নদীভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
১৩ জুলাই ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৩, ১১:৫৩ পিএম
প্রতি বছরই বর্ষায় দেশের বিভন্ন অঞ্চল বিশেষ করে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে বসতভিটা, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হারিয়ে যায়। চলতি বর্ষাতেও পত্রপত্রিকায় প্রায় প্রতিদিনই ভাঙনের ভয়াবহ রূপ তুলে ধরা হচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী বাঁধ ও নদীভাঙনে গ্রামের পর গ্রাম, জনপদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসা ইত্যাদি বিলীন হয়ে দেশ ও জনসাধারণ অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হলেও তা রোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। বছরের পর বছর ধরে ভাঙনে মানুষ সর্বহারা হলেও এর কোনো স্থায়ী প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
দুই.
বাংলাদেশের নদ-নদীগুলো একসময় আশীর্বাদ হলেও কালক্রমে তা যেন বিভিন্ন এলাকার মানুষের জন্য আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্যতা, বর্ষায় প্রচ- ভাঙনের মুখে পড়ছে তারা। নদীগুলো স্বাভাবিকভাবে বইতে পারছে না বা বইতে দেয়া হচ্ছে না। এজন্য আমরা যতটা না দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী প্রতিবেশি ভারত। ৫৪টি নদী ভারতের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এটাই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত তার অংশে একের পর এক বাঁধ, আন্তঃনদী সংযোগ ও গ্রোয়েন নির্মাণ করে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে, আবার বর্ষায় বাঁধের সব স্লুইস গেট খুলে দিয়ে পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছে। ভাঙনকে তীব্র করে তুলছে। অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে ভারতের সাথে চুক্তি নিয়ে কথা হচ্ছে। ভারত কেবল আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবায়ন করছে না। এতে শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে যথাক্রমে পানিশূন্যতা ও ভাঙনের কবলে পড়ছে দেশের মানুষ। এ সমস্যার সমাধান কবে হবে বা আদৌ হবে কিনা, তা কারও পক্ষে বলা সম্ভব নয়। জনগণ এক প্রকার ধরেই নিয়েছে, এ সমস্যার যৌক্তিক সমাধান হওয়া দিল্লী দূরস্ত। এই যখন পরিস্থিতি, তখন আমাদেরও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। বন্যায় যাতে ডুবে যেতে না হয়, ভাঙনের শিকার না হতে হয় এবং শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে মরতে না হয়, এই ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য যথোপযুক্ত পানি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার বিকল্প নেই। আমাদের দেশে জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার হাত থেকে বাঁচার জন্য বাঁধ নির্মাণের উপর জোর দেয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও নদীর তীর রক্ষা বাঁধ রয়েছে। ৫৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন নতুন বেড়িবাঁধ ও নদীর তীর রক্ষার কাজ করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দেয়া মোট বাজেটের প্রায় ৭০ শতাংশই ব্যয় হয় এসব বাঁধ ও নদী তীর রক্ষার কাজে। নদ-নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করে বন্যা থেকে বাঁচার উপায় এবং বন্যার পানি ধরে রেখে শুষ্ক মৌসুমে কাজে লাগানোর কোন প্রকল্প নেয়া হয় না। এ নিয়ে মাঝে মাঝে মহাপরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও তার বাস্তবায়ন হতে দেখা যায় না। কয়েক বছর আগে বিকল্প গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের কথা শোনা গিয়েছিল। তবে ভারতের আপত্তিতে সে প্রকল্প স্থগিত হয়ে রয়েছে। রাজবাড়ির পাংশায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে বাজেট করা হয়েছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। এর বাস্তবায়ন হলে কি কি উপকার হতো, তা নিয়েও একটি সমীক্ষা করা হয়। ব্যারেজ থেকে উজানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকবে ২৯শ’ মিলিয়ন মিটার কিউব পানির বিশাল রিজার্ভার। শুষ্ক মৌসুমে এই রিজার্ভার থেকে ২ হাজার মিলিয়ন কিউসেক পানি ৮টি সংযোগ খালের মাধ্যমে ছাড়া হবে। এর ফলে গঙ্গা নির্ভর ১৬টি নদী শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা ফিরে পাবে। একই সাথে গঙ্গা অববাহিকা নির্ভর ৫১ লাখ হেক্টর জমির মধ্যে ১৯ লাখ হেক্টর জমি সরাসরি সেচের আওতায় আসবে। ব্যারেজের গেইট থাকবে ৯৬টি। থাকবে একটি পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখান থেকে ১১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এই ব্যারেজের মূল কাজ হচ্ছে, এর মাধ্যমে সারা বছরই পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, যাতে দেশের আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে বিপ্লব সাধিত হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা থেকে শুরু করে মরুময়তা ও লবনাক্ততা থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকা মুক্ত থাকবে। বলাবাহুল্য, এটি বাস্তবায়িত হলে একটি মহামূল্যবান প্রকল্প হিসেবে পরিগণিত হতো। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে যত টাকা বিদেশে পাচার হয়, তার অর্ধেকেরও কম টাকা দিয়ে এমন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা ও কার্যকর উদ্যোগ। এ ধরনের প্রকল্প যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে, দেশের জন্য ততই মঙ্গল। ভারত এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আপত্তি তুললেও সে ইতোমধ্যে বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি পানির রিজার্ভার গড়ে তুলেছে। তার অংশের এক ব্রহ্মপুত্র নদীতেই ৩৩টি রিজার্ভার গড়ে তোলার মাধ্যমে ৫০ লাখ কিউসেক পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যান্য নদীতেও এরকম আরও অনেক রিজার্ভার গড়ে তুলছে।
তিন.
নদী ভাঙনে মানুষের যতটা না ক্ষতি হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে দেশের ভূখ-ের। আভ্যন্তরীন নদী ভাঙনের পাশাপাশি সীমান্ত নদীর ভাঙনও ব্যাপক আকার ধারন করেছে। এতে একদিকে যেমন দেশের আভ্যন্তরীণ ভৌগলিক কাঠামো পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সীমান্ত ভাঙনে মানচিত্রও বদলে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পদ্মার ভাঙনে রাজশাহীর পবা উপজেলার চর খানপুর ও চর খিদিরপুর মৌজা বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। চর দু’টি বিলীন হলে আন্তর্জাতিক পানি আইন অনুযায়ী, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী পদ্মায় বাংলাদেশের অংশে প্রবেশের সুযোগ পাবে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশংকা প্রকাশ করেছে, চর দুটিতে যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তা রোধ করা না গেলে পদ্মার অর্ধেক অংশের নিয়ন্ত্রণ বিএসএফ-এর হাতে চলে যাবে। তখন বাংলাদেশিদের চলাচলে তারা বাধা দিতে পারবে। আন্তর্জাতিক পানি আইন অনুযায়ী, বিএসএফ তা করতে পারে। আন্তর্জাতিক পানি আইন মোতাবেক দুই দেশের সীমান্ত নদীর মাঝ ¯্রােত বরাবর বা মাঝিমাঝি সীমান্ত রেখা টানা হয়। দেখা যাচ্ছে, পদ্মাসহ দেশের অন্যান্য সীমান্ত নদীগুলোর ভাঙনের ফলে নদীর ¯্রােতধারা বাংলাদেশের দিকে ক্রমশ এগুচ্ছে আর ভারতের দিকে চর জাগছে। ভারত এসব জেগে উঠা ভূখ- রক্ষা এবং তাদের অংশে ভাঙন রোধে বাঁধ দিচ্ছে। শুধু পদ্মাই নয়, সীমান্ত সংলগ্ন সুরমা, কুশিয়ারা, ইছামতি ও অন্যান্য নদীর ভাঙনেও বাংলাদেশ ভূখ- হারাচ্ছে। এভাবে বাংলাদেশের মানচিত্র ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত চার দশকে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর ভাঙনে দেড় লাখ হেক্টর জমি হারিয়ে গেছে, যা ঢাকা শহরের আয়তনের চেয়ে বেশি। এর বিপরীতে চর জেগেছে মাত্র ৫৩ হাজার হেক্টর। অর্থাৎ প্রতি বছরই নদ-নদীর ভাঙন তীব্র হচ্ছে। এই ভাঙন রোধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। যেসব উদ্যোগের কথা শোনা যায়, তা বলতে গেলে নামকাওয়াস্তে নেয়া হয়। ভাঙন কবলিত এলাকায় যেসব বাঁধ নির্মাণ ও ভাঙন রোধের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেগুলোর নির্মাণ ও স্থায়িত্ব এত কম যে, নদীর পানির ¯্রােত ঠেকানোর মতো সক্ষমতা নেই। কোন কোন এলাকায় বাঁধগুলো বালির বাঁধে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর বাঁধগুলো পুনঃনির্মাণ ও সংস্কারে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। অথচ দেশজুড়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে নদীভাঙন ও বন্যা মোকাবেলার বাঁধ। বছর ঘুরতে না ঘুরতে এসব বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কারের নামে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করলেও তাতে খুব একটা কাজ হয় না। গাফিলতি ও টাকা লুটপাটের ফলে নড়বড়ে বাঁধ বর্ষা এলেই ভাঙতে থাকে। হাজার হাজার কোটি টাকা পানিতে ভেসে যায়। মানুষের ভোগান্তি আর কমে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের জন্য বাঁধগুলো অর্থ লুটপাটের একটি স্থায়ী প্রজেক্টে পরিণত হয়েছে। একে দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন-মরণ সমস্যা নিয়ে ব্যবসা ছাড়া আর কি বলা যেতে পারে! দায়সারাগোছের কাজের ফলাফল প্রতি বছরই দেখা যায়। দেশের উত্তরাঞ্চল বন্যাকবলিত হলে, পানির প্রবল ¯্রােতে বাঁধ ভেঙ্গে শত শত গ্রাম, ফসলি জমি, গবাদি পশু তলিয়ে যায়। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়, কৃষি জমি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও জনপদ। নদী ভাঙন শুধু ভূখ-গত কাঠামো পরিবর্তন নয়, হাজার হাজার মানুষকে উদ্বাস্তুতে পরিণত করছে। পরিবার নিয়ে কৃষক ও কাজের লোক বেকার হচ্ছে। এদের কর্মসংস্থানের দায়িত্ব নিতে সরকারকে দেখা যায় না। অর্থনীতির ভাষায়, দেশে একজন লোকও যদি বেকার থাকে, তবে তার ভরণপোষণের চাপ পরিবার থেকে রাষ্ট্রের অর্থনীতির উপর পড়ে। রাষ্ট্রের প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অবহেলায় যদি কর্মক্ষম শত শত কৃষক ও ব্যক্তি বেকার হয়, তবে তাদের কর্মসংস্থানের চাপ অর্থনীতির উপর কি পরিমাণ পড়ে, তা বোধকরি ব্যাখ্যা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার যে স্বপ্ন দেখছি, নদী ভাঙনে লাখ লাখ মানুষের যে ক্ষতি হচ্ছে, তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া যে তার উপর পড়ছে, তাতে সন্দেহ নেই। এত বড় ক্ষতির দায় কে নেবে? এই দায় কি বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের দায়িত্বে নিয়োজিত পানি উন্নয়ন বোর্ড নিচ্ছে? দুর্নীতি ও গাফিলতির কারণে দেশের মানচিত্র বদলে যাওয়া, আভ্যন্তরীন ভূখ- হারানো এবং মানুষের উদ্বাস্তু হওয়ার দায় কি তার উপর বর্তায় না? পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জিডিপি’র ১.৮ শতাংশ হারায়। ১৯৭০ সালের তুলনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ ৫ গুণ বেড়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে ৯ গুণ। আর জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড রিস্ক রিপোর্ট অনুযায়ী, দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বের ১৭৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে রয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, বাংলাদেশ কতটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। সরকার সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসের ফলে কৃষি জমিতে ঢুকে পড়া লবনাক্ত পানির হাত থেকে কৃষিজমি রক্ষা করতে উপকূলীয় অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণ ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এছাড়া আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি হ্রাস ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ৫০ থেকে ১০০ বছরের ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করেছে। সরকারের এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। তবে এসব পরিকল্পনা যে মন্ত্রণালয় এবং যেসব বিভাগ বাস্তবায়ন করবে, তাদের আন্তরিকতা, সততা, দক্ষতা এবং যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টি কঠোরভাবে যদি মনিটর করা না হয়, তবে এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হোঁচট খেতে পারে। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার নিয়ে চলমান প্রকল্পগুলোতে এর নজির রয়েছে। বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও যথাসময়ে সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলেই কেবল উল্লেখিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব।
চার.
নদী ভাঙনের যে ভয়াবহতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের শৈথিল্য ও গাফিলতি কাম্য নয়। তাকে যথাসময়ে যথাযথভাবে বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। এই নির্মাণ ও সংস্কার যাতে স্থায়ী হয়, বালির বাঁধে পরিণত না হয়, এজন্য কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে এবং দুর্বলভাবে নির্মিত হয়েছে, কেন এমন হলো এ নিয়ে সেসব এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি। বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার এবং ভাঙন রোধক প্রকল্প নিয়ে বছরের পর বছর ধরে কিছু লোকের অসৎ বাণিজ্য চলতে পারে না। বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধু বাঁধ নির্মাণ করলেই হবে না, বন্যার পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করে শুষ্ক মৌসুমে কাজে লাগাতে হবে। পানির রিজার্ভার গড়ে তুলতে হবে। এজন্য, নদীর নাব্য বজায় রাখার কার্যক্রম জোরদার, খাল খনন কর্মসূচি, লেক, হাওর-বাওর, বিল-ঝিল-পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। এসব উদ্যোগ সফল করতে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষদের উদ্বুদ্ধ ও কাজে লাগাতে হবে। এতে যেমন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, তেমনি পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজও হবে। দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে ক্রাইসিস ব্যবস্থাপনার চেয়ে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে ১ ডলার ব্যয় করলে ১০ ডলার পরিমাণ সম্পদ রক্ষা পায়। অর্থাৎ ক্ষতি হয়ে যাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়ার চেয়ে ক্ষতি হওয়ার আগে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশে বন্যা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, নদী ভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবস্থাপনার উপর জোর দেয়া এখন সময়ের দাবি।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক
জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী