উখিয়ায় আরসা'র শীর্ষ কমান্ডার মৌলভী হামিদসহ তার দুই সহযোগী র্যাবের হাতে আটক
২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৪ পিএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৪ পিএম
কক্সবাজারের উখিয়ায় সন্ত্রাসী আরসা'র শীর্ষ কমান্ডার মৌলভী হামিদসহ তার দুই সহযোগী, আরসা’র প্রধান অর্থ সমন্বয়ক আবু তৈয়ব প্রকাশ সোনা মিয়া প্রকাশ সোনালী ও আরসা’র সক্রিয় সদস্য, তথ্য-প্রযুক্তি এবং ইংরেজী ভাষায় দক্ষ ওসমান গনি র্যাব-১৫ এর হাতে আটক হয়।
সোমবার (২০-নভেম্বর) কক্সবাজারের র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) এর পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরী, সোমবার বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উক্ত তথ্য উপস্থাপন করেন।
র্যাবের মিডিয়া সেলের প্রধান আরো জানান, গত রোববার (১৯ নভেম্বর ২০২৩) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে, র্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার উখিয়া উপজেলার ১৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা হতে আরসা’র স্লীপার সেল ও ওলামা বডির অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার মৌলভী হামিদ হোসেন, অর্থ সমন্বয়ক আবু তৈয়ব এবং ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশন এলাকা হতে আরসা’র ইন্টেলিজেন্স সেলের কমান্ডার ওসমান গনি’কে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, অস্ত্র ও এ্যামুনিশনসহ গ্রেপ্তার করার কথা বর্ননা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব মিডিয়া সেল আরো জানান, মৌলভী হামিদ হোসেন প্রকাশ ডাঃ হামিদ ২০১৭ সালে পরিবারসহ মিয়ানমারের বুচিডং হতে নাইক্ষ্যংছড়ির কচুবুনিয়া হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বালুখালী ক্যাম্প-৮ই, ব্লক-বি-৮০৬ এ বসবাস শুরু করে। বাংলাদেশে আসার পূর্বে মৌলভী হামিদ হোসেন ২০১৭ সালের প্রথমে মায়ানমারে আরসা’র ওলামা কাউন্সিল এর কমান্ডার মৌলভী তোহা এর মাধ্যমে আরসা’য় যোগদান করে। হামিদ গ্রাম্য ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত ছিলেন এবং তার বাবাও একজন গ্রাম্য ডাক্তার ছিলেন। ফলে স্থানীয় রোহিঙ্গাদের মাঝে তার পরিবারের ব্যাপক প্রভাব ছিল। এই সুবাদে সে দ্রুত আরসা’র নেতৃত্ব পর্যায়ে পৌছে যায়। প্রথমে সে ক্যাম্প-৮ই, ব্লক-বি এর জিম্মাদর পরে ক্যাম্প-৮ই এর প্রধান জিম্মাদারের দায়িত্ব পালন করে। শিক্ষিত এবং স্থানীয় রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রভাব থাকায় সে দ্রুত গ্রেফতারকৃত ওলামা বডির প্রধান সালমান মুরব্বীর অন্যতম সহযোগী হয়ে উঠেন এবং ওলামা বডির কার্যকরী সদস্য হোন। এই সময় সে আরসা’র নতুন সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথেও জড়িত ছিলেন। সালমান মুরব্বী গ্রেফতার হওয়ার পর হামিদ তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে ওলামা বডির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং তার নেতৃত্বে তিনি স্লীপার সেল গঠন করে। সে ক্যাম্পে অবস্থানরত যুবক বয়সী ও শিক্ষিত রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে আরসা’য় যোগদানের জন্য কর্মী সংগ্রহ, নির্বাচিত কর্মীদের বিভিন্ন তথ্যাদি যাচাই বাছাই শেষে যোগ্য ব্যক্তিদেরকে আরসা’য় অন্তর্ভুক্ত করে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য তাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রেরণ করতো। প্রশিক্ষণকালীন প্রশিক্ষণরত আরসা’র সদস্যদের পরিবারের ভরণপোষনের জন্য আবু তৈয়বের নিকট হতে উত্তোলিত অর্থ গ্রহণ করে হামিদ হোসেন ৪-৫ হাজার টাকা করে ক্যাম্প-১৬, ব্লক-সি/২ তে থাকা মৌলভী ওয়ারিছ, ক্যাম্প-২০ই তে অবস্থানকারী সাদ্দাম হোসেন ও আরব আলী’র মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণে গমনকারী আরসা’র নতুন সদস্যদের পরিবারের ভরণপোষনের জন্য সরবরাহ করতো। হামিদ এর ভাষ্যমতে এ পর্যন্ত সে ৬০ জন নতুন সদস্যকে প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করে বলে জানা যায়।
