র্যাব পরিচয়ে উখিয়ার একটি পরিবার থেকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চার দফায় হাতিয়ে নেয়া হয় ৫৭ লাখ টাকা। এর পরেও ঘরে ঘুমাতে পারছে না ভোক্তভূগী ওই পরিবারের সদস্যরা। এমন যদি হয়ে থাকে তাহলে প্রশ্ন উঠে র্যাবের মধ্যে কি ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো সক্রিয়?
তবে র্যাবের পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। র্যাব -১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এমন অভিয়োগ অস্বীকার করে বলেন, র্যাব বরাবরই ব্ভালো কাজ করছে। কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারী র্যাবকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এসব গল্প বানানো হচ্ছে।
বুধবার কক্সবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী ওই পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী ফরিদুল আলম ও তার স্ত্রী শাহিন আক্তার ভীতসন্ত্রস্ত কণ্ঠে এই অভিযোগ করেন। ছোটন নামের এক ইয়াবা ব্যবসায়ী র্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে ওই এলাকায় সীমাহীন চাঁদাবাজী করছে বলেও ভোক্তভোগীরা জানা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত ইউপি নির্বাচনের পর থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর স্থানীয় মাহমদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ হোছাইন ছোটন,
ছৈয়দ নুরের ছেলে নুরুল আজাদ আশিক ও নুর আহমদের ছেলে আলমগীর তাদের পেছনে পড়ে। এরা প্রত্যেকেই ইয়াবা ব্যবসায়ী, খুন ও সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামী। বিগত ইউপি নির্বাচনে এই সন্ত্রাসী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ছিল তাদের প্রতিপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারী ফরিদুল আলম ও তার স্ত্রী শাহীন আক্তার আরও জানায় ওই নির্বাচনে তাদের বড় ভাই নুর আলম মেম্বার নির্বাচিত হওয়ায় তাদের প্রতিপক্ষ ওই সন্ত্রাসীরা তাদের উপর আরো ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। এর পর থেকে তাদেরকে র্যাব-পুলিশ ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে নির্যাতন করতে থাকে।
তারা আরো জানায়, তাদের কাছ থেকে একসাথে ২০লাখ টাকা নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে হাফিজুর রহমান নামের র্যাবের এক কর্মকর্তাকে তারা চিনেন।
গত ১৭ নভেম্বর সর্বশেষ ১০-১৫ জনের সাদা পোশাক পরা একদল লোক তাদের বাসায় এসে ফরিদুল আলমকে খুঁজতে থাকে। তাকে বাসায় না পেয়ে তার স্ত্রী শাহিন আক্তারকে এবং তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে ও শিশুকে বাসাতল্লাশির নামে নির্যাতন করে। এ সময় তাদেরকেও প্রত্যাবাসা গালিগালাজ করে। শাহীন আক্তার এ সময় চারজন ব্যক্তিকে র্যাবের পোষাক পরা
দেখে। পরবর্তীতে লোকজন পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ আসায় তারা পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল আলম বলেন, তিনি সৎভাবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বিগত ২০২১ইং সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫নং পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বড় ভাই নুরুল আলম ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদে নির্বাচিত হয়। নির্বাচনকালে মোহাম্মদ হোছাইন ছোটন, নুরুল আজাদ আশিক, আলমগীর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সহযোগী ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্বের আক্রোশে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানী করে আসছিল।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ নভেম্বর তার বাড়িতে তল্লাশীর নামে তান্ডব চালায়। তারা অবৈধ মাদক তাদের বসত ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে হয়রানী করবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল আলমের স্ত্রী শাহীন আক্তার ঘটনার পূর্বাপর বর্ণনা দিয়ে তার স্বামী ও ছেলে মেয়েসহ পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নুরুল আলম মেম্বার বা সংবাদ সম্মেলনে অভিয়োগকারী ফরিদুল আলমের পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এই কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা তাদের উপর খড়গহস্ত।