ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১
অবৈধ পথে ইউরোপ মরন যাত্রা - শেষ পর্ব

ইনকিলাবের ২৫ পর্ব সংবাদ প্রকাশে নড়েচড়ে বসেছেন সব ধরনের দালালরা

Daily Inqilab আনোয়ার জাহিদ

২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:১৫ পিএম | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:১৫ পিএম

 

 

 

অবেৈধ পথে ইউরোপ মরন যাত্রা। ধারাবাহিক ভাবে ১-২৫ পর্ব ইনকিলাবে প্রকাশ হওয়ার পর, অবৈধ পথে বিদেশ পাঠানো এমনসব আদম ব্যবসায়ী দালালরা নড়েচড়ে বসেছেন। সব ধরনের দালালরা প্রশাসনের ভয়ে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ যাদের বিদেশ পঠাতে পারেনি তাদেরপরিবারের সাথেও গোপনে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায়,
ফরিদপুরের সালথায় এক আদম ব্যবসায়ির খপ্পরে পড়ে চার যুবক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ খবর পাওয়ার ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে ঐ চার যুবক মালোশিয়াতে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এদেরকে স্হানীয় আদম ব্যবসায়ীর মোঃ আতিক মোল্যা (৫০)। সে উপজেলার ফুলবাড়িয়া মধ্যপাড়ার মৃত কুটি গেদা মোল্লার পুত্র। তার মাধ্যমে ৪/৫ জন যুবক মালয়েশিয়াতে জান,সেখানে গিয়ে কোন চাকুরী কাজ কোনটাই পাননি। এতে চরম মানবতার জীবন যাপন করেন ঐ যুবকরা।দেশে তাদের পরিবারের সদস্যরা ও বহু কষ্টের মধ্যে চলছেন।
এছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন যুবকের কাছ থেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে অনেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে ঐ চার যুবক মালোশিয়াতে এবং দেশে তাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। ইনকিলাবের সংবাদে সকল তথ্য উঠে আসে। এ সংবাদ পেয়ে আতিক মোল্যা ভয়ে পাগল হয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলনও করেন। এবং যাদের বিদেশে পাঠিয়েছেন এবং কাজ পায়নি। পাশাপাশি যাদের কাছ থেকে টাকা নিছেন কিন্তু বিদেশ পাঠাতেই পারেননি। সকলের সাথে সে যোগাযোগ করে ক্ষমা ভিক্ষা চাচ্ছেন এবং সকলের সংসার চালানোর অঙ্গিকার করে প্রবাশে থাকা সকলের চাকরি ও ফিরিয়ে দিবেন মর্মে বাড়ী বাড়ী গিয়ে বার্তা দিচ্ছেন বলে সালথার সাংবাদিক বিধান মন্ডল নিশ্চিত করছেন। উল্লেখিতম বিষয়ে সালথা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবার।
ভুক্তভুগী ঐ চার যুবকের পরিবারের সাথে কথা বললে তারা ইনকিলাব কে জানান, আপনাদের পত্রিকায় সংবাদ লেখায় এখন পাগল হয়ে গেছে। এখন আপোষ করতে চায়। থানার ওসিও মিটিয়ে দেওয়ার দায়ীত্ব নিছেন। জানাযায়,নগরকান্দা উপজেলার মধ্যে ভুক্তভোগী সকলেরই বাড়ীঘর। উল্লেখ্য, ফুলবাড়িয়া এলাকার ফেলু মোল্যার পুত্র আলমগীর মোল্যার কাছ থেকে কনস্ট্রাকশনে ভাল বেতনে কাজের কথা বলে প্রায় ৫লাখ টাকা নেয়। এরপর ৩/৪ মাস পর সাপ্লাই ভিসা দিয়ে মালোশিয়া পাঠায়। আতিক মোল্যার চাহিদামত ঘটি বাটি সব বিক্রি করে এবং চরা সুদে বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা যোগাড় করে দেয়। ৪মাস ধরে বিদেশ গেলেও কোন টাকা পাঠাতে পারছে না আলমগীর, প্রায় প্রতিদিন পাওনাদারেরা বাড়িতে হাজির হয়। চার মেয়ে নিয়ে আলমমগীরের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মানবেতর জীবনযাপন করছে। অপরদিকে কাজ না পেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে কোন রকমে মালেশিয়াতে আদম ব্যবসায়ী আতিকের দিকে তাকিয়ে আছে আলমগীর।

