গেঞ্জির পেছনে নাম দেখে সনাক্ত হয় দগ্ধ কামালের লাশ
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১০ এএম
লাশটা তখন পুড়ে সেদ্ধ অবস্থায় ছিলো। শরীরটা কালো হয়ে গেছিলো। নষ্ট হয়ে গেছিলো মুখটাও। চেহারা দেখে চেনার কোনো উপায় ছিলো না। কিন্তু তাঁর পরনের গেঞ্জির পেছনে লেখা ছিলো কামাল নামটি। পরনের সেই গেঞ্জি, প্যান্ট, মোবাইল দেখে সনাক্ত হয় এটি সেই কামালের লাশ। সঙ্গে থাকা মুঠোফোন থেকে সিম বের করে কেউ একজন পরিবারকে কল করে জানান তার মৃত্যুর খবর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতে ৫ আগস্ট বাসা থেকে বের হয় কামাল হোসেন (২৬)। পরদিন সকালে তাঁর দগ্ধ লাশ পাওয়া যায় ঢাকার ধানমন্ডিতে।
নিহত কামাল হোসেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের খুলিয়ারচর গ্রামের কৃষক হাশিম উদ্দিনের ছেলে। ছয় ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন কামাল। তাঁর মায়ের নাম মজিদা খাতুন। দুই বছর আগে কামাল বিয়ে করেন নোয়াখালী জেলার শারমিন আক্তারকে। ঢাকার লালবাগ কবরস্থান এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন কামাল। সেখানে একটি হোটেলে রান্নার কাজ করতেন তিনি। আবার কখনো রিকশাও চালাতেন।
নিহত কামালের বড় ভাই লিটন মিয়া বলেন, ‘৬ আগস্ট সকালে স্থানীয় একজন কামালের মৃত্যুর খবর দেন। কামালের লাশ তখনও পড়ে আছে ধানমন্ডির রাস্তায়। লাশটা যখন পাই, তখন দেখি লাশটা পুড়ে সেদ্ধ হয়ে আছে। শরীরটা কালো হয়ে গেছে। মুখটা নষ্ট হয়ে গেছে। চেহারা দেখে চেনার কোনো উপায় নেই। কিন্তু তাঁর পরনের গেঞ্জির পেছনে নাম লেখা ছিল। তার গেঞ্জি, প্যান্ট, মোবাইল দেখে আমরা চিনতে পারি।’
লিটন মিয়া বলেন, তাঁরা শুধু লাশ পেয়েছেন। কামাল কীভাবে মারা গেছেন, কেউ কিছু বলতে পারেননি। সেখান থেকে লাশ সরাসরি বাড়িতে নিয়ে আসেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কামাল অভাবের কারণে পড়ালেখা করতে পারেননি। সংসারের হাল ধরতে ১৫ বছর ধরে ঢাকায় হোটেলে রান্নার কাজ করছিলেন। নিজে পড়ালেখা না করতে পারলেও কাধে তুলে নিয়েছিলেন ছোট ভাই হাদিস মিয়া ও ছোট বোন আলিফা খাতুনের লেখা পড়ার খরচ। ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাঁচামাটিয়া নদীর পাশে খুলিয়ারচর জামে মসজিদের পাশে কামালের লাশ দাফন করা হয়।
পিতা হাশিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার পোলার শরীরে কোনো আঘাত ছিল না। শুধু শরীর সেদ্ধ হয়ে গেছিল।’ছেলের কথা মনে করে ঢুকরে কেঁদে ওঠেন হাশিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ছেলে আমারে কইতো, “কাজকাম ছাইড়্যা ঠিকমতো নামাজ পড়বা, মসজিদে যাইবা, চিল্লায় যাইবা। ছোট ভাই-বোনদের মাদ্রাসার পড়ার খরচ ও সংসারের সব খরচ আমি দিমু।” কিন্তু আমার সেই ছেলেই চইল্যা গেল। ছেলের কথা মনে অইলে জীবনডা বাইরইয়্যা যায়।’ সরকারের কাছে তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান।
কামালকে হারিয়ে পাগল প্রায় মা মজিদা খাতুন। তিনি আহাজারি করে বলেন, এই পোলা আমার কইলজার ধন আছিল। সংসারটা আগলে রাখছিল পোলাডা আমার। অহন কই গেছে ওই পোলা।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পদত্যাগপত্রে টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন
টিউলিপের পদত্যাগ ইস্যুতে প্রেস উইংয়ের বিবৃতি
আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে কায়রো, ঢাকার অবস্থান ৬ নম্বরে
মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে লাশ হলো "মা"!
মীরসরাইয়ে মুন্না খুনের ঘটনায়, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার
আজ সারদায় ৪৮০ এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৩ জন ফিলিস্তিনি, মানবিক সংকট চরমে
ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার
সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন রিসোর্ট পুড়ে ছাই
শুল্ক রেলস্টেশন দিয়ে ভারত থেকে ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন চাল আমদানি
শুল্ক–কর বৃদ্ধির ফলে দেশের তামাক খাতে কী প্রভাব পড়বে
ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য
পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
কারাগারে এস কে সুর
‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’
ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে
অভি খালাস! তাহলে খুনী কে?
জল্পনা উড়াল চীনা সংস্থা টিকটক কিনছেন না মাস্ক