষে বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’এ ভর করে প্রবল বর্ষণে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন ব্যাপক ঝুকির কবলে পরে। তবে সব দূর্যোগ অতিক্রম করে এ অঞ্চলে প্রায় ২২ লাখ টন আমন চাল ঘরে তুলেছিলেন কৃষি যোদ্ধাগন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন
ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান
জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু
আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল
ভারতের কাছ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা
মেজর জে. অব. তারেক সিদ্দিকসহ ১০ জনের নামে মামলা