রাজশাহী বিভাগের কারাগারগুলোতে বন্দিরা গাদাগাদি করে থাকছেন। এ বিভাগের আট জেলার কারাগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে ধারণক্ষমতার চারগুণ। কারাগারের কর্মকর্তারা জানান, আবাসন সমস্যা প্রকট হওয়ায় বন্দিদের ঠাসাঠাসি ও গাদাগাদি করে রাখতে হচ্ছে। এমনকি খাওয়া-দাওয়ার পরিবেশও দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে গোসলের ব্যবস্থা এবং শৌচাগারের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় বন্দি ধারণক্ষমতা চার হাজার ১৪৪ জন। কিন্তু বন্দির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার। বেড়েছে নারী বন্দির সংখ্যাও। বন্দির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষকে।

কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভাগের আট জেলার মধ্যে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। এ কারাগারে বর্তমান বন্দির সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার। ধারণ ক্ষমতা এক হাজার ৪৬০ জন। কিছু দিন আগে এই কারাগারে বন্দির সংখ্যা ছিল তিন হাজারের নিচে। এছাড়াও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ৪১ জনের বিপরীতে বন্দি নারীর সংখ্যা ১৮৫, যা ধারণক্ষমতার প্রায় সাড়ে চারগুণ।

এদিকে নাটোর জেলা কারাগারে ২০০ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি রয়েছে এক হাজার ৮০ জন। যার ধারণক্ষমতা ৫৫০ জন। জয়পুরহাট জেলা কারাগারে ১২৭ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি সংখ্যা ৭১৯ জন। অপরদিকে, বগুড়া জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৭৮৫ জন হলেও বন্দির সংখ্যা দুই হাজার ২৬৭ জন। এছাড়া পাবনা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৫৭১ জন; বন্দির সংখ্যা এক হাজার ৪০৯ জন। সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৬০০ জন হলেও বন্দি আছেন দেড় হাজারের বেশি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে ৫৮৬ জনের ধারণক্ষমতা। কিন্তু বন্দির সংখ্যা এক হাজারের বেশি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী জেলা সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন বলেন, কয়েদিদের বিরুদ্ধে কোনো রকম নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা বা তাদের কষ্টে রাখা যাবে না। এটা মানবিক বিষয়। জনসংখ্যা বেড়েছে আমাদের, সে তুলনায় কিন্তু কারাগার বাড়েনি। অপরাধ করলে যেমন আটক রাখা রাষ্ট্রের কাজ, তেমনি বন্দিদের জন্য মানবিক পরিবেশ নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব।’

রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক কামাল হোসেন বলেন, ‘আগে থেকেই কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার তুলনায় বন্দি বেশি। সম্প্রতি বন্দির সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে এটি আমরা অস্বাভাবিক মনে করছি না।