খুলনায় আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষি জমি, বাড়ছে সবজি ঘাটতির শঙ্কা

Daily Inqilab খুলনা ব্যুরো

১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ পিএম | আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ পিএম

দেশের সবজি ভান্ডারের বড় একটি অংশের যোগান দেয় খুলনাঞ্চল। কিন্তু অপরিকল্পিত আবাসনের আগ্রাসনে খুলনা জেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষি জমি। অপরদিকে লবণাক্ততার প্রভাব বাড়ায় বাধা গ্রন্থ হচ্ছে স্বাভাবিক চাষাবাদ। এ অবস্থা চলতে থাকলে শুধু খুলনা নয় সারা দেশের সবজি চাহিদায় ঘাটতি পড়তে পারে। ফলে ফসলের নিবিড়তা বাড়াতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর তাগিত দিচ্ছেন কৃষিবিদরা।

 

 

কৃষি সম্প্রসারণের তথ্যমতে ২০০৯-১০ সালে খুলনা জেলায় আবাদী জমির পরিমান ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৬২ হেক্টর যা বর্তমানে কমে ১ লাখ ৫২ হাজার ৯১১ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। এক যুগের ব্যবধানে জেলায় কৃষি জমি কমেছে ২ হাজার ৫’শ হেক্টর। এজন্য কৃষি জমির অপরিকল্পিত ব্যবহারকে দায়ী করছে কৃষি অধিদপ্তর।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকার থেকে নির্দেশনা রয়েছে দুই ফসলী, তিন ফসলী জমিতে আবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদন দিয়ে দেয়। এখানে আমাদের বলার বা করার কিছু থাকে না। তবে এই ধারা অব্যাহত থাকলে খুলনায় কৃষি কাজ করার জমি খুঁজে পাওয়া যাবে না।

 

অন্যদিকে এই জেলাতে কৃষির জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে লবণাক্ত জমির পরিধি ও পরিমান বৃদ্ধি বলছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউট। জেলার প্রায় ৯৬ হাজার ৩৪১ হেক্টর জমি উচ্চ মাত্রার লবনাক্ততায় আক্রান্ত।

 

খুলনা মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জি এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খুলনা জেলায় ১০টি উপজেলা রয়েছে। এর আয়তন ২ লাখ ১৩ হাজার ৮২০ হেক্টর। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমি বিভিন্ন মাত্রায় লবণাক্ততায় আক্রান্ত। অনুপাত আকারে বলতে হয় খুলনার ৬৯ শতাংশ জমি লবণাক্ততায় আক্রান্ত।

 

কৃষিবিদরা বলছেন, পতিত জমি চাষের আওতায় আনা আর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বাড়ানো সম্ভব না হলে দিন দিন এই অঞ্চলে ফসলের উৎপাদন হ্রাস পাবে যা জেলাসহ জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলবে।

 

খুলনা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিনিয়র মনিটরিং কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন জানানা, দেশের উত্তরাঞ্চলে ফসল বাড়ানোর সুযোগ নেই। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের সুযোগ রয়েছে। এখানে লবণাক্ততাও রয়েছে। তারপরও এখানের জমিতে প্রযুক্তির ব্যবহার করে দুই ফসল, তিন ফসল কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ ফসলও করা সম্ভব। তবে এ এলাকার কৃষি জমি যদি কমে যায় তাহলে শুধু দক্ষিণাঞ্চলের জন্য হুমকি নয় সারা দেশের জন্য একটি বড় হুমকি।

 

তবে আশার কথা শুনালেন খুলনা কৃষি অধিদপ্তর। তারা বলছে, ইতিমধ্যেই পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে শুরু করেছি। ফলে গেল এক দশকে নতুন করে চাষাবাদের আওতায় এসেছে জেলার ৩ হাজার হেক্টর জমি। তাই খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি রক্ষায় আইনের শক্ত প্রয়োগের আহবান বিশেষজ্ঞদের।

 


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেঃ তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা
বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার
পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী
ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু
আরও

আরও পড়ুন

গাজায় ইসরায়েলের অভিযান ‘অত্যন্ত সফল’ : বিদায় অনুষ্ঠানে বাইডেন

গাজায় ইসরায়েলের অভিযান ‘অত্যন্ত সফল’ : বিদায় অনুষ্ঠানে বাইডেন

শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেলেন যারা

শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেলেন যারা

চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জেডি ভ্যান্সের বৈঠক

চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জেডি ভ্যান্সের বৈঠক

চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেঃ তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেঃ তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা

তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা

ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু

ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান

যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান

আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল

বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল

যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী

পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী

মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প

প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প

ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের

ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের

প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত

প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত

বিরতির প্রথম দিন :  গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী  ট্রাক

বিরতির প্রথম দিন : গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক

ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু

ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু

আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন

আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন