আর কোনো ফ্যাসিবাদী সরকারকে দেশে জায়গা দেবেন না : মাহমুদুর রহমান
২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩২ পিএম | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম
পতিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে এসে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনার বিদায় হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণকে এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আর কোনো ফ্যাসিবাদী সরকারকে দেশে জায়গা দেবেন না। সব ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই যেন অব্যাহত থাকে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানি শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকার ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ আপিলের রায়ের জন্য আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, এ মামলা যখন করা হয় তখন জেলে বন্দি ছিলাম। এ মামলার সঙ্গে কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি ২০০৫ সালের পর আমি আমেরিকা যাইনি। অথচ এ মামলার সময় দেখানো হচ্ছে ২০১২ সালে। এসময় আমি পত্রিকা অফিসে বন্দি ছিলাম। পত্রিকা অফিস পুলিশ, র্যাব ঘিরে রেখেছিল। এটাতে প্রমাণিত হয় একটা রাষ্ট্র কতটা নির্মম হতে পারে মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করতে।
তিনি বলেন, এই মামলাটি হয়েছিল শেখ হাসিনার পুত্র নিয়ে। এমন শতাধিক মামলা আমার বিরুদ্ধে আছে। শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপকে নিয়ে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এরকম একটি মামলাতেই আমার ওপর হামলা করা হয়েছিল৷ আমি আল্লাহ রহমতে জীবিত আসতে পেরেছি। তবে ধরে নিচ্ছি এই যে লড়াই, যতদিন জীবিত আছি এই লড়াই চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ। ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আমার দেশের যে লড়াই, সম্পাদক হিসেবে আমার যে লড়াই সেটা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে প্রথম দিন থেকে প্রতিবাদ করা উচিত। আমরা যদি প্রথম দিন থেকে প্রতিবাদ করতাম, তাহলে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ সরকার দ্বারা এতো জুলুম, ঘুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হতো না। এভাবে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও দিল্লির কাছে বিসর্জন দেওয়া হতো না। জনগণের কাছে আমার আহ্বান, আর কোনো ফ্যাসিবাদী সরকারকে দেশে জায়গা দেবেন না। সব ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই যেন অব্যাহত থাকে।
ন্যায় বিচার পাবেন উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, আশা করি, রায়ে আমি ন্যায় বিচার পাবো। কারণ ফ্যাসিবাদের পতন ও বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়েছে। ইতঃপূর্বে ফ্যাসিবাদের উত্থানের পক্ষে বিচার বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। এটা বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে। পরবর্তীতে বিচার বিভাগের সহযোগিতায় ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকানো গেছে। আমি আশাবাদী, আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পাবো।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন মাহমুদুর রহমান। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাঁচ দিন কারাভোগের পর ৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
জানা যায়, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ ৫ জনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুঁইয়া।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের কারাভোগ করতে হবে।
এছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন।
২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এদিকে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাংবাদিক শফিক রেহমান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাহমুদুর রহমান কারাগারে যাওয়ার পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে এ মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শর্তে আত্মসমর্পণ করেন শফিক রেহমান। শুনানি শেষে বিচারক তার বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেন। একইসঙ্গে সাজা পরোয়ানা স্থগিত করেন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করতে হবে’
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে বিদেশিদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
আন্দোলনের ডাক দিয়ে যারা সরে যেত, তারাই আওয়ামী পুনর্বাসন চাচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
বোলারদের দক্ষতা বাড়াচ্ছে বিপিএলের ব্যাটিং সহায়ক উইকেট: আকিফ
কোরআন তিলাওয়াতের সিজদা আদায় করা প্রসঙ্গে।
বিশ্বজুড়ে বিকল চ্যাটজিপিটি
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে স্বীকৃতি পেল ‘বাংলা নববর্ষ’
ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ: ক্ষতিগ্রস্ত হবেন যারা
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ পাচ্ছেন যাঁরা
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের আয়কর নথি জব্দ
পশ্চিম তীরে ইসরাইলের ভয়াবহ হামলা অব্যাহত, নিহত ২
দৌলতদিয়া রেলস্টেশনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
মানিকগঞ্জে যুবলীগের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাককে কারাগারে প্রেরণ, প্রিজন ভ্যান ডিম-জুতা নিক্ষেপ
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুল প্রতীক্ষিত নতুন প্রশাসনিক ভবন ও কর্মচারী কোয়ার্টার 'বন্ধন' উদ্ধোধন
ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের বিআইডিআই এ্যাপারেলস পরিদর্শন
২০২৫ সালের বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের ৪৭ বিশ্ববিদ্যালয়
মতলবে নিখোঁজের চারদিন পর স্কুল শিক্ষার্থী আদিবার লাশ উদ্ধার, আটক দুই
গফরগাঁওয়ে অসহায় হতদরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিএনপির কম্বল বিতরণ
হাসিনা এই দেশ থেকে টাকা পয়সা ব্যাংক লুট করে নিয়ে গেছে-পঞ্চগড়ে শামসুজ্জামান দুদু
ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল-কার্ভাডভ্যান মুখোমুখি সংর্ঘষ, নিহত ১