নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের উপর জুলুম-নির্যাতন করে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে গিয়ে পড়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বড়ভাই সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছত্রছায়ায় থেকে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে সন্ত্রাসের গডফাদারে পরিণত হয়েছিলেন।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে নির্ঝর কনভেনশন হলে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসুরহাট বাজার শাখা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, নোয়াখালী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন এবং প্রধান আলোচক ছিলেন, সোনাইমুড়ী হামিদিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সাইফুল্লাহ মুনির।

বসুরহাট বাজার শাখা জামায়াতের সভাপতি মো: গিয়াস উদ্দিন দিদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন, বসুরহাট পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসাইন।

বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রত্যক্ষ আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তার ভাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তাকে চাঁদা না দিয়ে কেউ বাড়িঘর, দোকানপাট নির্মাণ করতে পারতেন না।

এছাড়া কাদের মির্জার প্রত্যক্ষ নির্দেশে ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর পুলিশ ও ছাত্রলীগ গুলি করে সাত শিবিরকর্মীকে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে। তাদের নেতৃত্বে শিবির অধ্যুষিত কোম্পানীগঞ্জ মডেল স্কুল (কেজি) জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের অসংখ্য ভাইকে জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। আজ কাদের মির্জা পরিবারসহ আস্তাকুঁড়ে গিয়ে পড়েছে।

জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন বলেন, প্রতিশোধের রাজনীতি জামায়াত করে না। আমাদের ওপর জুলুমের বিচার আল্লাহর তরফ থেকে হবে। আমরা জনগণের কল্যাণে দ্বীন প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করি। সবাই মিলে খেয়াল রাখবেন। আমরা আমাদের লক্ষ্য থেকে যেন বিচ্যুত না হই।

বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসাইন বলেন, কাদের মির্জার অত্যাচারের মধ্যেও জনগণের পাশে ছিলাম আছি থাকবো। তবে বসুরহাটের ব্যবসায়ীরা আগে যেভাবে চাঁদাবাজি সন্ত্রাসের স্বীকার হয়েছেন,আর যাতে আগের সেই জুলুম ফিরে না আসে আমরা সেদিকে খেয়াল রাখবো।

সমাবেশে বসুরহাট পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. হেলাল উদ্দিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো. ইয়াকুব হোসেন, জামায়াতের বসুরহাট বাজার শাখা সেক্রেটারি খাজা গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ, বায়তুলমাল সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেনসহ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে দিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও জবরদখল করেছিলেন। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালানোর পর সপরিবারে পালিয়েছেন ওবায়দুল কাদের ও আবদুল কাদের মির্জা।