ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৯ আশ্বিন ১৪৩১
অবৈধ পথে ইউরোপে মরন যাত্রা -১৫

ফরিদপুর অঞ্চলের সদরপুরের আদম ব্যবসায়ীরা এখনও তেলে ঝোলে : ভুক্তভোগীদের কারোর কষ্টের শেষ নাই।

Daily Inqilab ইনকিলাব

১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০৮ পিএম | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০৮ পিএম

 

 

ফরিদপুর অঞ্চলের সদরপুরের আদম ব্যবসায়ীরা এখন তেলে ঝোলে আছে। অপর দিকে ভুক্তভোগীদের কারোর কষ্টের শেষ নাই। এক সময় ১৬/১৭ জনের একটি আদম ব্যাবসায়ী চক্র সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিজ গ্রামসহ বহু এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো এরা। খুব প্রভাব এবং অনেক টাকা পয়সার মালিক ছিলেন এরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, স্হানীয় নিজগ্রাম এলাকার দেলো ফকিরের বাড়ীর পাশের জনৈক ৩০ বছর বয়সী এক নারী ইনকিলাবের দুই প্রতিবেদক কে বললেন,আমাদের এলাকার মোঃ জসিমউদ্দীন ফকির, তার ভাই জহুরুল ফকির আরেক ভাই মোঃ জাফর ফকির, এদের বাবার মোঃ হামেদ ফকির। এরা এক সময় ইরাক এবং কূর্দিস্হান লোক পাঠাতো। সে সময় তাদের এতটাই দাপট ছিল তাদের কাছে কিনার যাওয়াটাই ছিল খুব কষ্টের। তাদের পয়সার গরমম এতটাই বেশী ছিল যে, পয়সার তাপে দুই এক গ্রামের মানুষ সিদ্ব হওয়ার অবস্হা ছিল। ঐ সময় দুই তিন গ্রাম এবং আশে পাশে দাপিয়ে বেড়ালেও কারোর বলার কিছু ছিল না। স্বাধীনতার পর থেকেই কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে গ্রাম দুটি দল পক্ষ আছে। এখানে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি বলে কোন কথা নয়।দাঙ্গা,- হাঙ্গামা ও দখলদারির দল পক্ষ এবং ক্ষমতার পেশী শক্তির মহড়া হতো প্রতিদিন। আদম ব্যবসায়ী কাম ইরাক প্রবাসী জসিম ফকির গংরা ছিল নিজগ্রাম পক্ষের সাবেক জনৈক মাতুব্বরের লোক। কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর মোঃ দেলো ফকিরের তারই ওয়ার্ডের নির্বাচিত বর্তমান মেম্বর মোঃ জসিমউদ্দীন ফকির। জসিমউদ্দীন ফকির গংরা এখন দেলো ফকির মেম্বর দল পক্ষের লোক। জসীমউদ্দিন ও তার আপন ছোট ভাই মোঃ জহুরুল ছিলেন, ইরাক ও কূর্দীস্হানম প্রবাসী। আরেক ছোট মোঃ জাফর খুবই নিরিহ।
বহু বছর আগে ছিলেন টাকার গরমে মহা নায়ক। মাঝখানে কিছু দিন দেনার দায় মানুষের চাপে একটু গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও বর্তমান আবারও সচল হয়েছে জসীমউদ্দিন মেম্বরের আদম ব্যবসার চাকা। নিজ গ্রামের ও কৃষ্ণপুর বাজার এলাকার পেশীশক্তি ক্ষমতার মালিক এমন একটি পক্ষের এবং সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ বিল্লাল ফকিরের বিপক্ষে শক্তির সাথে মিশে
এখন ও তারা সাবেক পেশায় সক্রিয় অবস্থায় আছেন। অভিযোগ আছে জসীমউদ্দিন এবং তার ভাই জহুরুল এক সময় বহুলোকের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে দেনার পাহাড় করছেন তারা। অপরদিকে, ইরাক এবং কূর্দিস্হান,সৌদি আরব যেতে লাখ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন যারা কাঙ্ক্ষিত দেশে না যেতে পারায় পথের ফকির হয়েছেন তারা। অপরদিকে, একটি পক্ষ বলছেন, জসীমউদ্দিন এবং জহুরুল বহু লোকও বিদেশে নিছেন আমরা জানি এবং দেখেছি। কিন্তু বিষয় টি এমন হয়েছে টাকা নিছেন ৩০ জনের কাছ থেকে বিদেশ পাঠিয়েছেন ৫ জন। বিদেশ যাওয়া এই পাঁচজনই পুনরায় লোক দিয়েছেন আরো ১০ জন।এমনি করে পাঁচজন প্রবাসীরই ২৫ জনও প্রত্যেকে ইরাক বা কূর্দিস্হানে যাওয়ার জন্য ৪/৫ লাখ করে টাকা জমা দিয়ে আদম ব্যবসায়ীদের টাকার পাহাড় গড়ে দিয়েছেন। বিদেশ যেতে না পাড়া লোকেরা এখনও টাকা ফেরত নিতে ফকির বাড়ি পথ কেউ ছাড়ছেন না। মেম্বর কাম সাবেক প্রবাসি এবং আদমবেপারি জসীমউদ্দিন কায়দা করে এখন তিনি এলাকার জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি। এলাকার সচেতন মহল ও নিরিহ শ্রেণীর মানুষ ইনকিলাব কে বললেন, কি আজব সমাজে বাস করি আমরা। কয়েক বছর আগে বিদেশ পাঠাতে না পারায়, টাকা ফেরত নিতে দল পক্ষ হয়ে যারা জসীমউদ্দিন ফকিরের ঘেরাও করছেন তারাই ভোট দিয়ে তাকে বিজয় মালা পড়িয়ে ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর বানিয়েছেন। টাকা ফেরত দেওয়া ও নেয়ার চাপও অনেক অনেকটা কমছে। কিন্ত কমেনি বিদেশ যাইতে ৪/৫ লাখ টাকা দেওয়া কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির পরিবারের কষ্ট। রবিবার (১০ ডিসেম্বর)
সরেজমিন প্রতিবেদন কালে জাতীয় " দৈনিক প্রথম কথার" স্হানীয় উপজেলা সংবাদদাতা" ফৌজিয়া আক্তার ইনকিলাব কে জানান, আমাদের এলাকার দীর্ঘদিন যাবৎ একটি আদম ব্যবসায়ী চক্র এলাকা দাপিয়ে বেরালেও কারো কোন মাথা ব্যাথা নাই। পাশা-পাশি কেউ কেউ তাদের শিকার হয়ে জীবন যৌবন জীবন সংসার সন্তান সব কিছু খোয়ায়ে এখন পাগল প্রায। অপরদিকে,তিনি ইনকিলাব আরো বলেন আমার আপন বড় বোনের জামাই মোঃ তৈয়ব আলী ফকির পিতাঃ মোঃ মোজাহার ফকিরকে এই জসীমউদ্দিন মেম্বর কাম আদম ব্যবসায়ী ইরাকে নেওয়ার জন্য বিগত ১০/১২ বছর আগে ৫ লাখ টাকা নেন। ইরাকেও নেন ঠিকই কিন্ত দুঃখের বিষয় হলো,ওখানে নেওয়ার পর দুলা ভাইর মাসের বেতনের টাকা কখনই সে নিজে বাহিরে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে পাঠাতে পারতো না।কারন ভাইকে যে শর্তে তিনি বিদেশ নিয়েছেন তার কোন শর্তই পালন করেন নি সে। খোঁজ খবর নিয়ে আমরা জানতে পারি তৈয়ব আলীর আকাম করিয়ে না দেওয়াটা ছিল তার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটা নিজস্ব কৌশল। যখন স্হানীয় ভাবে এবং দুলা ভাই আকামা করার জন্য চাপ দেন তখন ভুয়া একটি আকামার কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বাইরি বের হবার সাহস দিলেন তিনি।এরপর নির্ভয়ে বাহিরে বের হন। পরে ইরাকের পুলিশ অবৈধ প্রবাসী হওয়ায় আটক করে জেলে দেয়। তখন তার পরিবারটি বড় অসহায় হয়ে পড়েন। অপরদিকে,
স্হানীয় সংবাদকর্মী মোঃ হাওলাদার লতিফুল হক ইনকিলাবকে জানান,আপনার দুইজন সিনিয়র সাংবাদিক এক সাথে আসছেন দেখে খুবই ভাল লাগলো। আমরা স্হানীয় লোক তাই কোন কিছু বলতেও পারি না। লিখতেও পারি না। এক সময়ের নাম করা ও প্রভাবশালী আদম ব্যবসায়ী
এখন এলাকার জনপ্রতিনিধি। এটাই একটা কষ্টের বিষয়। যারা মানুষের জীবন যৌবন সংসার সন্তান সব কিছু শেষ করে দিচ্ছে, তাদের বুকে আগলিয়ে আমরাই ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি বানিয়েছি। আমাদের চরিত্র এখনও ঠিক হয়নি মানুষের দোষ দিয়ে লাভ কি?

আগামীকাল সোমবার ১৬ পর্বে পড়ুন কে এই জসীমউদ্দিন ফকির তার আসল পরিচয় কি? লুটছেন কত টাকা? ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করলেন কত জনকে? থাকবে জসীমউদ্দিনেরও বক্তব্য। হকার বলুন একটি ইনকিলাবের কপি রাখতে। ( চলবে)


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে অনুমতি পাচ্ছে না ইউক্রেন

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে অনুমতি পাচ্ছে না ইউক্রেন

গাজা-লেবাননে নিহত আরো ২২২

গাজা-লেবাননে নিহত আরো ২২২

আসাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত এরদোগান

আসাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত এরদোগান

জাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় রায়হানের দোষ স্বীকার

জাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় রায়হানের দোষ স্বীকার

গণহত্যাকারী কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না: আসাদুজ্জামান রিপন

গণহত্যাকারী কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না: আসাদুজ্জামান রিপন

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান

ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান

হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের

হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের

দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা

দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা

ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার

ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার

শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল

ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল

এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে

সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে

স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান

স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার

‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন

‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন

ঢাবিতে মতবিনিময় সভায় যৌন নিপীড়ক শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ঢাবিতে মতবিনিময় সভায় যৌন নিপীড়ক শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা হিজাব পরতে পারবেন

সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা হিজাব পরতে পারবেন