ফরিদপুর টানা ৮ ঘন্টা বৃষ্টি তলিয়ে গেছে নিমাঞ্চল লাবদ্ধতায় ডেঙ্গু মশার উপদ্রবে শহরবাসী

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা

০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৩৬ পিএম | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৩৬ পিএম

ফরিদপুর টানা ৮ ঘন্টা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শহরের নিমাঞ্চল। জলাবদ্ধতায় ডেঙ্গু মশার উপদ্রবে শহরবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।

টানা ৮ ঘন্টা বৃষ্টিতে ফরিদপুর শহরের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে ইতোমধ্যেই। কোথাও কোমড় পানি কোথাও হাঁটু পানি। আবার কোথাও কোথাও একতলা দ্বিতলা বিল্ডিং ভবন কোথাও টিনসেটের শতাধিক বাসা বাড়ীতে বৃষ্টি পানি ঢুকে ঘরের মেঝেত পানি থেই থৈ করছ। রীতি মত শহরের মডেল টাউন,মেছের খানের ভাটা এলাকা,কমলাপুর,আলীপুর,মোল্যাপাড়া বিল্লালের পাগার এলাকা,মধ্য আলীপুর,খোদাবক্স রোড এলাকা,শোভারামপুর এলাকা, সিএন্ডবি ঘাট এলাকা,এ কে কে এনজিও এলাকার শত শত বাসাবাড়ি সামনে ব্যাপক জলাবদ্ধতায় বাড়ীর সদস্যরা পুড়ো পড়নের কাপড় ভিজিয়ে কোন রকম বাড়ীতে ডুকছে।

ফরিদপুরের বৃহস্পতিবার, সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ জেলা সদর,শহর উপশহর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের হাজারও নাগরিক। । ঝাপটা আবহাওয়ার সাথে ঝড়ছে মূষল ধারা অঝোরবৃষ্টি। টানা ৮ ঘন্টা বৃষ্টির কারণে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ছিল কম। গাড়ি না পাওয়ায় আরও ঘরমুখো মানুষেের ভোগান্তি বেড়েছে অনেক। অফিসগামী নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ছিল বৃষ্টিতে ভেজা ক্লান্তির ছাপ। পাশা-পাশি শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তিন’শত উপরে তাদের বাসাবাড়িতে ফিরতে রিক্মা ও অটোরিকশার ভাড়া গুণতে হচ্ছে তিনগুণ । বাড়ী- ঘর থেকে বের হওয়া গাড়ির অপেক্ষায় থাকা যানবাহন সংকট ও রাস্তায় ডুবে থাকা পানিতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্তও ফরিদপুর,মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ জেলাও অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝড়ার খবর পাওয়া গেছে। এই ৫ জেলা ও কমপক্ষে ৩০ টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন সড়কে জমেছে পানি। নিচু এলাকার অলিগলি পানিতে থৈথৈ করছে। অনেক জায়গায় বৃষ্টির সঙ্গে নর্দমার পানি মিশে একাকার। আর যানবাহন না থাকায় বাসের জন্য যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। কোথাও রাস্তায় পানি জমে গর্তগুলো আড়াল হওয়ায় পথচারীদের দুর্ঘটনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ফুটপাত আর সড়কের পার্থক্য বোঝার কোনো উপায় নেই।
এদিকে, বৃষ্টির ভোগান্তিতে পড়েছেন দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরাও। সকালে অনেক শ্রমিককে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অলসভাবে বসে থাকতে দেখা গেছে। নুন আনতে পান্তা ফুরানো এসব মানুষদের অনেকেই অসহায়ভাবে কাকভেঁজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। অপরদিকে, টানা বর্ষনে জেলার চর এলাকায় বাড়ছে ভাইপার রাসেল সাপের আতঙ্ক। বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের তথা মতে জানাগেছে, সদরপুর উপজেলার হরিরামপুর, সদর থানার নর্থচ্যানেলের চর এলাকা,এবং ডিক্রিচর ইউনিয়নের চর এলাকা,চরভদ্রাসন উপজেলার চর এলাকায় রাসেল সাপের দংশন এ পর্যন্ত ৬/৭ জন লোকের মৃত্যু হয়েছে। পাশা-পাশি টানা বর্ষনে জেলা সদরের নিচু এলাকার বাসাবাড়িতে ও ডুকে পড়ছে দেশী প্রজাতির বহু সাপ। সাথে যোগ হয়েছে ডেঙ্গু এবং এডিস মশার উপদ্রব। ফরিদপুর পৌরসভার গুহলক্ষ্মীপুর,ভাটীলক্ষীপুর,স্লুইজগেট এলাকা,টেপাখোলা,টিবির মোড় এলাকা,সাধীপুর,বায়তুল আমান,এলাকার বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতায় যদি দ্রুত ভাবে পানি নিস্কাশনের ব্যাবস্হা না করেন এই শহর হবে একটি ভয়াবহ ডেঙ্গু জোন এলাকা।

বিভাগ : বাংলাদেশ