ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন : জনআস্থায় শীর্ষে মেয়র টিটু তবে শেষ হাসি কার?
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:১৪ পিএম | আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:০৩ পিএম
দ্বিতীয়বারের মতো বিএনপিহীন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৯ মার্চ। তফসিল মোতাবেক এগিয়ে এসেছে নির্বাচনের দিনক্ষণ। গতবার সিটি করপোরেশনের প্রথম ভোটে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র হয়েছিলেন বিলুপ্ত ময়মনসিংহ পৌরসভার শেষ মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু। কিন্তু এবার ভোট যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হচ্ছে জনআস্থায় শীর্ষে থাকা নগর ভবনের প্রথম এ নগর সেবককে। মেয়র টিটু নিজেও চান প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও উৎসবমুখর ভোট। স্ট্রাইকার হিসেবে মাঠে খেলেই জনতার রায়ে বিজয়মাল্য পড়তে চান। এক্ষেত্রে অবশ্য প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজের দলেরই বর্তমান ও সাবেক ৪ নেতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে। যদিও ভোটের অভিজ্ঞতায় 'পাকা জহুরি' টিটুর তুলনায় তারা একেবারেই নতুন। তবে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে বিজয়ের ফসল ঘরে তুলতে স্বপ্ন বুনছেন তাঁরাও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ৫ বছর করোনা, বৈশ্বিক যুদ্ধসহ নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার স্বার্থক রূপান্তরে অবিরাম প্রয়াস, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি, দলমত নির্বিশেষে গ্রহণযোগ্যতা, সিটি আঁকড়ে সব সময় নাগরিকদের পাশে থাকার প্রবণতা, ভোটারদের সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়ার মানসিকতা, কর্মীবান্ধব রাজনীতিক হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বিপুল জনপ্রিয়তা ও দলের ভোটের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে ভোট টানার সক্ষমতাসহ নানা কারণে ভোটের মাঠে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.ইকরামুল হক টিটু। এসব বিবেচনায় তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।
বিপরীতে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এহতেশামূল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম ফেরদৌস জিলু এবং সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ফারামার্জ আল নূর রাজীব সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র হিসেবে অভিষিক্ত হতে চান। প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তাঁরা দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ের মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইকরামুল হক টিটুর ওপরেই আস্থা রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সিদ্ধান্তে এবার উন্মুক্ত লড়াই গতবারের মনোনয়ন বঞ্চিতদের জন্য বড় সুযোগ। যদিও ভোটের লড়াইয়ে উত্তীর্ণ হতে তাদের প্রধান ভরসা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের নতুন এমপি মোহিত উর রহমান শান্তকে। অবশ্য তাদের বেশিরভাগই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। পাশাপাশি নিজ নিজ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিতে তাঁরা পুরোদমে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার, চারজন প্রার্থীই এক পক্ষের হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কে টিটুর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন এ নিয়েও চলছে জল্পনা।
অর্থাৎ সদরের এমপি শান্তর সমর্থন কার নির্বাচনী রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিবে অথবা ভোটে হেভিওয়েট টিটুর সঙ্গে খেলতে শেষ পর্যন্ত সদরের এমপি কাকে বেছে নেন, কার মন তিনি রক্ষা করেন এসব নিয়েও চলছে নানামুখী আলোচনা। তবে বিভিন্ন সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় 'নগর পিতা' নয় 'নগর সেবক' আওয়াজ তুলেছেন এমপি শান্ত। প্রতীকবিহীন নির্বাচনকেই নিজেদের জন্য প্লাস পয়েন্ট ধরে ভোটের মাঠে এগোতে চান তাঁর সমর্থিতরা। তবে টিটুর অনুসারীরা বিষয়টিকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে নারাজ। এমনকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় স্পষ্ট বিভক্তি মেয়র টিটুর টানা দ্বিতীয়বারের বিজয়ে বাঁধার দেয়াল তৈরি করতে পারবে না বলেও মনে করেন তাঁরা। এমনকি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা তাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদী ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ইকরামুল হক টিটুও। তিনি বলেন, 'উন্নয়নের ধারাবাহিকতার পক্ষে নাগরিকরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় আমি উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে নগরীর সম্মানিত ভোটাররা আমাকে পুনরায় সুযোগ দেবেন।'
মেয়র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকা ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে নগরীর জলাবদ্ধতা ও যানজট সমস্যার সমাধানে গুরুত্ব দেবো। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকাকে কার্যকর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নযোগ্য কর্মসূচির মাধ্যমে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করে স্বপ্নের শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালাবো।'
বিভিন্ন গণমাধ্যমে মেয়র প্রার্থী শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু বলেছেন, গত সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয়ে আমার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দলের দু:সময়ে নেতৃত্ব দিয়েছি। ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশাবাদী।'
অন্য প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম ফেরদৌস জিলু বলেন, নগরীতে নাগরিক সমস্যার শেষ নেই। আমি ছোটবেলা থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলাম। সংসদ নির্বাচনে আমি যেহেতু নৌকার পক্ষে কাজ করেছি। এজন্য নেতাকর্মীসহ জনগণ আমাকেই বেছে নেবেন বলে আশাবাদী।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ : স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
কলাপাড়ায় যাত্রীবাহী বাস-অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষ, শিশু সহ আহত-৫
গাজীপুরে কলোনিতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৪ ইউনিট
মেরিনারের দায়িত্ব নিলেন সামির কাদের চৌধুরী
বাফুফের সভাপতি পদে এবার দৃশ্যপটে তাবিথ
সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা হিজাব পরতে পারবেন
ঢাবিতে মতবিনিময় সভায় যৌন নিপীড়ক শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার
স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান
সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে
নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়
ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল
শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?
ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার
দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা
হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের
ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান
ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়