রাষ্ট্রদূত হারুনের বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক, ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৪ এএম | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৯ এএম

বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত হারুন আল-রশিদের এক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বিশ্ববাসীকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘গোপন অভিসন্ধির ইঙ্গিত’ হিসেবে দেখছে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
হারুন আল-রশিদ মরক্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর গত ডিসেম্বরেই তাকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তবে তিনি তা উপেক্ষা করে কানাডায় চলে যান। এরপর তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন এবং নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘সন্ত্রাসীদের রক্ষাকর্তা’ বলে উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে, এই পোস্টের মাধ্যমে তিনি বিদেশের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
তার ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ইউনূসের শাসনে বাংলাদেশ ‘নৈরাজ্যের মধ্যে পড়েছে’ এবং ‘উগ্রবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে’। তিনি আরও অভিযোগ করেন, দেশের সংখ্যালঘু ও ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ ভয়ের মধ্যে বাস করছে এবং হিযবুত তাহরীর, আইএস ও আল-কায়েদার মতো সংগঠনগুলো প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছে। হারুন দাবি করেন, ইউনূস সরকার সন্ত্রাসীদের ক্ষমতায় এনেছেন এবং তাদের রাজনৈতিক দল গঠনের সুযোগ করে দিয়েছেন।
এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল যে মাহফুজ আলম হিযবুত তাহরীরের সদস্য, যদিও সেটিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
হারুন তার লেখায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনের সঙ্গে বর্তমান সরকারের তুলনা করে বলেন, স্বাধীন তদন্ত হলে ইউনূস সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পেত। তিনি দাবি করেন, ১৫ দিনে ইউনূসের শাসনে যা ঘটেছে, তা হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের ঘটনাকেও ছাড়িয়ে গেছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বঙ্গবন্ধুর শৈশবকাল নিয়ে তার লেখা একটি উপন্যাসের জন্য তাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হারুন আল-রশিদ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া কানাডার অটোয়ায় চলে গেছেন এবং তাকে দেশে ফিরতে বলার পরও তিনি ফেরেননি। তার কর্মকাণ্ডকে ‘গোপন অভিসন্ধি’ হিসেবে উল্লেখ করে তার এবং তার পরিবারের পাসপোর্ট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
হারুন ২০তম বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি রোম, কায়রো, মেক্সিকো সিটি ও মাদ্রিদে বিভিন্ন কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন। সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাকে মরক্কোয় রাষ্ট্রদূত করা হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিতর্ক ওঠে এবং তাকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর সরকারের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে কোনো কূটনীতিক বা কর্মকর্তা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংলাপে বসার পরামর্শ জাতিসংঘ মহাসচিবের

‘যেখানে হাত দেই কেবল মুজিব, হাসিনা আর নৌকার ছড়াছড়ি’

‘ফ্যাসিস্টের সমর্থকে ভর্তি বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো’

দেশের ৭৪ উপজেলাকে দুর্গম ঘোষণা ইসির

জামায়াত সেই শিশুর পরিবারের দায়িত্ব নিলো

চার রাষ্ট্রপ্রধানের বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি

উপদেষ্টা মাহফুজের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য কাম্য নয় : হেফাজতে ইসলাম

ছাগলনাইয়ায় এক পল্লী চিকিৎসকে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ পরিবারের

অসুস্থতার মাঝেও দায়িত্বে অবিচল পোপ ফ্রান্সিস

ছাত্রদের ডাকে সার্বিয়ায় রাজধানীতে লাখো জনতা

প্রতারণার অভিযোগ আদালতে শাহরুখ-অজয়-টাইগার, সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড়

চাপাতি হাতে ভাইরাল আদাবরের সেই কিশোরসহ ৪ সন্ত্রাসী গ্রেফতার

কেলোগকে ইউক্রেনের বিশেষ দূত হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাম্প

আজ বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় বাংলাদেশ ১৫তম

গুতেরেসের সঙ্গে কেন বৈঠক, আমি ঠিক বুঝিনি : মির্জা ফখরুল

চীনে প্রশিক্ষণ মহড়ায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলা, নিহত ২৩

ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় গাজায় ৩ সাংবাদিকসহ নিহত অন্তত ১২

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাত, নিহত ৩১

ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু