ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

অনির্বাচিত সরকার আসার কারণ কী?

Daily Inqilab কামরুল হাসান দর্পণ

১৬ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫৮ পিএম

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বাগযুদ্ধ চলছে। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এর জবাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। সংবিধানের বাইরে একচুলও যাওয়া হবে না। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনাও হবে না। বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত বা বানচাল করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। অন্যদিকে, জাতিসংঘসহ প্রভাবশালী দেশগুলো বারবার বলছে, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসহ অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতরা বেশ তৎপর। তারা সরকারী দল, নির্বাচন কমিশন, বিএনপির সাথে ঘন ঘন বৈঠক করছেন। তাদের বক্তব্যের সুর একই। আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। তবে অংশগ্রহণমূলকের ক্ষেত্রে বিএনপির অংশগ্রহণ যে জরুরি, তা তারা খোলাখুলি না বললেও বোঝা যায়। কারণ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিÑএ দুটি দলই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। দুটি দলের ভোটের অনুপাত উঠানামা করলেও খুব বেশি হেরফের হয় না। ফলে উল্লেখযোগ্য সমর্থনের অধিকারী যেকোনো একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে, তা অংশগ্রহণমূলকের মানদ-ে বিচার করা যায় না। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে বিএনপিকে বাদ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনসহ অন্য যেসব নির্বাচন করেছে, সেগুলো করেছে নিজের সমর্থক ভোটারের মধ্যে। জনসমর্থনহীন অনেক দলকে নিজ আসন ছেড়ে এবং সমর্থন দিয়ে একধরনের পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূক দেখানোর চেষ্টা করেছে। এসব নির্বাচন আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র দলগুলো ছাড়া দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। ফলে প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থা আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হওয়ার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে। এটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য যেমন অস্বস্তির তেমনি চাপও বটে। আগের মতো এ চাপ উপেক্ষা করতে পারছে না। ফলে আগামী নির্বাচনে দলটি বিএনপি’র অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। তবে বিএনপি না এলে দলটি সেই পুরনো পথে হাঁটবে, এমন পরিকল্পনা নিয়ে ছক কষছে বলে পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। পর্যবেক্ষরা মনে করছেন, এবার পুরনো ছকে হাঁটা আওয়ামী লীগের জন্য যথেষ্ট কঠিন হবে। বিএনপিও বিষয়টি বুঝে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে অনড় অবস্থান নিয়েছে। এমন এক অচলায়তন অবস্থার মধ্যে কিভাবে নির্বাচন হবে, তা পরিস্কার নয়। এটা অনুমেয় যে, যত দিন যাবে, রাজনীতি তত উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। এমন প্রেক্ষিতে, অনির্বাচিত ব্যক্তি বা সরকারের ক্ষমতায় আসার প্রসঙ্গও উঠে আসছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অনির্বাচিত ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে জনগণ ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে। প্রশ্ন হচ্ছে, এ ধরনের কথা আসবে কেন? আমরা দেখেছি, এ ধরনের সরকার তখনই আসে যখন রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থেকে সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ওয়ান ইলেভেন সরকার আসার পেছনে দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য ও সংঘাত-সংঘর্ষ দায়ী ছিল। তখন আওয়ামী লীগ ওই সরকারকে স্বাগত জানিয়েছিল। এখন ক্ষমতায় থেকে সেই অনির্বাচিত সরকার আসারই আশঙ্কা করছে এবং তা এলে রাজনীতি ও দেশের কি পরিস্থিতি হতে পারে, সে কথা বলছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি দুই বড় দলের মধ্যে সমঝোতা না হয়, তাহলে আশঙ্কার ব্যক্তি বা সরকার এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

