সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে
০৯ আগস্ট ২০২৩, ০৮:২০ পিএম | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
উন্নতির অন্যতম প্রধান সোপান পর্যাপ্ত ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা এগিয়ে চললেও প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ না হওয়া, রক্ষণা-বেক্ষণে গুরুত্ব না দেওয়া ও দুর্নীতির কারণে তা গতি হারাচ্ছে। যানবাহনের অবস্থাও ভাল নয়। যোগাযোগ খাতের অন্যতম পানি পথ, রেল পথ, স্থল পথ ও আকাশ পথ। নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় ব্যয় স্বল্পতা, দুর্ঘটনার হার কম ও আরামদায়ক যোগাযোগ ব্যবস্থ হচ্ছে পানিপথ। বাস্তবতা হচ্ছে, ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে দেশের বেশিরভাগ নদী মরে গেছে। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ গত ২৯ এপ্রিল বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দেশে নদীর সংখ্যা ছিল ১,২০০টি। এখন আছে ৭৫৬টি। গত ২ জুন জার্মান বেতারে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৯০০ নদী আছে। গত ৩ ডিসেম্বর খবরে প্রকাশ, দেশে প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল। এখন আছে মাত্র ৬.৫ হাজার কিলোমিটার। এক টন পণ্য পরিবহনে ব্যয় হয় প্রতি কিলোমিটারে সড়কপথে ৪.৫ টাকা, রেলপথে ২.৫ টাকা ও নৌপথে মাত্র ৯৯ পয়সা। গুরুত্বপূর্ণ নৌপথের ৯৯ সেতুর ৮৫টিরই উচ্চতা কম। ফলে দ্বিতল লঞ্চ/জাহাজ চলাচল করতে পারে না। তাই ভেঙ্গে উঁচু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কিন্তু সেটা কবে হবে বলা কঠিন। অন্যদিকে, যেসব নদী এখনো বেঁচে আছে, তারও বেশিরভাগ নাব্য হারিয়েছে। উপরন্তু দখল ও ব্যাপক দূষিত হয়েছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গত ডিসেম্বরে ৩৭,৩৯৬ নদী দখলদারের তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে তারা খুবই প্রভাবশালী ও সরকারী দলের লোক হওয়ায় তাদেরকে উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। শিল্পবর্জ্য, পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারণে অধিকাংশ নদী দূষিত হচ্ছে। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার দেশের ৫৬টি প্রধান নদীর ওপর গবেষণা করে স¤প্রতি বলেছে, ৫৬টি নদীতেই সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি দূষণের অস্তিত্ব মিলেছে, তবে তুলনামূলক বেশি দূষিত নদী গাজীপুরের লবণদহ, নরসিংদীর হাঁড়িধোয়া ও হবিগঞ্জের সুতাং। ১৯৯৬ সালে ফারাক্কা চুক্তি হয়েছে। তাতে কোন গ্যারান্টি ক্লোজ না থাকায় পানি পাওয়া যায়না ঠিক মতো। ফলে পদ্মা ও তার শাখা নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘বায়োডাইভারসিটি অ্যান্ড কনজারভেশন’ এর তথ্য মতে, ১৯৮৪ সালের তুলনায় শুকনো মৌসুমে পদ্মা নদীর আয়তন কমেছে প্রায় ৫০%,পানির গভীরতা কমেছে ১৭.৮ %, প্রবাহ কমেছে ২৬.২% ও মিঠা পানির সরবরাহ কমেছে ৯০%। ফলে বিলুপ্তির আশঙ্কায় রয়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। হুমকিতে পড়েছে পদ্মার পুরো জীববৈচিত্র্য। ফারাক্কা বাঁধের কারণেই এসব হয়েছে। অর্থাৎ ফারাক্কা চুক্তিতে এ দেশের কোন কল্যাণ হয়নি, বরং ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তাই গ্যারান্টি ক্লোজসহ ফারাক্কা চুক্তি রিভিউ করা জরুরি। তিস্তাও নাব্য হারাতে বসেছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা চুক্তি করবো করবো বলে করছে না। বিকল্প হিসাবে চীন তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের জন্য সমুদুয় অর্থ ঋণ প্রদানসহ প্রস্তাব দিয়েছে অনেকদিন আগে, যা অনুমোদন করার জন্য অনেক লেখালেখি ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক দাবি উঠেছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হয়নি এখনো। এটা ভারতের আপত্তির কারণে হচ্ছে না বলে জনমনে ধারণা। অবশ্য গত ২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরের জনসভায় বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। তাতেও মানুষ আশ্বস্ত হতে পারছে না কাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত। দেশের নৌযানের বেশিরভাগ মেয়াদউত্তীর্ণ ও লাইসেন্সহীন। চালকও অদক্ষ। তাই প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা বলে ঘোষণা করেছেন, যা বাস্তবায়নের কোন পদক্ষেপ নেই। স¤প্রতি কিছু নদী পুনঃখনন করা শুরু হয়েছে। সেটা সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পরিবেশ আন্দোলন। অর্থাৎ দেশের নৌপথ ক্রমেই সংকুচিত হতে চলেছে। চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি ও জীববৈচিত্র্য। দেশ মরুভ‚মিতে পরিণত হতে চলেছে। লয়েডস লিস্টের ‘ওয়ান হান্ড্রেড পোর্টস-২০২৩’ মতে, বাংলাদেশের নৌ অবস্থান ৬৭তম। শিপিং লাইনও দুর্বল।
গত ১৭ জুলাই, ২০২১ খবরে প্রকাশ, ‘তিন হাজার কিলোমিটারের রেল নেটওয়ার্ক রয়েছে বাংলাদেশে। পুরনো রেলপথ আর রেলসেতুতে ট্রেনের লাইনচ্যুতি নিত্য ঘটনা। সিগন্যাল ব্যবস্থা ও স্টেশনের অবকাঠামো দুর্বল। বুড়িয়ে গেছে সিংহভাগ ইঞ্জিন। নতুন কোচ এলেও রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে সেগুলো ভঙ্গুর অবস্থায় চলে যাচ্ছে। সময় মেনে না চলা, টিকিট পেতে হয়রানি, কর্মীদের অদক্ষতা ইত্যাদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে যাত্রীসেবায়। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাও দুর্বল। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রেল অবকাঠামোর মান রয়ে গিয়েছে বৈশ্বিক সূচকের তলানিতে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৯ সালের রেলের সূচকে ১০১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৬১ তম। এশিয়ায় খারাপ রেল অবকাঠামোর দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ’। বর্তমান অবস্থাও তথৈবচ। ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি খবরে প্রকাশ, দেশে মোট যাত্রী চলাচলের ক্ষেত্রে রেলের অবদান ৮%, যা স্বাধীনতা-পরবর্তীতে ছিল ৩০%। মোট পণ্য পরিবহনে রেলের অবদান ২৮% থেকে নেমে হয়েছে ১৬%-এ। গত ২৪ জুন প্রকাশিত ১ টাকা আয় করতে গিয়ে ২.৭৮ টাকা ব্যয় করছে রেল শিরোনামের খবরে বলা হয়, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয় ৮৩টি উন্নয়ন প্রকল্প। এতে ব্যয় হয় ২০,৬৬৬ কোটি টাকা। বর্তমানে চলমান রয়েছে ৩৪টি প্রকল্প, যার প্রাক্কলিত ব্যয় ১,৪১,৫০৫ কোটি টাকা। যদিও এ বিপুল ব্যয় সংস্থাটিকে লাভজনক করতে পারেনি। উল্টো বছর বছর বড় হয়েছে লোকসানের পরিমাণ। ট্রেনের গতিও বাড়েনি। ঘণ্টায় ৪০ মাইলের মতো। জনবলের অভাবে বহু স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। রেল ক্রসিংয়ের অধিকাংশই অরক্ষিত ও রেল লাইনের ধারে রয়েছে অসংখ্য বস্তি । তাই প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আমদানিকৃত ইঞ্জিনের ভার বহন করতে পারে না অনেক সেতু। তাই ইঞ্জিনগুলো বসে আছে। অবশ্য, পৃথক রেল মন্ত্রণালয় করা হয়েছে। নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে, চট্রগ্রাম-কক্সবাজার এবং পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা-যশোর রুটে। গুরুত্বপূর্ণ রেলপথগুলো ডাবল লাইনে উন্নীত করা হচ্ছে। ঢাকায় মেট্রোরেলের কিছু অংশ চালু হয়েছে। বাকীগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। রেলমন্ত্রী গত ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বলেছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের ১,১৪০.৫৩ হেক্টর জমি বেদখলে রয়েছে। তিনি গত ১৪ জুন জাতীয় সংসদে বলেন, গত ১৪ বছরে ৭৩৯.৭১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতের সাথে বন্ধ থাকা রেলপথগুলো পুন:চালু করা হয়েছে ভারতের স্বার্থে। বলা বাহুল্য, ভারতকে সব ধরণের ট্রানজিটও দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘কোয়ালিটি অব রেল-রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার শীর্ষক সূচক-২০১৯ মতে, বিশ্বের ১০১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৬১ তম। বর্তমান অবস্থাও খুব ভাল নয়। অথচ বহু দেশে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৩ থেকে ৪শ’ কিলোমিটার। চালকবিহীন ও বৈদ্যুতিক ট্রেনও চালু হয়েছে।
সড়ক পথের পরিধি আশানুরূপ নয়। মানও খারাপ। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী গত ২২ জুন জাতীয় সংসদে বলেন, বর্তমানে সারা দেশের কাঁচা সড়কের দৈর্ঘ্য ২,১২,৬৫৩ কিলোমিটার ও পাকা সড়কের দৈর্ঘ্য ১,৪০,৬৯৯ কিলোমিটার। সওজ অধিদপ্তরের সা¤প্রতিক তথ্য মতে, দেশের ১১০ জাতীয় মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৩,৯৯০ কিলোমিটার। তন্মধ্যে ৯৩.০২% ভালো ও চলনসই অবস্থায় রয়েছে। বাকীগুলো খারাপ ও দুর্দশাগ্রস্ত, যার পরিমাণ প্রায় ২৭৪ কিলোমিটার। ছোট সড়কের অবস্থাও খারাপ। খোদ রাজধানীর রাস্তার অবস্থাও ভঙ্গুর। সড়কে চলাচলের নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৫০ লাখের অধিক। বিআরটিএ’র সা¤প্রতিক তথ্য মতে, বর্তমানে সড়কে চলাচল করা বৈধ যানবাহনের ৪০.৬৬% বাস ধ্বংস যোগ্য। এছাড়া,অসংখ্য অবৈধ যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যান চলাচল করছে সব সড়কেই। ইউএন-এসকাপের প্রতিবেদন-২০২৩ মতে, অননুমোদিত যানবাহন চলাচলে এশিয়ার শীর্ষে রয়েছে খুলনায় ৫৮% ও ঢাকায় ৫৪%। এসবের বিরুদ্ধে বহুবার অভিযান চালানো হয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। তবুও চলছে নির্দ্বিধায়। চালকেরও বিরাট অংশ অদক্ষ, লাইসেন্সহীন ও চোখের সমস্যা রয়েছে। এসব কারণে সড়কে দুর্ঘটনার হার বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক। তবুও তদারকির ব্যবস্থা তেমন নেই। মটর সাইকেল নতুন মরণযানে পরিণত হয়েছে। সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদÐ ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘মহাসড়ক আইন, ২০২১’ করা হয়েছে। কিন্তু মালিক ও শ্রমিক পক্ষের বাঁধার কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। গত ১৭ মে জারীকৃত ২০ বছরের পুরনো বাস ও ২৫ বছরের পুরনো ট্রাক তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে গত ৩ জুলাই। ড্রাইভারদের স্মার্ট লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়েছে। স্থলবন্দরগুলোর অবস্থা নি¤œতর। দেশের সড়ক ও সেতু নির্মাণের ব্যয় বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক, মানও সর্বনি¤œ। বহু রাস্তা ও সেতু নির্মাণ শেষ হতে না হতেই ধসে যায়। সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতু নির্মাণের সংখ্যাও অনেক। যানজট বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক। তাতে বছরে প্রবৃদ্ধি কম হচ্ছে অনেক। প্রয়োজনীয় রাস্তা না থাকা, যেটুকু আছে তার বিরাট অংশ দখল হওয়া, ভাঙ্গাচোরা, মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন, স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকা এবং সড়ক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্বল ইত্যাদিই যানজটের অন্যতম কারণ। গত ২৪ জুলাই এক দৈনিকে প্রকাশ, দেশের সড়ক যোগাযোগ খাতের জন্য ২০০৯ সালে ২০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন শুরু করে। যার অন্যতম হচ্ছে: অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, নতুন সেতু নির্মাণ, সড়ক-সেতু পুনর্বাসন, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে ৬৬,৭৬৮ কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এ মহাপরিকল্পনাটি বর্তমানে শেষভাগে চলে এসেছে। অথচ এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ হয়েছে প্রাক্কলনের প্রায় দ্বিগুণ। যে উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য মহা পরিকল্পনা নিয়েছিল সরকার, তার বেশির ভাগই পূরণ হয়নি। দ্রæত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই অধিকাংশ শহর এবং হাট-বাজার তলিয়ে যায়। সা¤প্রতিক অতি বৃষ্টিতে সারা দেশে করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মেরিন ড্রাইভও পানির ঢেউয়ে ধসে যাচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল!বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট-২০২১ মতে, ‘বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বার্ষিক মৃত্যুহার উচ্চ আয়ের দেশগুলোর দ্বিগুণ ও সর্বোচ্চ আয়ের দেশগুলোর চেয়ে পাঁচ গুণের অধিক। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের রিপোর্ট-২০২৩ মতে, ভালো সড়কের তালিকায় বিশ্বের ১৩৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১৩তম। আইএমএফের সা¤প্রতিক তথ্য মতে, বিশ্বের চতুর্থ ধীরগতির সড়ক নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের, যেখানে যানবাহনের গড় গতিবেগ কিমি/ঘন্টা ৪১,যা সর্বোচ্চ ১০৭ (যুক্তরাষ্ট্রের), ভারতের ৫৮ ও পাকিস্তানের ৮৬। এখন বহু দেশে উড়ন্ত ট্যাক্সি, বাস, শূন্য-কার্বন নিঃসরণ ও সৌর বিদ্যুৎ চালিত যান চলছে।
দেশের আকাশ পথের অবস্থা খুব ভাল নয়। প্রয়োজনীয় বিমান ও কার্গো নেই। যেটুকু আছে, তার অধিকাংশই পুরনো। অদক্ষ পরিচালনায় বাংলাদেশ বিমান লোকসানী সংস্থায় পরিণত হয়েছে। ভাল বিমান বন্দরও নেই। স্কাইট্র্যাক্স-২০২১ মতে, বিশ্বের সেরা একশ’ বিমানবন্দরের তালিকায় বাংলাদেশের কোনো বিমানবন্দর নেই। এমনকি এশিয়ার সেরা ১০টির মধ্যেও বাংলাদেশের নাম নেই।
সার্বিকভাবে দেশের যোগাযোগ খাত পর্যাপ্ত নয়। যা আছে, তার বিরাট অংশ ভঙ্গুর। প্রায়ই যেনতেন অজুহাতে ধর্মঘট হয়। পরিবহন ব্যয়ও অত্যধিক। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্য-২০২২ মতে, গত এক দশকে বাংলাদেশে ভোক্তা মূল্য সূচকের পরিবহন ও যোগাযোগ উপখাতে ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৯৬টি দেশের মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ।
দেশের যোগাযোগ খাতের বর্ণিত দুরবস্থা উন্নয়নের অন্তরায়। যোগাযোগ খাতের সার্বিক উন্নতি করতে হবে। সহজলভ্য, সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব ও অধিক নিরাপত্তাজনক অতীতের নৌপথ পুনরুদ্ধার করার দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭
রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ
ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল
পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের
দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ
হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি
রাওয়ার নেতৃত্বে আবদুল হক ও ইরশাদ সাঈদ
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক