বুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু, বাকপ্রতিবন্ধী বাবার স্বপ্নের সমাধি হলো বেইলি রোডে
০২ মার্চ ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:০২ এএম
‘আমার সন্তানের মতই প্রিয় ছিল নাহিয়ান আমিন। ওর আরেক নাম হারিস। জিলা স্কুলে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়েছি। অসম্ভব মেধাবী ছিল। ওকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
কান্নায় ভেঙে পড়ে কথাগুলো বলছিলেন বরিশাল জিলা স্কুলের সাবেক শিক্ষক মিজানুর রহমান। নাহিয়ান আমিন হারিসের বাবা বাকপ্রতিবন্ধী রিয়াজুল আমিন বাবুর কান্নায় শাব্দিক ভাষা বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু তার বুকভাঙা অশ্রুর স্রোত আপ্লুত করে ফেলে সবাইকে।
রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৬ জনের মধ্যে একজন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পলিটেকনিক রোডের বাসিন্দা নাহিয়ান আমিন হারিস। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ছিলেন। অন্য সময়ে নাহিয়ান বাড়িতে এলে বন্ধুরা আনন্দে দেখা করতে আসতেন। আজ সেই বাড়িতে শোকের মাতম।
শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে নাহিয়ান নিথর দেহে লাশবাহী গাড়িতে করে শেষ দেখা দিতে আসেন মা-বাবা, স্বজনদের সঙ্গে। নাহিয়ানের মৃত্যুতে শুধু পরিবার বা স্বজন নয় পুরো এলাকাবাসী কাঁদছে। তার মরদেহ প্রথমে বরিশাল জিলা স্কুলের পেছনে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে রাখা হয়। এ সময় জিলা স্কুলের শিক্ষক এবং সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা শেষবারের মতো নাহিয়ানের মুখ দেখেন। বাদ আসর বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট জামে মসজিদের সামনে নাহিয়ান আমিন হারিসের জানাজা শেষে নগরীর মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত নাহিয়ান আমিন হারিসের ফুফাতো ভাই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. নাভিদ নূর।
তিনি বলেন, বেইলি রোডে অনেক নামকরা রেস্টুরেন্ট আছে। মানুষ সেখানে খেতে যায়, অনুষ্ঠান করে। অথচ ওখানে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। বাসার বাইরে যদি আমরা নিরাপদ না হই। এটা তো কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত।
ডা. নাভিদ নূর বলেন, নাহিয়ানকে হারানোর মধ্য দিয়ে আমাদের একটা ফ্যামিলির ক্ষতি হলো। দেশের ক্ষতি হলো। বরিশাল জেলার ক্ষতি হলো। ও ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাংলাদেশে অনেক বড় সার্ভিস দিতে পারতো।
বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে নাহিয়ানের মৃত্যুর খবর পান জানিয়ে তিনি বলেন, ওর শরীরে বার্ন নেই। আমি যেটা শুনেছি, তাতে ধারণা করছি কার্বন মনোঅক্সাইডের কারণে সে মারা গেছে। এটা অসাবধানতা। যদি ভালো একটা ফায়ার এক্সিট থাকতো, তাহলে ছেলেটা হয়তো বেঁচে যেত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন নাহিয়ান। ২০২২ সালে ঢাকার নটরডেম থেকে এইচএসসি পাস করার পর বুয়েটে ভর্তি হন। তিনি বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
হুতি আক্রমণের বার্ষিকীতে সংহতির আহ্বান আমিরাত নেতাদের
৯ বছর পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে পেলেন ঝুলন্ত অবস্থায়
চীনে জন্মহার হ্রাস, অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা
বিএনপিকে ধুয়ে দিলেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল
যুক্তরাজ্য-ইউক্রেন ১০০ বছরের ‘যুগান্তকারী’ চুক্তি
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে বাংলাদেশিরাও
কেন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি ফারিয়া?
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ৩ বন্ধুর মৃত্যু
তাপমাত্রা কমে বাড়বে শীত
এলএন-এর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, কলম্বিয়ায় শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি হলেন ইউসুফ হোসেন
ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা
অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল
গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ
নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮
পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি
মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’
বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন