ঢাকা   বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট: নাব্যতা সঙ্কটে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত

Daily Inqilab রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা

২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম

দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে তীব্র নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নাব্যতা সঙ্কটের কারণে প্রায় এক মাস যাবৎ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরি ঘাট। একই অবস্থা পাটুরিয়ার ৩ নম্বর ঘাটের। ফেরি চালকেরা বলছেন, শুধু নাব্যতা সঙ্কট নয় পানি কমে যাওয়ায় সরু হয়েছে চ্যানেল, পদ্মার কোথাও নেই মার্কিন। যে কারণে ঝুঁকি নিয়েই চালাতে হচ্ছে ফেরি। আর ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, নৌপথ সচল রাখার জন্য চলছে খনন কাজ।

 

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সুত্রে জানাযায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের যানবাহন পারাপার অব্যাহত রাখতে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি দু’টি সংস্থা একত্রে কাজ করে। ঘাটের পল্টুন মেরামত, ঘাট এলাকায় ভাঙ্গনরোধ, নাব্যতা সঙ্কটে খনন কাজ করে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। আর ফেরি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার ৭ টি ঘাটের মধ্যে ২ টি ঘাট পুরোপুরি সচল আছে। বাঁকী পাঁচটি ঘাটের মধ্যে ১ নম্বর, ২ নম্বর, ৫ নম্বর এবং ৬ নম্বর ঘাট ভাঙ্গণের কারণে কয়েক বছর যাবৎ বন্ধ। শুধু ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট দিয়ে পারাপার সচল রয়েছে। আর ৭ নম্বর ঘাটের কাছে ড্রেজিং চলায় বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে ঘাটটি।

 

রবিবার সরেজমিনে দেখাযায়, দৌলতদিয়া ঘাটের সবচেয়ে বড় ও ব্যস্ততম ফেরি ঘাটটি হলো ৭ নম্বর। এ ঘাট দিয়ে সব সময় বড় ফেরিগুলো লোডিং ও আনলোডিং করা হয়। পদ্মার পানি কমার ফলে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সঙ্কট। যে কারণে প্রায় এক মাস যাবৎ ঘাটের দুই পাশে চলছে খনন কাজ। দীর্ঘদিন খনন কাজ করেও ঘাটটি সচল করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অপর দিকে নদীর অপরপ্রান্তে পাটুরিয়ার ৩ নম্বর ঘাটেরও একই অবস্থা।

 

ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের মাস্টার মো. মাসুদ আকন্দ বলেন, এক মাস যাবৎ দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটে ফেরি ভেড়াতে পারি না। নদীতে চর জেগে উঠায় অন্তত দুই কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। এতে সময় লাগছে প্রায় দ্বিগুন। শুধু নাব্যতা সঙ্কট নয়, পানি কমে যাওয়ায় সরু হয়েছে চ্যানেল, পদ্মার কোথাও নেই মার্কিন। যে কারণে রাতের বেলায় নৌপথ স্পষ্ট দেখা যায় না। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা রয়েছে। এখনই কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ কুয়াশা মৌসুমে চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগে সমস্যা হবে।

 

দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে ঢাকার যাওয়া যাত্রী আলী হোসেন বলেন, এ নৌরুটে বর্ষায় ভাঙ্গণের ভোগান্তি, শীতে কুয়াশার ভোগান্তি আর শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা সঙ্কট। তার মানে সারা বছরই আমাদের ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২য় পদ্মা সেতু হলেই ভোগান্তি লাঘব সম্ভব। তাছাড়া ভোগান্তি কমবে না। তাই দ্রুত দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর দাবী জানাই।

 

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাহউদ্দিন নাব্য সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে খনন কাজ অব্যাহত আছে। বিআইডব্লিউটিএর দক্ষ প্রকৌশলীরা দেখভাল করছেন। নৌপথে মার্কিন বাতি দেওয়ার ব্যাপারে আজই বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। আপাতত ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট দিয়ে পারাপার করানো হচ্ছে। ৭ নম্বর ঘাটে ছোট ভেরি লোডিং আনলোডিং করা হচ্ছে। এই নৌরুটে বর্তমানে ১৬ টি ফেরি রয়েছে। যে কারণে ঘাটে তেমন ভোগান্তি নেই।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গফরগাঁওয়ের চরআলগী ইউনিয়নের কাজী মোঃ তোফাজ্জল হোসেনের ইন্তেকাল
র‍্যাব ছিলো পুলিশ ছিলো কিন্তু মানুষের নিরাপত্তা ছিলো না, ঈশ্বরগঞ্জে পথ সভায় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক-নয়ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত উদ্ধার কাজ শুরু, চলাচল বন্ধ
ভূরুঙ্গামারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১
নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগ কুবি শিক্ষক জসিমের বিরুদ্ধে
আরও

আরও পড়ুন

গফরগাঁওয়ের চরআলগী ইউনিয়নের কাজী মোঃ তোফাজ্জল হোসেনের ইন্তেকাল

গফরগাঁওয়ের চরআলগী ইউনিয়নের কাজী মোঃ তোফাজ্জল হোসেনের ইন্তেকাল

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুমোদন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুমোদন

আত্মরক্ষার অধিকার রাশিয়ার আছে: এরদোগান

আত্মরক্ষার অধিকার রাশিয়ার আছে: এরদোগান

র‍্যাব ছিলো পুলিশ ছিলো কিন্তু মানুষের নিরাপত্তা ছিলো না, ঈশ্বরগঞ্জে পথ সভায় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক-নয়ন

র‍্যাব ছিলো পুলিশ ছিলো কিন্তু মানুষের নিরাপত্তা ছিলো না, ঈশ্বরগঞ্জে পথ সভায় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক-নয়ন

সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া

সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া

মওলানা ছিলেন রাজনীতিকদের আইকনিক নেতা : রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁকে যথাযথ সম্মান জানাতে হবে

মওলানা ছিলেন রাজনীতিকদের আইকনিক নেতা : রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁকে যথাযথ সম্মান জানাতে হবে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত উদ্ধার কাজ শুরু, চলাচল বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত উদ্ধার কাজ শুরু, চলাচল বন্ধ

ভূরুঙ্গামারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

ভূরুঙ্গামারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

জি২০ ঘোষণাপত্র নিয়ে ক্ষুব্ধ জার্মান চ্যান্সেলর

জি২০ ঘোষণাপত্র নিয়ে ক্ষুব্ধ জার্মান চ্যান্সেলর

নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগ কুবি শিক্ষক জসিমের বিরুদ্ধে

নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগ কুবি শিক্ষক জসিমের বিরুদ্ধে

৪০ বছর পর আদমশুমারি, ইরাকে কারফিউ জারি

৪০ বছর পর আদমশুমারি, ইরাকে কারফিউ জারি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশ অনুমোদন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধ্যাদেশ অনুমোদন

ন্যানোটেকনোলজি অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক জিতেছে ইরানি দল

ন্যানোটেকনোলজি অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক জিতেছে ইরানি দল

বাংলাদেশের নাগরিক যে ব্রিটিশ এমপি নিজের মৃত্যুর গল্প তৈরি করেছিলেন

বাংলাদেশের নাগরিক যে ব্রিটিশ এমপি নিজের মৃত্যুর গল্প তৈরি করেছিলেন

কুষ্টিয়ায় ডাকাতি করতে গিয়ে মা-ছেলেকে হত্যা, তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

কুষ্টিয়ায় ডাকাতি করতে গিয়ে মা-ছেলেকে হত্যা, তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

নিহত জাবি শিক্ষার্থীর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত

নিহত জাবি শিক্ষার্থীর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা প্রশাসনের গ্রাসরুট লেভেলের প্রাণ কেন্দ্র: হাবিপ্রবি ভিসি

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা প্রশাসনের গ্রাসরুট লেভেলের প্রাণ কেন্দ্র: হাবিপ্রবি ভিসি

দূষণ ধুয়ে ফেলতে দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি!

দূষণ ধুয়ে ফেলতে দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি!

মনিরামপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

মনিরামপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

রাজধানীতে ট্রেনে কাটা পড়ে সাবেক সেনা সদস্য নিহত

রাজধানীতে ট্রেনে কাটা পড়ে সাবেক সেনা সদস্য নিহত