ফরিদপুর অঞ্চলে হটাৎ ঘূর্ণিঝড়ে শতাধিক বাড়ী বিধ্বস্ত ভেসেছে পুকুরের মাছ, সবজি ক্ষেত পানির তলে কোটি টাকার ক্ষতি
০৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:২৮ পিএম | আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:২৮ পিএম
ফরিদপুর অঞ্চলে হটাৎ ঘূর্ণিঝড়ে শতাধিক বাড়ী বিধ্বস্ত এবং ৮৬ টি টি বাড়ী সম্পূর্ণই ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এর মধ্যে আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৭০ টি এবং সালথা উপজেলার ১৫ টি ঘর সম্পূর্ণই তছনছ হয়ে গেছে। ভেসেছে গেছে বহু পুকুরের মাছ। উঠোন্ত সবজি ক্ষেত এখন পানির তলে। ফলে হটাৎ ঝড়ে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিচর,নর্থচ্যানেল,অম্বিকাপুর,মাচ্চর কানাইপুর এলাকার বহু নিচু জায়গার ফলদ ও ফসলের ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।এছাড়াও ,সালথা শিবচর,গোয়ালন্দ,বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা,সদরপুর,চরভদ্রাসন ও ভাঙ্গা উপজেলা সদর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের শতাধিক বাড়ী ঘর লন্ডন ভন্ড হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী এবং সালথা উপজেলায়।
আলফাডাঙ্গায় এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে ৬ গ্রাম। তলিয়ে গেছে হাজারো বাড়ীর উঠান। ভেসে গেছে বহু পুকুরে মাছ। ক্ষতি গ্রহস্হ হয়েছে হাজার হাজার বিঘা কলার বাগান।পানির তলে ডুবে গেছে শীতকালীন আগম সবজির কয়েক শত বিঘা ক্ষেত। এই অঞ্চলের হাজার হাজার বাড়ী ঘরে ঘরে ডুকে পড়ছে বৃষ্টিতে জমা জলাবদ্ধতার পানি। চারিদিক ছুটোছুটি করছে পানিতে ভেসে আসা নানা প্রজাতির ছোট বড় সাপ।
মাত্র এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে আলফাডাঙ্গায় দুটি ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম লন্ডভন্ড হওয়া শতাধিক পরিবার এখন বড়ই অসহায় পড়ছে। বিধ্বস্ত হওয়া শতাধিক ঘরবাড়ি মালিকরা হাউস মাউ করে কাঁদছে। ঝড়ে উপড়ে কমপক্ষে তিনশতাধিক ফলদ গাছ। এছাড়াও পেঁপে বাগান, বেন্টি ক্ষেত ,কাঁচামরিচের ক্ষেত, পুঁই শাখের ক্ষেত সব বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বন্ধ রয়েছে উল্লেখিত, এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ। ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকেই খোলা আকাশের নিচে।তবে ঝড়ে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে ও রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়ে ইউনিয়নের বিদ্যাধর, ব্রাহ্মণ-জাটিগ্রাম, বেজিডাঙ্গা, এবং টগরবন্ধ ইউনিয়নের মালা, কৃষ্ণপুর-টগরবান, তিতুরকান্দি গ্রামের ঘর, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নষ্ট হয় ফসলি জমি।
বিদ্যাধর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের ২০-৩০টি কাঁচাপাকা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে গেছে। এরমধ্যে ঝড়ের আগে থেকেই বিদ্যুৎ বন্ধ।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন এবং টগরবন ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান লায়লা বেগম বলেন
খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সাধ্যমতো সহযোগিতার চেষ্টা করছি। টগরবন্ধ ইউনিয়নে তিনটি গ্রামের ৬০-৭০টি কাঁচাপাকা বাড়িঘর ও কয়েকশ গাছপালা ভেঙে উপড়ে পড়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্তরা আপাতত আশপাশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
কথা হয় আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদের সাথে তিনও বলেন, উপজেলার ছয়টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাঁচাপাকা ও বাড়িঘর ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চারদিন সময় লাগতে পারে।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই ঘরবাড়ি ছাড়া খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের নিরাপদ স্থানে নেয়া হয়েছে। পুরো এলাকা জুড়ে অন্ধকার। প্রাথমিকভাবে কারো নাম-পরিচয় জানানো সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার( পিএএ) বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন। অপরদিকে, ঘুর্নিঝড়ে
ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার বল্লভদি ইউনিয়নের সোনাতুন্দী গ্রামে আঘাত হেনেছে ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় সেখানে তিন মিনিটের ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে ১৫টি ঘরবাড়ি ও অসংখ্য গাছপালা। অপরদিকে, নগরকান্দা ইউনিয়নের বেশ কিছু জায়গায় এবং ডেইরি ফার্ম এলাকা ও বুলবুল সর্দার বাড়ীর এলাকায় রমজান আলী,সরফাত মীর, কবির মিয়াসহ ২০/২৫ পুকুর দীঘির চাষের মাছে কোটি টাকার মাছ ধানক্ষেতে ভেসে গেছে। এতে উল্লেখিতরা কোটি টাকার সম্মুখীন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে বল্লভদী ইউনিয়নের সোনাতুন্দী গ্রামে এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রচন্ড বেগে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ১৫টি বসতঘর তচনছ হয়ে যায়। এর মধ্যে হাফেজ মোঃ সগির ও বিধবা লিপির একমাত্র অধাপাকা ঘরটি ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যা। এছাড়াও
বিদ্যুতের তাঁর ছিড়ে এবং গাছ পড়ে সোনাতুন্দীর উত্তর পাড়ার একমাত্র ইটের সলিং এর রাস্তাটি বন্ধ হয়ে আছে। এছাড়াও পুরো এলাকা বিদ্যুতবিহীন রয়েছে। বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে শিবচর উপজেলার বহু কৃষি খামারের এবং মৎস খামারীর। অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি ফুঁসে উঠায় পানিতে ভেসে পুকুরের সব মাছ। গোয়ালন্দ উজানচর এলাকা ফরিদপুর সদর থানার সীমান্ত এলাকায় ডুবে গেছে ধানক্ষেত এবং লাউ গাছের বাগান। সেখানকার কৃষক ও সবজি চাষীরাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও ঝড়ও বৃষ্টিতে সদরপুর,চরভদ্রাসন,ভাঙ্গা,শিচর,গোয়ালন্দ, মধুখালি উপজেলায়গুলোতে নিচু জমিতে আবাদ করা হাজার বিঘা আগাম শীতকালীন সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবছে। পাশাপাশি ফরিদপুর জেলাবাসী সবজি নির্ভর সদরপুেরর,যাত্রাবাড়ী, নিজগ্রাম, সৌলডুবী,কৃষ্ণনগর এলাকার শতাধিক বিঘা সবজি বাগান পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
উল্লেখতি বিষয় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে মোট ক্ষতির পরিমান জানতে চাইলে মাঠ পর্যায় থেকে পুরো তথ্য না পাওয়ায় দিতে পারেননি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য
পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
কারাগারে এস কে সুর
‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’
ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে
অভি খালাস! তাহলে খুনী কে?
জল্পনা উড়াল চীনা সংস্থা টিকটক কিনছেন না মাস্ক
ধামরাইয়ে খাদ্যদ্রব্য তৈরির কারখানায় ফের আবার ডাকাতির চেষ্টা
রাজউক জোনাল অফিস স্থানান্তর আদেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দ্বিতীয় দিনের মতো অনশনে অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা
বন্ধ বেক্সিমকো খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
আধুনিক ডেটা ওয়্যারহাউজ স্থাপন করবে বিবিএস
পরিবারসহ জ্যাকব ও ছেলেসহ সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানির নতুন তারিখ
সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনের বিষয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান ইউজিসি’র
চুক্তিতে নিয়োগের দৌড়ে নওফেলের জালাল উদ্দিন চৌধুরী
পুলিশের চাকরি হারিয়ে ছিনতাইয়ে নামেন হাকিম
ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি
সাকরাইনে মেতেছে পুরান ঢাকা