স্থানীয় অপর এক যুবক সোনা মিয়ার কাছ থেকে ৫লাখ টাকা নিয়ে ১বছর ঘুরিয়ে মালোশিয়াতে পাঠায় আতিক। এনজিও থেকে লোন ও সুদে টাকা জোগাড় করে সে বিদেশের স্বপ্ন দেখে। বিদেশের মাটিতে ৬মাস থাকলেও কোন কাজ৷ জোটে নাই তার ভাগ্যে। দেনাদার রা বাড়িতে ভির করায সোনা মিয়ার স্ত্রী বাড়ি ছাড়া। ঐদিকে সোনা মিয়া ৬মাস যাবত কোন কাজ না পেয়ে অন্য প্রাবসিদের কাছ থেকে ধার দেনা করে চলছে। আতিক কে কিছু বললেই বলে সামনে মাস থেকে কাজে দিবে।
জীবনে অনেক বছর প্রবাসে কাটানো হেমায়েতকে মালোশিয়ার বিখ্যাত প্যাটোনাস কোম্পানিতে কাজ দেওয়ার কথা বলে ৫লাখ টাকা নিয়ে ৫/৬ মাস ঘুরিয়ে প্রবাসে পাঠায় আতিক মোল্যা। ভাগ্য বদলের আশায় প্রবাসে পাড়ি জমানো এই যুবক ৫মাস যাবত বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। সাপ্লাই ভিসা দেওয়ায় কোন কাজ নাই তার। মাঝে মধ্যে কোন কাজ করলেও তার বেতন চাইতে পারেন না তিনি। দেশে গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী ও কন্যা সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন পার করছে। ভাল কাজ অথবা দেশে ফেরত আসতে চান হেমায়েত। সামিউল নামের অপর এক যুবকের কাছ থেকে কোম্পানির ভিসা দেওয়ার কথা থাকলেও তাকেও সাপ্লাই ভিসা দেওয়া হয়। বর্তমানে সামিউল ও তার পরিবার কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
এছাড়াও স্থানীয় মোমরেজ শেখ, বজলু সর্দার, ইয়াছিন, সজিবের মত আরও কিছু নিরিহ যুবকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের প্রবাসে পাঠাতে পারছেন না আতিক মোল্যা। আবার যারা বিদেশ আছে তাদেরও ভাল কাজ নাই। স্থানীভাবে আতিক মোল্যা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার কোন কাজের বিরোধিতা করে না। কেউ কিছু বললে তাকে মামলা হামলার হুমকি দিচ্ছে, আবার অনেক মেরে ফেলার হৃমকি দেওয়ার কারনে চুপ করা বন্ধ করেছে।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত আদম ব্যবসায়ী আতিক মোল্যা বলেন, আমার মাধ্যমে তারা বিদেশে যায়, কোম্পানি তাদের পাসপোর্ট রেখে ফটোকপি দিয়েছে। কাজ না থাকায় কোম্পানি তাদের বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াচ্ছে। কোন প্রবাসীর পরিবারের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। আমি আরও তাদের পরিবারকে চাল ডাল কিনে দিচ্ছি। আমিও এখন নিরুপায়। অপরদিকে ইনকিলাবের ধারাবাহিক ২৫ পর্বে প্রকাশের মধ্যে দিয়ে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ জানতে পারলো আদম কি পাচারকারী কারা? তাদের আচার শ্রেণী এবং প্রকারভেদ কি? পাশাপাশি আদম পাচারকারীদের খুঁজতে বেরিয়ে আসছে ১২/১৩ হাত কাপড়ের আড়ালে বহু বির্তকিত মুখোশধারী নারী পাচারকারী চক্রের অসাধু সদস্যদের নাম। এরা পুরুষ আদম ব্যবসায়ীদের চেয়েও বহুগুন ভয়ংকর। একজন পুরুষ আদম ব্যবসায়ী লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়ে পুরুষকে অর্থনৈতিকভাবে শেষ করে পথের ফকির করে দেয়। এবং একজন মুখোশধারী নারী পাচারকারী একজন নারী হয়ে আরেক নারীকে টাকার বিনিময় বহু অর্থের লোভ দেখিয়ে আজীবনের জন্য বিক্রি করে দেয়। আবার আসবো মধ্যাঞ্চলীয় কোন সামাজিক সমস্যার সংবাদ নিয়ে। শেষ পর্ব। সমাপ্ত।

 


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নিউইয়র্কে বৈঠকে বসছেন তৌহিদ-জয়শঙ্কর

নিউইয়র্কে বৈঠকে বসছেন তৌহিদ-জয়শঙ্কর

ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই আউট মুশফিক

ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই আউট মুশফিক

ঝাড়খন্ডে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমিত শাহের

ঝাড়খন্ডে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমিত শাহের

মুমিনুলকেও হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ

মুমিনুলকেও হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ

রাবির মাদার বখ্শ হলের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হলো দেশীয় অস্ত্র

রাবির মাদার বখ্শ হলের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হলো দেশীয় অস্ত্র

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর

ঢাবির হত্যার ঘটনায় প্রভোস্টকে অব্যাহতি

ঢাবির হত্যার ঘটনায় প্রভোস্টকে অব্যাহতি

আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেক্সিকোতে মাদক কারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সপ্তাহে নিহত ৫৩

মেক্সিকোতে মাদক কারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সপ্তাহে নিহত ৫৩

বিদ্যুৎ সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামে থাকে না

বিদ্যুৎ সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামে থাকে না

দুর্গাপূজায় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত

দুর্গাপূজায় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত

জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও

জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও

খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার

খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার

জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা