পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার পর এবার মজুরি ২৫,০০০ টাকা দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৫ পিএম | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম
ঢাকার আশুলিয়ায় বিভিন্ন দাবিতে টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় যাবত শ্রমিক অসন্তোষ চলার পর, সম্প্রতি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও আবারও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন পোশাক খাতের শ্রমিকরা। আজ রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে অবস্থিত বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে এই বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কারখানার অভ্যন্তরে জড়ো হয়ে পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে 'পঁচিশ' 'পঁচিশ' স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
শিল্প সূত্র জানায়, সকাল থেকে আশুলিয়া বেল্টে নীট এশিয়া, ডেকো, এনভয়, ভিনটেজ, নাসা, সেতারাসহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কয়েকটি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। শিল্প পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শ্রমিক অসন্তোষ শেষে গত সপ্তাহ এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন, অর্থাৎ গতকাল পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও আজ সকাল থেকে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এই বিক্ষোভ শুরু করেন। এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডেকো গ্রুপের একজন কর্মকর্তা বলেন, এর আগে শ্রমিকদের যেসব দাবি ছিল, সেগুলো আমরা প্রথম দফাতেই মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শ্রমিকরা নতুন দাবি নিয়ে এসেছেন, বিশেষ করে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে তারা সিদ্ধান্ত চান।
তিনি বলেন, সকালে শ্রমিকরা কারখানাটিতে ঢুকে, ফ্লোরে উঠেই নেমে যান। এরপর থেকে গ্রাউন্ডে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে বের হয়ে গেলেও আমাদের শ্রমিকরা এখনো যাননি। বেশ কয়েকজন স্টাফ-কর্মকর্তাকে তারা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। তাদের একটি অংশ দাবি করছেন, এখনই তাদের ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবি মেনে নিতে হবে। আবার কেউ বলছেন, টিফিনের টাকা বাড়িয়ে যেটি ৪০ টাকা করা হয়েছে, সেটি এবার ৫০ টাকা করতে হবে। কেউ আবার হাজিরা বোনাস আরও বৃদ্ধি করতে বলছেন, যেটি ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হয়েছে ইতোমধ্যেই, যোগ করেন এই কর্মকর্তা।
পুলিশ জানায়, কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আজ সকালে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলেও পুলিশ ও যৌথ বাহিনী তাদের বুঝিয়ে ফিরিয়ে দেয়। সূত্র জানায়, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডেকোসহ বেশ কয়েকটি কারখানার অভ্যন্তরে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানায় সূত্রটি। তবে বেলা সাড়ে ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনো সড়ক অবরোধের তথ্য পাওয়া যায়নি।
যোগাযোগ করা হলে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, গতকাল নাসায় সামান্য ঝামেলা হওয়ার পর নাসা বন্ধ ছিল। আজকে কিছু কারখানার শ্রমিকরা কোথা থেকে কী তথ্য পেয়ে এটি করছে। মূলত ২৫ হাজার টাকা বিষয় না; এছাড়াও যেমন মেডলারের শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে মালিক আসে না, কথা বলে না শ্রমিকদের সাথে, তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলেও মালিকও নিজে গিয়ে তাদের আশ্বস্ত করুক- এটা চায় তারা। ভিনটেজের শ্রমিকদের দাবি, তাদের কারখানা খুলে দেওয়া হোক। রোজই কিছু দাবি মেনে নেওয়ার পর, এখন আবার নতুন দাবি করছে। তিনি জানান, শিল্পাঞ্চলে আজ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারায় ১৫টি এবং ৪টি কারখানায় সাধারণ ছুটি চলছে। এদিকে বিজিএমইএ বলছে, আজ আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে মোট ২৭টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এরমধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারার (নো ওয়ার্ক, নো পে) ভিত্তিতে ১৩টি এবং কারখানা খোলা রাখার পর কাজ বন্ধ আছে কিংবা স্ববেতনে ছুটি আছে এমন কারখানার সংখ্যা ১৪টি। শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে- কমফিট কম্পোজিট লিমিটেড, নাসা সুপার কমপ্লেক্স লিমিটেড, সেতারা গ্রুপ, শিন শিন অ্যাপারেলস লিমিটেড, জেনারেশন নেক্সট, ভিনটেজ গার্মেন্টস লিমিটেড, আঞ্জুমান ডিজাইনার্স লিমিটেড। এছাড়া স্ব-বেতনে ছুটি রয়েছে, কাজ বন্ধ আছে কিংবা শ্রমিকর চলে গেছে এমন কারখানাগুলোর মধ্যে আছে- এএম ডিজাইন লিমিটেড, ডেকো গ্রুপ, ব্যান্ডো ডিজাইন লিমিটেড, এনভয় গ্রুপ, অনন্ত গ্রুপ, নিউএইজ গ্রুপ, স্টারলিং ক্রিয়েশন, স্টারলিং অ্যাপারেলস, ইয়াগি বাংলাদেশ, দ্য রোজ গার্মেন্টস, টেক ম্যাক্সসহ মোট ১৪টি কারখানা। বিজিএমইএ আরও জানায়, আশুলিয়া অঞ্চলে আজ তাদের ২৪৫টি কারখানা চালু রয়েছে।
এছাড়া, আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ২৬৬টি কারখানা এবং আগস্ট মাসের বেতন এখনো দিতে পারেনি ৬টি কারখানা। বিজিএমইএর তথ্যমতে, আজ গাজীপুর এলাকায় তাদের চালু কারখানার সংখ্যা ৮৭৬টি, বিপরীতে বন্ধ রয়েছে ৬টি কারখানা। সাভার আশুলিয়া এবং জিরানি এলাকায় চালু রয়েছে ৪০৭টি এবং বন্ধ রয়েছে ২৭টি কারখানা। এছাড়া, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ২০৯টি কারখানা, ডিএমপি এলাকায় ৩০২টি এবং চট্টগ্রামে ৩৫০টি কারখানা চালু রয়েছে। এসব এলাকায় কোনো কারখানা বন্ধ নেই।
বিভাগ : ব্যবসা-বাণিজ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শিবালয়ে পরকিয়া প্রেমের বলি নুরজাহান ৪দিন পর পাষ-প্রেমিক আলিফ গ্রেফতার
ভূঞাপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে ময়লা-আবর্জনার ভাগার
শাহজাহান ওমরের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা
ধর্মগ্রন্থের পরে সত্য হিসেবে মানুষ সংবাদপত্রকে মনে করতো - বিটিভি মহা পরিচালক
নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে ‘প্রস্তুত’ ইউরোপের যে ৭টি দেশ
প্রথম বার চার দরজার বিলাসবহুল গাড়ি আনছে জাগুয়ার
৪ মাস যেতে না যেতেই ভেস্তে গেছে কোটি টাকার সোলার ফেনসিং প্রকল্প!
২৯ বছর পর অবশেষে আলোর মুখ দেখলো শেরপুর আন্তঃজেলা পৌর বাস টার্মিনাল
মোটরসাইকেলের ভয়ংকর নেশা, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, ৫ মাসে নিহত হয়েছে ১৪ জন
বড় দরপতনের পর সোনার দামে আবার বড় লাফ
রাজবাড়ীতে ছাত্রদল নেতা অপহরণ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
ফার্মগেট মানসী প্লাজায় আগুন, নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫ ইউনিট
মাদকের টাকা না পেয়ে মাকে কুপিয়ে হত্যা করে থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ
তারেক রহমান ও কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুমকি হিন্দু সম্প্রদায়ের
সুরমা-কুশিয়ারার জন্য ১৭৮৫ কোটি টাকার প্রকল্প
নকলায় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কালীগঞ্জে বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ফুলের শুভেচ্ছা জানালেন হামিদ
পর্ন তারকা স্টর্মিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘুষ প্রদান মামলার রায় স্থগিত করলো আদালত
দৌলতপুরে মাদকাসক্ত যুবকের হাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন : যুবক আটক
রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বিক্ষোভ, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা