বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিচারকের প্রজ্ঞা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের রক্ষাকবচ
২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৮:২৩ পিএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
আমাদের রাজনীতি, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচন এবং বিচারব্যবস্থা এখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দেড় দশকে দেশে চলমান রাজনৈতিক পোলাইরাইজেশন আমাদেরকে একটি বন্ধ্যা সময়ে নিপতিত করেছে। প্রায় জনবিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দল ও জোটের রাজনৈতিক ন্যারেটিভ একটি হুজুগে পশ্চিমা ন্যারেটিভ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তা অনেকটা ফ্যাসিবাদী চারিত্র গ্রহণ করেছে। নাইন-ইলেভেন পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতির পর্শ্চিমা বয়ানের মূল উপজীব্য ছিল, ইসলামের মৌলবাদী তথাকথিত জঙ্গিবাদী সন্ত্রাস। এই বয়ানের সাথে সংশ্লিষ্ট সব মালমসলা পড়ন্ত পশ্চিমা সা¤্রাজ্যবাদকে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে টিকিয়ে রাখার একটি চরমপন্থী এজেন্ডা। মূলত মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইসরাইলী জায়নবাদ ও পশ্চিমা মিলিটারি ইন্ডাসট্রিয়াল কমপ্লেক্সের কুশীলবরা আল কায়েদা ও তালেবানের জুজু সামনে রেখে মার্কিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশকে দিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অন্তহীন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে মূলত একটি ইসলামোফোবিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। ¯œায়ুযুদ্ধ পরবর্তী নতুন বিশ্বব্যবস্থায় এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের নতুন কৌশলগত সম্পর্কের খাতিরে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ভারতের প্রভাব বেড়ে যায়। এসব দেশের আঞ্চলিক ও আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়গুলোকে ভারতের চোখে দেখা এবং ভারতের নিজস্ব স্বার্থানুকূল্যে সমাধানের পথ বের করার প্রবণতা থেকেই উপমহাদেশে চলমান রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি। একদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব, অন্যদিকে পশ্চিমাদের ব্ল্যাঙ্ক চেক পাওয়া ভারতের মনোপলি দক্ষিণ এশিয়ায় এক জটিল রাজনৈতিক বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ বছর যুদ্ধ করে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ভারতের অর্জন একেবারেই শূন্য। সেখানে পাকিস্তান ও চীনের প্রভাব একটি টেকসই ভিত্তি হয়ে উঠেছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীর পশ্চাৎপসারণের মধ্য দিয়ে দুই দশক আগে গৃহিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অন্তহীন যুদ্ধের এজেন্ডা কার্যত বাতিল হয়ে যায়। তবে সে সময়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উপর ভারতের ঠিকাদারি বাংলাদেশের সামগ্রিক অগ্রগতির পথে অনেক বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী তথা সুবর্ণজয়ন্তী পেরিয়ে বাংলাদেশ একটি শক্ত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও অনেক সম্ভাবনার জানান দিয়ে বাংলাদেশ এখন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের মুখোমুখি এক অনিশ্চিত আশঙ্কার মধ্যে হামাগুড়ি খাচ্ছে।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হচ্ছে, একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সামাজিক ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোকে পারস্পরিক ভারসাম্য ও পরিপূরক অবস্থানকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর উপর নাগরিকদের নিরাপত্তা, আইনগত সুরক্ষা, সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। বিশেষত বিচার বিভাগ এবং আমলাতান্ত্রিক নিয়ম-শৃঙ্খলাকে একটি মজবুত রাজনীতি নিরপেক্ষ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করার মধ্য দিয়েই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি গড়ে ওঠে। কোনো রাজনৈতিক ডামাডোল কিংবা প্রোপাগান্ডা মেশিনারিজম ব্যবহার করে দোর্দ- প্রতাপ কোনো শাসকও সর্বোচ্চ নিবার্হী ক্ষমতা ব্যবহার করে রাষ্ট্রের মৌল ভিত্তির এসব স্তম্ভকে ভেঙ্গে দিতে পারেনা। এর পেছনে থাকা ব্যক্তিদের আইনগত শপথ রাজনৈতিক স্বার্থের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হওয়ার কারণেই বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীকেও রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের কাছে জরিমানা গুনতে হয়। এ ক্ষেত্রে ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জো বাইডেনের কাছে হেরে যাওয়ার পর আড়াইশ বছরের মার্কিন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর বড় ধরনের আঘাত হেনেছিল। প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগে ২০২১ সালের ৫ ও ৬ জানুয়ারীতে হাজার হাজার উগ্র বর্ণবাদী ট্রাম্প সমর্থক ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের চারপাশে জমায়েত হয়ে তা দখলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। তারা ট্রাম্পের পরাজয়ের নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে তা-ব চালায়। তখনো ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে তার সমর্থকদের ক্যাপিটল বিল্ডিং দখলের উস্কানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনী শক্ত হাতে সবকিছু মোকাবেলা করলেও ক্যাপিটল হিলে বড় ধরণের সংঘাত ও রক্তপাতের ঘটনা ঘটেনি। কিছু সাধারণ দাবি দাওয়া সামনে রেখে বাংলাদেশের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম ২০১৩ সালের মে ৬ মে তারিখে ঢাকার শাপলা চত্ত্বরে একটি অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। এটি বঙ্গভবন-গণভবন কিংবা সচিবালয় ঘেরাওয়ের মত কোনো কঠোর কর্মসূচি ছিল না। হেফাজতে ইসলাম তাদের কর্মসূচি অনির্দিষ্টকাল চালিয়ে নেয়ার কোনো ঘোষণাও দেয়নি। রাতে অবস্থান করে সকালে শাপলা চত্ত্বর ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিল। রাত ১০টা বাজতেই স্ট্রীট লাইট বন্ধ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক ঘন্টার যৌথ অভিযানে ঢাকার বাণিজ্যিক এলাকাটিকে এক ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিনত করা হয়েছিল। আড়াইশ বছরের গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে ট্রাম্প সমর্থকদের মার্কিন ক্যাপিটল বিল্ডিং দখল রুখতে ঢাকার শাপলা চত্ত্বর অভিযানের শতভাগের একভাগ শক্তি প্রয়োগ করতে হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে একজন নাগরিকের রক্তের মূল্য ট্রাম্প বা বাইডেনের ক্ষমতার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে সেখানেও উগ্র বর্ণবাদ এখনো সক্রিয় আছে। বর্ণবাদী পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য, এমনকি পুরো পশ্চিমা বিশ্বসহ সারাবিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ¦ ‘ব্ল্যাক লাইফ ম্যাটার্স’ আন্দোলনের ঢেউ লেগেছিল।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্বচ্ছ নির্বাচনে হেরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে আলাদা আলাদা ভাবে ৬৩টি নির্বাচনী মামলা করেছিলেন। ট্রাম্পের আইনজীববীরা যেসব আদালতে মামলা করেছিলেন, তার অনেকগুলো আদালতের বিচারক ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে দলীয়ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত ও পছন্দনীয় ব্যক্তি। কোনো বিচারকই ট্রাম্পের মামলায় তার পক্ষে একটি রায়ও দেয়নি। দলীয়ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত কোনো বিচারক যদি তার শপথ ও আইনের শাসনের কঠোর নিরপেক্ষতা ভুলে গিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগের পক্ষে রায় দিত, তাহলে মার্কিন গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি ন্যাক্কারজনক কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি হতো। আমাদের দেশের বিচারপতিদের রাজনৈতিক বক্তব্য এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। ক্ষীণ দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি সামনে এনে তাদের কেউ কেউ নিজেদেরকে শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ হিসেবেও আখ্যায়িত করছেন। এদের কাছে দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনের চেয়ে বিশেষ দলের রাজনৈতিক স্বার্থ যেন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। হাইকোটের দুই বিচারপতির বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আমাদের বিচার ব্যবস্থা ও বিচারকদের ব্যক্তিত্ব ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে এসে হাইকোর্টের একজন বিচারপতি জনসম্মুখে বলছেন, ‘এ দেশটা রাজাকারদের বসবাসের জন্য নয়’। আর এখন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারিত হচ্ছে, রাজনৈতিক বিবেচনায়। মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডারকেও রাজনৈতিক বিবেচনায় রাজাকার, পাকিস্তানী চর আখ্যা দেয়া হচ্ছে! জাতির কলঙ্ক মোচনের নামে যেসব রাজনৈতিক বিচার গত দেড় দশকে হয়েছে, তার কোনোটিই আইনগত ও রাজনৈতিক বিতর্ক ও পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেনি। প্রবল স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের সময়ও কোথাও কোথাও আদালতের বিচারকদের নিরপেক্ষ ভূমিকার অনেক নজির খুঁজে পাওয়া যায়। সামরিক বাহিনীর দ্বারা প্রবলভাবে প্রভাবিত পাকিস্তানের আদালতেও ইমরান খানের জামিন ও রাজনীতির নতুন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। প্রবল হিন্দুত্ববাদী বিজেপি শাসিত ভারতের আদালত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ন্যায়বিচার পেয়ে রাজনীতিতে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন এবং তিনি পার্লামেন্টে তার সদস্যপদও ফিরে পেয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে পাশ কাটিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে একটি রায় আদায় করা সম্ভব হয়নি। তবে ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে পাশ কাটিয়ে এখন প্রায়শ বিভিন্ন আদালতে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেখা যাচ্ছে। রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক-গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যখন ক্ষমতাদর্পী প্রবল শাসকের হাতে একাকার হয়ে যায়, তখন বিচারকের স্বাধীনতা ও বিবেকবান রায় জাতিকে নতুন আশার আলো দেখাতে পারে। এ ক্ষেত্রেও ভারতের সাবেক আমলা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার টি এন সেশান এবং সাহসী সাবেক বিচারপতি মার্কেন্ডি কাটজুর দৃষ্টান্ত রয়েছে। আমাদের দেশে এমন দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে।
আমাদের দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট, অনিশ্চয়তা, বিদেশি হস্তক্ষেপ এবং আবারো অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চেপে বসার যে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে, তার পেছনে রয়েছে , কতিপয় বিচারকের বিবেকহীন ও অবিমৃশ্যকারী বিতর্কিত রায়। আমাদের সংবিধান বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য নিশ্চিত করলেও গত ৫ দশকেও বিচার বিভাগ সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা লাভ করেনি। অন্যভাবে বলতে গেলে প্রশ্ন থেকে যায়, আমাদের বিচার বিভাগ তার স্বাধীনতা ও সক্ষমতার চর্চা করতে চায় কি না? বিচার বিভাগের আইনগত স্বাধীনতার চেয়ে এর সাথে জড়িত ব্যক্তি তথা বিচারকদের ব্যক্তিত্ব শিক্ষা, প্রজ্ঞা, মেধা, দক্ষতা, দেশপ্রেম ও সততা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিকভাবে পথ হারানো সমাজ ও রাষ্ট্র যখন প্রবল প্রতাপশালী স্বৈরশাসকদের দ্বারা অনিশ্চিত অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে থাকে, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের হুইসেল ব্লোয়ার মুখগুলো বিভিন্ন সরকারি বাহিনীর দ্বারা স্তব্ধ হতে থাকে, তখন সর্বোচ্চ আদালতই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যে রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে রক্ষায় এগিয়ে এসে ভূমিকা রাখতে পারে। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তারচেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, একজন বিচারকের নৈতিক মান, শিক্ষা, চারিত্রিক দৃঢ়তা, দেশপ্রেম ও ন্যায়বিচারের প্রতি তার ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক কমিটমেন্ট। সরকারি দলের একজন প্রভাবশালী নেতার দেয়া একটি বক্তব্য সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি বলছেন, কিভাবে তারা একজন প্রধান বিচারপতিকে দেশছাড়া করেছেন। সেই দেশত্যাগী প্রধান বিচারপতি বলেছেন, যে দেশে প্রধান বিচারপতি বিচার পাননা, সে দেশে সাধারণ মানুষের ন্যয়বিচার পাওয়া অসম্ভব। বিচার বিভাগ ও বিচারপতিরা যদি রাজনৈতিক বিতর্ক ও গতানুগতিক রাজনৈতিক বিভক্তি থেকে দেশ ও জাতির স্বার্থে দৃঢ় ও ন্যায়ানুগ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে না পারে, তাহলে আমাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। দলকানা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ ও অবরুদ্ধ জনমত ফ্যাসিবাদের উত্থানের পথকে প্রশস্ত করে তোলে। জাতির এই ক্রান্তিকালে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্তরণ নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই দেশের বিচার বিভাগের সামগ্রিক অবস্থার দিকে রাষ্ট্র ও জনগণের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!
ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র
স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?
চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১
পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি
যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত
১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান
জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন