গতি পাচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৫০ পিএম | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৫০ পিএম
- ৩৩ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধি দল টেকনাফে
- নির্মিত হচ্ছে আরো ৩ ট্রানজিট ক্যাম্প
অবশেষে গতি পাচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। এলক্ষ্যে আজ ৩৩ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধি দল টেকনাফে এসেছেন। নির্মিত হচ্ছে আরো ৩ ট্রানজিট ক্যাম্প।
দীর্ঘ ৭বছর ধরে ঝুলে রয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। এ পর্যন্ত কয়েকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আটকে থাকে মিয়ানমারের অসহযোগিতাসহ নানা কারণে। এবার হঠাৎ করে আবারো সামনে আসে প্রত্যাবাসন বিষয়টি। জল-স্থলে দুইভাবেই প্রত্যাবাসনের জন্য শুরু হয়েছে তোড়জোড়। এর মধ্যে আগের ২টি ট্রানজিট ক্যাম্প ছাড়াও চলছে আরও ৩ টি ট্রানজিট ক্যাম্প নির্মাণের কাজ।
এর মধ্যেই আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) প্রত্যাবাসনের ইস্যুতে বাংলাদেশ আসছে মিয়ানমারের ৩৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
কক্সবাজারের টেকনাফ হয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ আসবেন।
প্রত্যাবাসনের পক্ষে রোহিঙ্গাদের উদ্বুদ্ধকরণ এবং যাচাই-বাছাই করতে মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ হয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ আসবেন।
কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সূত্রমতে জল-স্থল দুই পথেই পথেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে। ২০১৮ সালে দুটি ট্রানজিট ক্যাম্প নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০১৮ সাল থেকে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটা শুরু হবওয়ার কথা ছিল। মিয়ানমার আন্তর্জাতিক মহলের চাপে তাদের রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত থাকলেও প্রক্রিয়াগতভাবে প্রত্যাবাসনে শুরু হয়েছে দীর্ঘ সূত্রিতা।
সম্প্রতি সরকার দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে গুরুত্ব দিলে আরআরআরসি অফিস আরও ৩টি ট্রানজিট ক্যাম্প নির্মাণ হাতে নিয়েছে। এজন্য র্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরকে বরাদ্দ দিয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকার মতো। কাজ শুরু হয়েছে এবং তা দ্রুত শেষ হবেও আশা করা হচ্ছে।
আরআরআসি বলেন, জল ও স্থল দুই পথেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে। যা ২০১৮ সালে দু'দেশের চুক্তিতে উল্লেখ্য রয়েছে। আমরা জল ও স্থল দুই ভাবেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সূত্র বলছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, ঘুমধুম ও টেকনাফে রোহিঙ্গ প্রত্যাবাসনের জন্য আরও নতুন ৩টি ট্রানজিট সেন্টার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের তত্ত্বাবধানে এ সেন্টারগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফে ২টি ট্রানজিট সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছিল।
আরআরআরসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, চলতি বছর মিয়ানমার প্রতিনিধি দল দু'বার বাংলাদেশে আসে। এর মধ্যে একবার রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করে। এর পরের বার প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গদের সঙ্গে বসে এবং তাদের দাবি-দাওয়ার কথাগুলো শুনেন। এখনো একইভাবে আরেকটি মিয়ানমার প্রতিনিধি দল আসছে আজ মঙ্গলবার। তারা রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন। মূলত প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গাদের দাবি-দাওয়া ছিল, তা মিয়ানমার প্রতিনিধি দল যে ব্যবস্থা নিয়েছেন সে ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের অবহিত করবেন। আমরা এর একটি পরিবেশ ও আয়োজনের ব্যবস্থা করছি। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা ৩৪ জন। তার মধ্যে ৪ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। তারা ট্রলারে অবস্থান করবেন এবং বাকি ৩০ জন সদস্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
মো. মিজানুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার ৯টার মধ্যে দুটি ট্রলারযোগে নৌপথে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটি টেকনাফে পৌঁছাবে। তাদের জন্য টেকনাফের সড়ক ও জনপদ বিভাগের সরকারি রেস্ট হাউসে আয়োজন করা হয়েছে। রোহিঙ্গা নেতারা মিয়ানমার প্রতিনিধি দল আসার আগেই রেস্ট হাউসে উপস্থিত থাকবেন। এরপর মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোহিঙ্গা নেতাদের আলোচনা হবে। আমরা আশা করি, দু'পক্ষের কথা-বার্তার মাধ্যমে তাদের মধ্যে যে আস্থার সংকট রয়েছে, সেটি দূর হবে এবং অচিরেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে, যার জন্য আমরা প্রস্তুত।
এদিকে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় হামুন পরবর্তী কক্সবাজারে আসেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান। এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহল কাজ করছে। নতুন একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আশা করি, দ্রুত এই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে।
এর আগে চলতি বছর দু'বার মিয়ানমার প্রতিনিধি দল আসে টেকনাফে। প্রথম বার ১৫ মার্চ ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি বাংলাদেশ আসেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি এসেছিলেন ২৫ মে। এর মধ্যবর্তী ৫ মে বাংলাদেশের ৭ সদস্য রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলও মিয়ানমারের মংডুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আসেন। উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা
আশ্রয়রত রয়েছেন। কিন্তু গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।
এদিকে এই বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গার কারণে নানা ভাবে সংকট সৃষ্টি হয়েছে উখিয়া-টেকনাফ সহ গোটা কক্সবাজারে। যতই দিন যাচ্ছে সংকট আরো বাড়ছে। আইন শৃঙ্খলা, পরিবেশ, সামাজিক ও অর্থ নৈতিক সমস্যা অত্র এলাকায় প্রকট আকার ধারন করেছে। তাই সর্ব মহল থেকে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের যৌক্তিক দাবী উচ্চারিত হচ্ছে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন খুলছে আজ
বিচিত্রার সম্পাদক দেওয়ান হাবিব আর নেই
জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হত্যা : ৮ শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
তোফাজ্জলকে হত্যার আগে ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা চাওয়া হয় পরিবারের কাছে
বিশ্বের কাছে ১২টি পরমাণু গবেষণার ও স্থাপনা উন্মুক্ত করবে চীন
এবার রাবির শেরে-বাংলা হল থেকে লাঠিসোঁটা-হকিস্টিক উদ্ধার
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস
লেবাননে এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা ইসরায়েলের
সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাইলেন পঞ্চগড়ের নতুন জেলা প্রশাসক
ইনস্টাগ্রামের মতো ফিচার এবার আসছে হোয়াটসঅ্যাপেও!
যুক্তরাষ্ট্রে কোর্টহাউসে বিচারককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা
তাপপ্রবাহ নিয়ে যা জানা গেল
৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
‘ভারতীয় খাবার জঘন্য’, অস্ট্রেলিয়ান ইউটিউবারের পোস্ট ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে
ট্রাম্পের তথ্য চুরি করে বাইডেন শিবিরে পাঠিয়েছিল ইরান! দাবি গোয়েন্দা সংস্থার
সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নান গ্রেফতার
ইয়ামালের মাইলফলকের রাতে হারের তেতো স্বাদ বার্সার
আর্সেনালের স্বস্তির ড্র,অ্যাটলেটিকোর দারুণ জয়
হেডের বিধংসী শতকে লন্ডভন্ড ইংল্যান্ড
পয়েন্ট হারিয়েও শীর্ষে আর্জেন্টিনা,অবনতি বাংলাদেশের