পড়ে থাকা স্মার্ট কার্ড দ্রুত বিতরণ করতে হবে
১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫৮ পিএম
স্মার্ট আইডি কার্ড এখন প্রায় সকল কাজেই লাগে। তারপরও অনেক মানুষ এখনো এই কার্ড নেয়নি। যারা নেয়নি, তাদের কার্ড গোডাউনে নষ্ট হচ্ছে। ইনকিলাবে প্রকাশিত এক খবর মোতাবেক, এ পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড ছাপানো হয়েছে ৭ কোটি ৭৩ লাখ। বিতরণ হয়েছে ৭ কোটি ১ লাখ। অবিতরণকৃত রয়েছে ৭২ লাখ কার্ড। নানান কাজে আইডি কার্ডের ব্যবহার অপরিহার্য হওয়ায় প্রত্যেকেরই এটা থাকা প্রয়োজন। আইডি কার্ড করার জন্য কম ঝক্কি-ঝামেলা ও দৌড়-ঝাঁপ করতে হয় না। এতে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধনেও ভোগান্তির শেষ থাকে না। এহেন কার্ড বিপুল সংখ্যক মানুষ নেবে না বা তাদের কাছে বিতরণ করা যাবে না, এটা মেনে নেয়া কঠিন। নির্দিষ্ট সময় বা দিন-তারিখে কার্ড বিতরণ নিশ্চত করা গেলে এমনটি হওয়ার কথা নয়। স্মার্ট কার্ডের জন্য অনেকদিন ঘুরতে হয়, অপেক্ষা করতে হয়। কার্ডের অধিকারীকে নির্দিষ্ট দিন-তারিখ জানিয়ে বার্তা প্রদানের ব্যবস্থা থাকলে কার্ড সংগ্রহ সহজ হতে পারে। হয়রানিমুক্ত সহজ প্রাপ্তির ব্যবস্থা উদ্ভূত সমস্যার দ্রুত নিরসন করতে পারে। একটি স্মার্ট কার্ড ছাপাতে নির্বাচন কমিশনকে ১ দশমিক ৬ ডলার ব্যয় করতে হয়। অন্যান্য খরচ তো আছেই। এই কস্টলি কার্ড নষ্ট হয়ে যাওয়া মানে সব খরচ পানিতে পড়া। পুনরায় কার্ড করতে অনুরূপ বা তার বেশি খরচ হতে পারে। কাজেই, ৭২ লাখ কার্ড নষ্ট হওয়ার আগেই দ্রুততম সময়ে বিতরণ করা আবশ্যক। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক সভায় অবহিত করেন যে, অবিতরণকৃত স্মার্ট কার্ড কাগজের প্যাকেটে সংরক্ষণ করায় কিছু কার্ড নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কার্ড রিবক্সিং করার জন্য প্লাস্টিক প্যাকেট প্রদান করা জরুরি। তিনি কার্ড দ্রুত বিতরণের ব্যবস্থা করারও তাকিদ দেন। সভায় যার কার্ড তাকে দেয়া, অন্যের হাতে না দেয়া এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কার্ড বিতরণের সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্তগুলো উত্তম। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় বাস্তবায়ন নিয়ে। আমাদের দেশে কোনো ক্ষেত্রেই কোনো সিদ্ধান্ত যথাসময়ে নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন হতে দেখা যায় না। লাখ লাখ স্মার্ট কার্ড বিতরণের অপেক্ষায় পড়ে আছে, বিতরণ না হওয়ায় অনেক কার্ড নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এমন পরিস্থিতি তৈরির পেছনে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন না হওয়াই দায়ী। যাহোক, এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করা হোক। আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহি দেখা যায় না। এ কারণে নানা সংকট, সমস্যা ও ক্ষতি হয়। আমরা এখন স্মার্ট দেশ গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। স্মার্ট দেশ গড়তে হলে তার সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে স্মার্ট হতে হবে। দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহির উন্নতি ছাড়া স্মার্ট দেশ গঠন সম্ভব নয়। সৎ, কর্মতৎপর, সৃজনশীল মানুষ স্মার্ট দেশ গঠনের কারিগর। এদেরই আমাদের খুঁজে বের করতে হবে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ করতে হবে। তাহলে স্মার্ট দেশ গঠনের অভিযাত্রা দ্রুত সফলতার মুখ দেখবে। স্মার্ট আইডি কার্ডের কাজে যারা বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত, তাদের স্মার্ট হওয়ার বিকল্প নেই। আইডি কার্ড নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও অভিযোগ অনেক আছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আছে তথ্য নিয়ে, বানান নিয়ে। কার্ড হোল্ডারের দেয়া তথ্য আর, কার্ডে বর্ণিত তথ্যের মধ্যে প্রায়ই গড়মিল দেখা যায়। জন্ম তারিখ, পিতার নাম, বয়স ইত্যাদিতে ভুল থাকে। বানানেও ভুল থাকে। এসব ভুল সংশোধন করতে হয়রানির এক শেষ হতে হয়। বিষয়টি নিয়ে কথিত সমন্বয় সভায় কথাবার্তা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছোট-খাটো ভুল সংশোধনের এখতিয়ার উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে দেয়া হলেও তারা অনেক সময় এগুলো ঝুলিয়ে রাখে। এটা যাতে না করে সে জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যেসব বিষয় নিষ্পত্তি করার এখতিয়ার তাদের নেই, সেসব দ্রুত কমিশনের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। এনআইডি মহাপরিচালক এসম্পর্কে জানান, ‘ক’ শ্রেণীর সংশোধনসমূহ উপজেলা পর্যায়ে সম্পন্ন হয়, যা সহজ। কিন্তু ক শ্রেণীতে অনিষ্পন্ন আবেদনের সংখ্যা অনেক বেশি, যা কাম্য হতে পারে না। বলা বাহুল্য, এ থেকে বুঝা যায়, মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। ছোট-খাটো ভুলের সংশোধন কিংবা নিষ্পন্ন বিষয়ের নিষ্পত্তিকরণ দ্রুতায়িত করতে হবে।
স্মার্ট কার্ড যেহেতু বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, সেহেতু এই কার্ড যাতে সবাই সহজে ও সুবিধাজনক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পেতে পারে, তার বন্দোবস্ত ও ব্যবস্থা করা কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। এই কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে তার ত্রুটি-বিচ্যুতি, অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি অবহিত। স্মার্ট কার্ড প্রত্যাশীর হয়রানির বিষয়টিও সর্বজনবিদিত। এসবের আশু অবসান একান্তভাবেই আবশ্যক। আমরা আশা করবো, অবিতরণকৃত স্মার্ট কার্ড দ্রুত বিতরণ করা হবে। স্মার্ট কার্ডের সংশোধন সহজ করা হবে। নতুন স্মার্ট কার্ড প্রত্যাশী ও কার্ডের সংশোধন প্রত্যাশীদেরও যথাযথ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। যাদের কার্ড পড়ে আছে, তাদের যত দ্রুত সম্ভব তা সংগ্রহ করতে হবে। কার্ড তৈরির প্রক্রিয়ায় সবাইকে সঠিক ও নির্ভুুল তথ্য দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে সংশোধনের ঝামেলায় পড়তে না হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও সর্তক থাকতে হবে, যাতে তাদের কোনো ভুল না থাকে। এভাবে আমরা সবাই দায়িত্ববান ও সচেতন হলে স্মার্ট কার্ড সংক্রান্ত সমস্যা ও হয়রানির সম্মুখীন হতে হবে না।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জকিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত
ঝিনাইদহে পুকুর থেকে মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার, জড়িত সন্দেহে আটক-১
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের কাছে ক্ষমা না চাইলে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
বগুড়ায় মেয়েকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যা, চিরকুট উদ্ধার
বিবাহ বিভ্রাটে তৌহিদ আফ্রিদি, স্যোশ্যাল মিডিয়ায় শালিকা নিয়েছে বউয়ের অবস্থান
বিদেশি হস্তক্ষেপে বিগত সরকার ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছিলো : আসিফ নজরুল
মাদক নির্মূলে কঠোর অবস্থানের ঘোষনা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
নারায়ণ চন্দ্রকে আদালত চত্বরে ডিম নিক্ষেপ
সেই কবি এবার ৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পাস করলেন
ফিলিপাইনে টাইফুন উসাগির আঘাত
যশোরে ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা
চুয়াডাঙ্গার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলেন যশোরের বিচারক শিমুল
জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার অন্যতম লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠন : ভূমি উপদেষ্টা
২০ হাজার ওমরাযাত্রী অনিশ্চয়তায়, ওমরাহ টিকিটে এক লাফেই ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি
সংষ্কার কাজ দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন -মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম
কটিয়াদীতে যুবকের লাশ উদ্ধার, স্ত্রী আটক
বেনাপোল বন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল উদ্বোধন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, কমবে ভোগান্তি, বাড়বে বাণিজ্য
যশোর বোর্ডে এইচএসসিতে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন ৬৬ হাজার, পরিবর্তন ৭১ জনের
আইএইচএফ ট্রফির বাছাইপর্বে অংশ নিবে ইয়ুথ ও জুনিয়র হ্যান্ডবল দল
ফের কমলো সোনার দাম