জমকালো আয়োজনে পালিত হচ্ছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসবঃ 'ফাতেমা রানীর তীর্থযাত্রা'
০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ পিএম | আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ পিএম
দীর্ঘ পাহাড়ি বঙ্কিম পথ তবু সবাই হেটে চলেছে, মনে খুব আশা নিয়ে। সকলের হাতে হাতে জ্বলছে মোমবাতি। সকলের বিশ্বাস মা তাদের জাগ্রত। মায়ের প্রতি অপার শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে সবাই সমস্বরে। মা মারিয়া তাদের পথ দেখাবে, জীবনের সকল প্রকার বাঁধা দূর হবে তার আশীর্বাদ পেলে সেই আশাতেই প্রার্থনা করে তার সাহায্য।
বলছি ক্যাথলিক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কথা। গতকাল (৩১ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার রাতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলাধীন নালিতাবাড়ী উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে খ্রিস্টান ধর্মযাজক সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্ম পল্লিতে 'ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে এই আলোক শোভাযাত্রা'র আয়োজন করা হয়। টানা দুই দিনব্যাপী জমজমাট এই আয়োজনের পরিসমাপ্তি ঘটবে আজ পহেলা নভেম্বর তথা শুক্রবার।
উৎসবটিতে দেশের সকল খ্রিস্ট দীক্ষা প্রাপ্ত সম্প্রদায়ই নয় বরং অনান্য সম্প্রদায়ের মানুষেরাও যোগ দিয়েছেন ইতোমধ্যেই। মাহাত্যপূর্ণ এই অনুষ্ঠানটি বারোমারি ধর্মপল্লিতে আয়োজন করা হয় প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে।
সাধারণত উৎসবটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় অক্টোবর মাসের শেষ দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুরে সকল ভক্তদের পুনর্মিলনের মাধ্যমে। পরবর্তীতে বিকেল ৪টা নাগাদ শুরু হয় খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠান। দিনের সকল আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি হলে দেখা যায় অভূতপূর্ব এক দৃশ্য।
ভক্তরা সবাই একত্রিত হয়ে রাত ৮টায় একসাথে করে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন,তাদের বিশ্বাস এই তীর্থযাত্রা তাদের জীবনের সকল পাপ থেকে মুক্তি দেবে তাই ধীরে ধীরে পাড়ি দেয় দীর্ঘ দুই কিলোমিটার অসমান পাহাড়ি পথ। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে যখন মা মারিয়ার মূর্তির সামনে আসে তখন সকলের চেহারায় দেখা যায় একরাশ স্বস্তির নিঃশ্বাস।
মা মারিয়ার ৪৮ ফুট উঁচু মূর্তির সম্মুখে দাঁড়িয়ে সবাই সমস্বরে পালন করে নানা রকম কৃষ্টি-সংস্কৃতি। তারা ফানাহ-ফিল্লাহ হয়ে যায় প্রিয় মায়ের চরনে। ধর্মীয় নৃত্যগীত,গীতিআলেখ্য, নিরাময় এবং নিশি জাগরণ পালন করে মায়ের সন্তুষ্টি প্রার্থনা করে। যেন ভালো থাকে পৃথিবীর সকল প্রাণী, ভালো থাকে তাদের পরিবার।
প্রতি বছর এই সময়কে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয় নানা উৎসবের। দুই দিনব্যাপী জমকালো এই আয়োজনে সেজে ওঠে বৃহত্তর ময়মনসিংহ। এখানকার খ্রিস্টভক্তদের মধ্যে বয়ে যায় উৎসবের হাওয়া ও আনন্দের জোয়ার। প্রতি বছর একটি নতুন প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয় উৎসবটি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রার্থনার অনুপ্রেরণা ফাতেমা রানি মা-মারিয়া; যে পরিবার একত্রে প্রার্থনা করে, সে পরিবার একত্রে বসবাস করে’।
আয়োজনের প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হয় পুনর্মিলন সংস্কার, খ্রিস্টযাগ, জপমালার প্রার্থনা, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রামান্তের আরাধনা ও নিরাময় অনুষ্ঠান। এছাড়াও থাকে ব্যক্তিগত প্রার্থনা এবং নিশি জাগরণ। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে পালিত হয় জীবন্ত ক্রুশের পথ, মহা খ্রিস্টযাগ এবং বিদায়ী শোভাযাত্রা।
উল্লেখ্য,শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলাধীন পোড়াগাঁও সীমান্ত এলাকায় বারোমারী ‘সাধু লিও’-এর খ্রিস্টধর্মপল্লীটি পর্তুগালের ফাতেমা নগরের আদলে সাজানো হয়েছে। এখানে প্রতি বছরই মা মারিয়ার স্মরণে আয়োজন করা হয় অনন্য এই ধর্মীয় উৎসবটির। বাংলাদেশে বসবাসরত ক্যাথলিক খ্রিস্ট মতাদর্শের মানুষের কাছে 'ফাতেমা রাণীর তীর্থযাত্রা' নামক এই উৎসবটি ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আলবেনিয়ায় ভুয়া ভিসার নামে ২৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও
ধামরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম কবিরের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
ঢাকা মহানগর মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবক আহত
কুমিল্লা জজকোর্টের ৩ পিপি-এপিপিকে সংবর্ধনা
চুয়াডাঙ্গার রেলস্টেশন এলাকা থেকে ১৪টি অবৈধ স্বর্ণেরবার উদ্ধার, আটক ৩
জাহাজে ৭ খুনের ঘটনার দ্রুত সুরাহা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
‘ছাত্র-জনতা সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়েছে’
পঞ্চগড়ে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা অনুষ্ঠিত
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে মজবুত করতে হবে: পীর সাহেব চরমোনাই
‘ট্রানজিটের নামে দিল্লিকে দেয়া করিডর জনগণ মেনে নেয়নি’
বদলির ৩ মাস পরই পূর্বের কর্মস্থলে ফিরলেন শরীয়তপুরে সদর হাসপাতালের ক্যাশিয়ার বজলুর রশিদ
বগুড়ায় যথাযথ মর্যাদায় বড়দিন পালন
শ্রীপুরে ভুয়া মেজর আটক
সাবেক দুদক কমিশনার জহরুল হকের পাসপোর্ট বাতিল, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রশংসা করলেন রাহাত, জানালেন নিজ অনুভূতি
রাতের আধারে অসহায় ব্যাক্তিদের বাড়ির দরজায় গিয়ে কম্বল দিলেন ইউএনও
আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো সব ধর্মের মাঝে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভাঙ্গায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ আহত- ১০
কবি জসীমউদ্দিনের মেজ ছেলে ড. জামাল আনোয়ার আর নেই