অন্যদিকে, গ্রেফতার আরসা’র প্রধান অর্থ সমন্বয়ক আবু তৈয়ব ২০১৬ সালে সন্ত্রাসী সংগঠন আরসায় যোগদান করে এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। প্রথমে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-০৭ ও পরবর্তীতে ক্যাম্প-৮ এ বসবাস শুরু করে। সে ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ০৫, ০৬, ০৭ এর কমান্ডার আব্দুল হালিমের মাধ্যমে আরসা’র সক্রিয় সদস্য হয়ে উঠে। গত ০২ অক্টোবর ২৩ তারিখে আরসা’র শীর্ষ সন্ত্রাসী ও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র একান্ত সহকারী এবং অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদ ওরফে নোমান চৌধুরী গ্রেফতারের পর গ্রেফতারকৃত তৈয়ব আরসা’র অর্থ সমন্বয়ক/সম্পাদক এর দায়িত্ব গ্রহণ করে। অর্থের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে তৈয়ব জানায় যে, বিভিন্ন দেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের/কমিউনিটির নিকট থেকে তারা মোটা অংকের অনুদান পেয়ে থাকে। তার মধ্যে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে আরসা’র জন্য প্রতিমাসে ০৮/১০ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে হুন্ডির মাধ্যমে তার নিকট প্রেরণ করে। বৈদেশিক অনুদানসহ আরসা’র নিজস্ব অর্থের উৎস হিসেবে ০৬ এবং ০৭নং ক্যাম্পের মাঝামাঝি স্থানে ৩৮টি দোকান স্থাপন করে ভাড়া দেন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন বাজারে অবস্থিত ২৫০/৩০০ টির মত দোকান হতে প্রতিমাসে চাঁদা বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন।
অপরদিকে, ওসমান গনি আরসা’র একজন সক্রিয় সদস্য। তথ্য-প্রযুক্তি এবং ইংরেজী ভাষায় তার বেশ দক্ষতা থাকায় সে আরসা’র তথ্য-প্রযুক্তির বিষয় দেখভাল করতো। এই সুযোগে সে ক্যাম্পে পরিচালিত এনজিও ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য আরসা’র শীর্ষ নেতাদের সরবরাহ করতো। পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতির খবরাখবর পৌছাতো। তাছাড়া বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি লক্ষ রাখতো। কোন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করলে গ্রুপের সদস্যরা গ্রুপে মেসেজ দিয়ে সকলকে সতর্ক করে দিতো।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শৈলকুপায় আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিবন্ধিত সব দল নিয়েই হবে: সিইসি
বিভাগ সংস্কারে আন্দোলনে ইবি শিক্ষার্থীরা
কালের কণ্ঠ বিতর্ক: যা বললেন শিবির সেক্রেটারি
জাতিগতভাবে আমরা একটু বেশি জাজমেন্টাল: তাহসান খান
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায়
আখাউড়ায় আসার পর কাপলিং ভাঙ্গলো উপকুল এক্সপ্রেসের
‘কালের কণ্ঠের ভূমিকা নিয়ে অবগত ছিলাম না’, ফাতেমার দুঃখ প্রকাশ
পুতুলকে দৌড়ের উপর রেখে ভারতকে কী বার্তা দিতে বললেন পিনাকী
সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বিএসএফের
বার্মিংহামের সিরাজাম মুনিরায় ১৪ জানুয়ারি ফুলতলী ছাহেব (রহ.) এর ঈসালে সাওয়াব মাহফিল
নিকলীতে ভুট্টা চাষে আশার স্বপ্ন বুনেছে কৃষক
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লক্ষ্মীপুরে লিফলেট বিতরণ
মেঘনা নদীতে দুই স্পিডবোটের সংঘর্ষে নিহত ৩, নিখোঁজ ১
হবিগঞ্জের সড়কে প্রাণ গেল তিন নারী পোশাক শ্রমিকের
বরিশালে জাতীয় মহাসড়কের ওপর নির্মিত পাক অপসারণে নগর ভবনকে সড়ক অধিদপ্তরের চিঠি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩
দুইবার আবেদন করেও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মাল্টার নাগরিকত্ব পায়নি তারিক সিদ্দিকের পরিবার
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিল শুরু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে