তরুণ-তরুণীরা লিখে জানাচ্ছেন কেমন বাংলাদেশ চান। পলিথিন, প্লাস্টিক নিয়ে জনসচেতনা তৈরিতে চলছে কার্যক্রম। শিশু শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছে। তাদেরকে উৎসাহ দিতে যোগ দিচ্ছে ইউএনও। ফুটবল, ক্রিকেট খেলায় মত্ত তরুণ-তরুণীরা।
মোদ্দা কথায় তারুণ্যের উৎসবে মেতেছে গোটা দেশ। তরুণ-তরুণি ও শিশুদের মাঝে এ নিয়ে যেন আনন্দের ঢেউ। এখনো বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বই না পৌঁছালেও তারুণ্যের উৎসবে মেতে থেকে শিক্ষার্থীরা বেশ আনন্দ উপভোগ করছে। শহর থেকে গ্রামে সর্বত্র পালিত হচ্ছে এ তারুণ্য উৎসব। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি নাগাদ। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ১২টি দপ্তর তারুণ্য উৎসব উপলক্ষে প্রায় শত ধরণের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
নিদের্শনা মোতাবেক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাতেও তারুণ্য উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করে কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তরুণদের এ আয়োজনে বেশি বেশি সম্পৃক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক-১ মোহাম্মদ মিজানুর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) এর সহযোগিতায় তারুণ্য উৎসব -২০২৫ উদযাপন হবে। ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’- শ্লোগান উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত একটি কর্মসূচির উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উৎসব উপলক্ষে থাকবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক ফটোরিলিজ, জাতীয় সংসদের সামনে ‘অ্যাক্রোবেটিক শো’, বই মেলা, পথ সংগীত, কথামালা, লোক ও কারুশিল্প মেলা, ‘তারুণ্যের ভাবনায় নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালা ও সমাবেশ, জুলাই বিপ্লবের চিত্র প্রদর্শনী, ৩৬ জুলাই সম্পর্কিত চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, কুইজ ও রচনা প্রতিযোগিতা, মশক নিধন ও জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম, বৃক্ষরোপণ, পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিহারে উৎসাহ প্রদান, স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ, মোবাইল ডাটা প্যাকেজ ঘোষণা, আমার স্কুল পরিচ্ছন্ন স্কুল কার্যক্রম, বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পেইন, ফুটবল টুর্নামেন্ট, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা, ভলিবল প্রতিযোগিতা, সাঁতার প্রতিযোগিতা, যুব সমাবেশ, পরিস্কার পরিবেশ পরিস্কার খেলার মাঠ কর্মসূচি, জলাশয় পরিচ্ছন্ন পিঠা উৎসব ইত্যাদি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিবে। সে অনুযায়ি ইতিমধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সর্বত্র কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কথা হয় নাসিরনগরের তিলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঞ্জয় দেবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করেছি। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানেও শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে।’ কসবার ব্রাহ্মণগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সাইদুর রহমান খান বলেন, ‘তারুণ্যের উৎসব শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। আমাদের বিদ্যালয়েও আগামী সপ্তাহে পরিচ্ছন্নতা অভিযান হবে।’
আখাউড়া পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. ফয়ছাল আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিলাম। যেখানে তরুণরা দেশ নিয়ে তাদের ভাবনার কথা লিখেছেন। বিশেষ করে মাদকমুক্ত এলাকা তথা দেশের কথা গুরুত্ব দিয়ে লিখেছেন তারা।’ আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি এ বিষয়ে ইনকিলাব কে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাওয়া নির্দেশনা অনুযায়ি আমাদের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয়ভাবে সভা করে শোভাযাত্রার আয়োজনের মধ্য দিয়ে কার্যক্রমের শুরু করা হয়। আমি নিজেও বিভিন্ন আয়োজনের অংশগ্রহন করছি।
সরাইলের ইউএনও মো. মোশারফ হোসাইন মোবাইল ফোনে জানান, তারুণ্য উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। উৎসব পালনে নির্দেশনা অনুযায়ি একটি সময়সূচি তৈরি করা হয়েছে। সেই মোতাবেক আয়োজনগুলো করা হচ্ছে।