অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয়ের চার দেশে ৬ বাড়ির অনুসন্ধানে দুদকে চিঠি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ এএম | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ এএম

পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) প্রলয় কুমার জোয়ারদারের চার দেশে ছয়টি বাড়ি থাকা নিয়ে অভিযোগের অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আবেদনকারী আইনজীবী মো. জিয়া উদ্দিন নিজেই গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। দুদক এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আবেদনে ২০ সেপ্টেম্বর দৈনিক দেশ রুপান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত ‘চার দেশের ৬ শহরে বাড়ি করেছেন অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয় কুমার’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি যুক্ত করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) প্রলয় কুমার জোয়ারদার। তার অপকর্মের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাননি কেউ।
প্রলয় কুমার জোয়ারদার নেত্রকোণার বারহাট্টা ঝিতন গ্রামের ধলাই নদী দখল করে ফিশারি করেছেন। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪-৫০০ জনকে বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দিয়ে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন বলেও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এলাকায় তৈরি করেছেন আধিপত্যের সাম্রাজ্য। তবে প্রলয় কুমার জোয়ারদারের বাবার দাবি, বিনা টাকায় চাকরি দিয়েছেন তার ছেলে। প্রলয় কুমার জোয়ারদার উপজেলার বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের ঝিতন গ্রামের উপেন্দ্র জোয়ারদারের ছেলে।
প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এলাকায় পরিপাটি একটা বাড়ি ও সামান্য সম্পদ করলেও ঢাকার উত্তরায় সাততলা বাড়িসহ একাধিক ফ্ল্যাটও রয়েছে প্রলয় কুমারের। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে বাড়ি এবং সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। এর মধ্যে ভারতের কলকাতা, চেন্নাই ও দিল্লিতে বাড়ি করেছেন।
তবে তার একজন নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে জানা গেছে, তিনি দিল্লিতে ডেভেলপার ব্যবসাও করেছেন। বাড়ি করেছেন সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে ও আমেরিকায়। বিশেষ করে যেখানেই স্ত্রীর চিকিৎসা করেছেন, সেখানেই তিনি বাড়ি করেছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে ছাত্র জনতাকে দমন করার অন্যতম পরিকল্পনাকারীও ছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রলয় কুমার জোয়ারদার প্রথমে এনএসআইয়ে চাকরি করেন। পরে চাকরি বিধি লঙ্ঘন করার কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তথ্য গোপন করে ২৪তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে যোগদান করেন।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন।
তাকে প্রধানমন্ত্রীর প্রোটোকল অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রটোকল অফিসার হিসেবে যোগদান করার পর থেকে শুরু হয় তার ক্ষমতার আধিপত্য, চাকরি বাণিজ্য।
সেই সুবাদে প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিজিবি, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, এনএসআই, ডিসি অফিস, জজ কোর্ট এবং স্থানীয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি বাণিজ্য শুরু করেন। কয়েক বছরে তিনি কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেন। এসব চাকরি বাণিজ্য বিষয়টি হ্যান্ডেল করতেন তার ছোট ভাই শ্যামল জোয়ারদার।
প্রধানমন্ত্রী প্রটোকল অফিসার হওয়ার পর তিনি তার চাচা শ্বশুর স্বপন ভট্টাচার্যকে সংসদ নির্বাচনে যশোর-৫ মনিরামপুর আসন থেকে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত করেন। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হলে স্বপন ভট্টাচার্যকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন। মন্ত্রী হওয়ার পেছনেও সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি (প্রলয় কুমার) যশোর জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ও নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনে প্রলয় কুমারের বদলির আবেদন করেন। তারপরও প্রলয় কুমার জোয়ারদারকে তারা সরাতে পারেননি। এমনকি প্রলয় কুমার নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি হন। তবুও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে যোগ না দিয়ে যশোর জেলা পুলিশ সুপার থেকেই নির্বাচন শেষ করেন। এরপর পদোন্নতি পাওয়া পদে যোগ দেন।
এদিকে ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর প্রলয় কুমার জোয়ারদারের স্ত্রী ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে ৮-৯ হাজার লোকের ভুড়িভোজের আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় জেলার সংসদ সদস্যসহ দেশের বিভিন্ন প্রভাবশালী মন্ত্রী ও সরকারি আমলা শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে আসেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশ কর্মকর্তা অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তারও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রলয় কুমার জোরদারের সাথে তার পরিবারের কারো কোন যোগাযোগ নেই বলে জানান তার বাবা।
প্রলয় কুমার জোরদার এর বাবা উপেন্দ্র জোয়ারদার বলেন, আমার ছেলে বারহাট্টাসহ জেলায় প্রায় ৪-৫ শত মানুষের চাকরি দিয়েছে বিনা টাকায়। এজন্য মানুষ তাকে অনেক ভালোবাসে। পুত্রবধূ মারা যাওয়ার পর শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে ৮-৯ হাজার লোক এসেছে। এটা সব মানুষের ভালোবাসার প্রতিফলন। তবে আন্দোলনের পর থেকে প্রলয়ের সঙ্গে আমাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

আপন চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৪ বছরের বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ

ফিলিস্তিনের নারী ও শিশুদের আর্তনাদ দেখে কোন মানুষ তা সহ্য করতে পারছেনা- মাহফিলে বক্তারা

অভয়নগরে সিগনাল পিলারে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল চলক নিহত-১জন আহত

কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম ঢাকা’র ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

একটি শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে- আমীর খসরু

নতুন সঙ্কটে রাজনীতি!

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের হাত থেকে আমাদের দলকে বাঁচাতে হবে- ব্যারিস্টার নওশাদ জমির

পটুয়াখালীতে শহীদ কন্যা ধর্ষনের আসামীদের দ্রুত বিচার করার দাবিতে জেলা বিএনপির মানববন্ধন

ইবিতে প্রক্টরিয়াল বডির উদ্যোগে ইফতার আয়োজন

নীল পাখির বাসা বদল, নিলামে উঠল টুইটারের লোগো

পিজি হাসপাতালের নাম পরিবর্তন হলেও লীগের দোসররা এখনও বহাল তবিয়তে"- ডা. আউয়াল

আওয়ামী লীগকে পূর্নবাসন করার কোন সুযোগ নেই : আমিনুল হক

গফরগাঁওয়ে চৈত্র মাসে শীতের আমেজ ঃ ঈদ বাজারে স্বস্তি

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরামের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

গফরগাঁওয়ে আস্কর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

আশুলিয়ায় দাওয়াত না পেয়ে যুবদলের ইফতার মাহফিলে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ

কটিয়াদীতে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত-১,আহত-১০

সাংবাদিক ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সম্মানে মনোহরগঞ্জ প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল

নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত অন্তত ৪৪