দুই.
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের প্রেক্ষিতে, সুযোগ সন্ধানীদের দৃশ্যপটে আগমন নতুন ঘটনা নয়। যখনই রাজনৈতিক সমঝোতার অনুপস্থিতি ঘটেছে, তখনই তাদের আবির্ভাব ঘটেছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক সরকার এবং ওয়ান-ইলেভেন সরকার ক্ষমতায় আসে মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্য, সংঘাত ও মতবিরোধের সুযোগ নিয়ে। এ ধরনের সরকার ক্ষমতা দখল করেই রাজনৈতিক দলের কর্মকা-কে দোষারোপ করে। রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করার নামে দুর্নীতির বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন দলের নেতাদের গ্রেফতার দমন-পীড়ন ও মামলাসহ নানা প্রক্রিয়া অবলম্বন করে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় মাইনাস টু ফর্মুলার মাধ্যমে দেশের প্রধান দুই নেত্রীকে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বিকল্প হিসেবে দুই দলের কিছু শীর্ষ নেতার দিয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। সে সময় যদি তাদের ফর্মুলা বাস্তবায়িত হতো, তা হলে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস এক ভিন্নরূপ লাভ করত। বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজনীতিতে অপ্রত্যাশিত ঘটনার সৃষ্টি হয় তখনই, যখন ক্ষমতাসীন দল ব্যর্থ হয়, জনগণ তার প্রতি বিরূপ হয়ে ওঠে। বিরোধীদলের সাথে সমঝোতা ও ঐক্যমত্যের পরিবর্তে বিরূপ আচরণ এবং দমাতে চেষ্টা করে। নিজের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে গিয়ে গণমাধ্যমসহ সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করে। এর বিপরীতে সৃষ্টি করে তার গুণগান গাওয়ার জন্য অনুগত ও বশংবদ বিরোধীদল, মিডিয়া ও চাটুকার শ্রেণী। ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এমন দল বা গোষ্ঠী নির্মূল করে চিরকাল ক্ষমতায় থাকার মানসিকতা পোষণ করে। এ ধরনের আচরণ করার কারণ হচ্ছে, সে নিজেও জানে, জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে সে ক্ষমতায় রয়েছে। তবে এটাও সত্য, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার সব প্রক্রিয়া অবলম্বন করলেও নৈতিক বল না থাকায় তার মধ্যে সবসময়ই একটা ভয় থাকে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বর্তমান সরকারের মধ্যে যে এ ধরনের ভয় কাজ করছে না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তা নাহলে, রাজনীতির বাইরের শক্তির আবির্ভাবের প্রসঙ্গ কেন আসবে? আত্মবিশ্বাসী ও জনগণের বলে বলীয়ান কোনো সরকারের নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় থাকার কথা নয়। ক্ষমতাসীন দল যে, নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে, এর কারণ তার মধ্যে ক্ষমতা হারানোর ভয় রয়ে গেছে। এর কারণও আছে। বিগত দুটি নির্বাচনে সে যেভাবে করেছে, তা যে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হয়নি, সেটা সে জানে। ফলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে তার ক্ষমতা হারানোর ভয় রয়েছে। এজন্য সংবিধানের বাইরে যেতে চাচ্ছে না। সংবিধানের অধীনে নির্বাচন করা মানে তার অধীনে নির্বাচন করা। এটা হলে নিশ্চিতভাবেই সে পুনরায় বিজয়ী হবে। তাছাড়া বিগত ১৫ বছরে যেভাবে প্রশাসন সাজিয়েছে, তাতে তার বিজয় সুনিশ্চিত। এরকম সাজানো-গোছানো প্রশাসন এবং সংবিধান থাকতে কে হারতে চাইবে? এখানে জনগণের রায়ের প্রয়োজন নেই। জনগণ তাদের পক্ষে আছে বলে লোকদেখানো নির্বাচন করা হবে। তবে সময় সবসময় একরকম যায় না। দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশা, সাধারণ মানুষর জীবনে অভাব-অনটন লেগে থাকাসহ দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার সর্বোপরি গণতন্ত্রের সংকোচন ক্ষমতাসীন দলকে যথেষ্ট চাপের মধ্যে ফেলেছে। ফলে আগামী নির্বাচন করা তার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনের আগেই। এজন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হতে হবে। তা নাহলে, দেশের রাজনীতি সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠবে। তখন তা সামাল দেয়া সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে।

তিন.
বিএনপির অনেক নেতা প্রায় প্রতিদিনই বলছেন, আগামী নির্বাচন ৫ জানুয়ারি বা ’১৮ সালের মতো হতে দেয়া হবে না। তারা কেন এবং কিসের ভিত্তিতে বলছেন, তার কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। একটি সরল হিসাব হতে পারে, বিএনপি নির্বাচন প্রতিরোধে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলবে। এটা কিভাবে সম্ভব, তা এখনও পরিস্কার নয়। যদি সম্ভব না হয়, তবে বিএনপি কি করবে? ইতোমধ্যে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বলে দেয়া হয়েছে, বিএনপির সাথে কোনো ধরনের সংলাপ বা সমঝোতা হবে না। বর্তমান সরকারের অধীনেই ছোট পরিসরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে এবং নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। আপাত দৃষ্টিতে এরপর আর কথা থাকে না। এর মধ্য দিয়ে এটাই প্রতীয়মাণ হচ্ছে, ক্ষমতাসীন দল বিএনপিকে ছাড় দিতে নারাজ। প্রয়োজনে বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করবে। এখানেও প্রশ্ন আসে, সরকারের পক্ষে কি বিএনপিকে বাদ দিয়ে আরেকটি নির্বাচন করা সম্ভব? বিএনপি যদি আবারও একতরফা নির্বাচন ঠেকাতে মরিয়া হয়ে আন্দোলন শুরু করে, তবে সরকার টলুক না টলুক, তার ধাক্কা কি অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে থাকা দেশের পক্ষে সামলানো সহজ হবে? সরকার যতই বলুক, দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটকালে এ কথা মানান সই নয়। সাধারণ মানুষ জীবনযাপন করা নিয়ে নিদারুণ পেরেশানির মধ্যে রয়েছে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে খাবার সংস্থান করতে হিমশিম খাচ্ছে। আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলাতে পারছে না। অসংখ্য মানুষ বেকার হয়ে গেছে। মানুষের এই সংকট সরকার সামাল দিতে পারছে না। এর মধ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাত সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। সরকার যদি গোঁ ধরে আগের মতো নির্বাচন করতে চায়, তাহলে বিদেশী শক্তিগুলোও নাখোশ হবে। এর প্রভাব দেশগুলোর উন্নয়ন সহযোগিতায় প্রভাব পড়বে। তখন দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ স্থিতিশীলতা বজায় থাকে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত রায়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত হলে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিকল্প নেই। নির্বাচন নিয়ে যে অস্থিতিশীলতা কিংবা অনির্বাচিত সরকারের শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে, তা ঠেকাতে হলে ক্ষমতাসীন দলকেই উদ্যোগী হতে হবে। এক্ষেত্রে যতই অপছন্দ হোক এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও বিএনপির সাথে সরকারের সমঝোতায় আসা উচিত। কারণ সরকার বহু চেষ্টা করেও দলটিকে নিঃশেষ করতে পারেনি। কাজেই যাকে নিশ্চিহ্ন করা যায়নি এবং যার অবস্থান এখনও শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে, তাকে বাদ দিয়ে আরেকটি নির্বাচন করা উচিৎ হবে না। সাধারণভাবে একটা কথা আছে, যদি তোমার শত্রুকে শেষ বা নিশ্চিহ্ন করতে না পারো, তবে তাকে কনভিন্স করে সাথে নিয়েই পথ চলো। কাজেই বিএনপিকে কনভিন্স করাই হবে সরকারের বিচক্ষণতার পরিচয়। তা না করে যদি আরেকটি অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে যায়, তবে তা দেশ ও জাতির জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া এখন বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটও পরিবর্তিত হয়েছে। সরকারের একমাত্র সমর্থক ভারতের অবস্থানও যে আগের মতো আছে, এমনটি মনে করার কারণ নেই। সেও চাচ্ছে, একটি অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তার এ মনোভাব থেকে প্রতীয়মাণ হয়, আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশটির দৃষ্টিভঙ্গি ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের মতো নয়। এ প্রেক্ষিতে, দেশের রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা পূর্বানুমান করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

চার.
আপাত দৃষ্টিতে দেশের সার্বিক রাজনীতি শান্ত ও স্থিতিশীল মনে হলেও, এ চিত্র যে নির্বাচন পর্যন্ত থাকবে, তা মনে করার কারণ নেই। এ পরিস্থিতি অনেকটা ঝড় আসার পূর্বের শান্ত পরিস্থিতির মতো। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও ভেতরে ভেতরে যে অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে, তা আঁচ করা যায়। নানা ইস্যুতে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে যে এক ধরনের অস্বস্তি ও অস্থিরতা রয়েছে, তা বোঝা যায়। এদিক থেকে বিএনপি তার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। এর পাল্টা জবাবে আওয়ামী লীগও মাঠে কমূসূচি দিয়ে রয়েছে। এ থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে যতই উপেক্ষা ও পাত্তা না দিক, তাকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। কারণ দলটির ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। তার বক্তব্য দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে। আবার বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ, এ দল দিয়ে কিছু হবে নাÑএতসব অপবাদ সত্ত্বেও দলটির কমূসূচিতে ব্যাপক নেতা-কর্মী ও সমর্থক উপস্থিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে রাজনীতি করার কারণে তার শক্তি কতটা অটুট রয়েছে, তা বলা মুশকিল। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তার প্রকৃত শক্তি ও সক্ষমতা বোঝা যাবে।

[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান