জঘন্য অপকর্ম থেকে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে
২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৮:২৩ পিএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
আমাদের সমাজে গোপনে এবং ধীরে ধীরে সমকামিতার মত ঘৃণিত পাপাচার ও ব্যভিচার বিস্তার লাভ করছে। ব্যক্তিগত যোগাযোগের মধ্য দিয়ে স্থাপিত গোপন সম্পর্ক এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তার লাভ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সমকামী নারী ও পুরুষরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন নামে আলাদা আলাদা ক্লাব বা গ্রুপ খুলে তাদের কার্যক্রম ও তৎপরতার জানান দিচ্ছে। বিভিন্ন সাংকেতিক ভাষায় তাদের যোগাযোগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসনে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ একটি ঘৃণিত কাজ প্রকাশ্যে ও গোপণে বিস্তার লাভ করছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। অবাধ তথ্য প্রবাহের এই যুগে পশ্চিমা সমাজে এলজিবিটি, লেসবিয়ান বা সমকামিদের তৎপরতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়া এবং কোনো কোনো দেশে আইনগত স্বীকৃতি পাওয়ার প্রভাব এখন আমাদের যুব সমাজেও দেখা দিতে শুরু করেছে। বিশেষত প্রতিবেশী দেশ ভারতের হাইকোর্টে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়ার একটি বিতর্কিত রায়ের প্রভাব ভারত থেকে বাংলাদেশে পড়ছে বলে সমাজবিদরা মনে করছেন। পশ্চিমা ফান্ডিংয়ে পরিচালিত কিছু এনজিও বাংলাদেশে সমকামিতার মত পাপাচারকে উৎসাহিত করতে নেপথ্য ভূমিকা রাখছে বলে জানা যায়। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এই পাপাচারের অবাধ তৎপরতা চলতে দেয়া যায় না। সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে এখনই কঠোর উদ্যোগ না নিলে এ ধরনের তৎপরতা এক সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শুধু ইসলাম ধর্মেই নয়, প্রায় সব প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলোতে সমকামিতাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র কোরানে হযরত লুত (আ.)- এর জাতির ধ্বংসের কারণ হিসেবে সে জাতির অশ্লীলতা, ব্যভিচার ও সমকামিতার মত পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তাদের এই মহাপাপের কারণে ধ্বংস করে দিয়েছেন। ইসলামি আইনগত অনুশাসনে সমকামীতার শাস্তি মৃত্যুদ- হিসেবে বিবেচিত হয়। হাদিস শরীফেও এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রয়েছে। ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত আমাদের সমাজ সমকামিতার মত পাপাচারকে সমর্থন বা স্বীকৃতি না দিলেও তথ্য প্রযুক্তির সুবাদে এবং পশ্চিমা অপসংস্কৃতির দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইমু, হোয়াটস অ্যাপের মত প্ল্যাটফর্মে সমকামী ছেলে-মেয়েরা নিজেদের পার্টনার খুঁজে নিচ্ছে। একইভাবে আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর বিকৃত মানসিকতার তরুণ-তরুণীর মধ্যে নাস্তিকতাকেও এক ধরণের অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে নেয়ার প্রবণতা বিদ্যমান। এদের বেশির ভাগকে দেশের বাইরে থেকে দেশ ও ধর্মবিরোধী নানা অপপ্রচারে লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। ধর্মপ্রাণ মানুষের কঠোর অবস্থানের কারণে তারা প্রকাশ্য তৎপরতা চালানোর সাহস না পেলেও পরিবর্তিত বৈশ্বিক-সামাজিক বাস্তবতায় সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সমকামিতা ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা আমাদের সমাজের ধর্মীয় রীতিনীতি, মূল্যবোধ ও অনুশাসন জন্য অশনি সংকেত।
আমরা জানি ঔদ্ধ্যত্ব, সীমা লঙ্ঘন ও পাপাচারের কারণে যুগে যুগে বিভিন্ন জাতির ধ্বংস ডেকে এনেছিল। পবিত্র কোরআনে সমকামিতা ও অশ্লীলতার কারণে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর উত্তর পয়গাম্বর হজরত লুত আ: এর জাতির ধ্বংসের কথা যেমন বলা হয়েছে, একইভাবে পাপাচার ও খোদাদ্রোহীতার কারণে আদ ও সামুদ জাতির ধ্বংসের কথাও উল্লেখিত হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সুরা আরাফের ৭২ নম্বর আয়াতে আদ জাতির ধ্বংসের কারণ বর্ননা করা হয়েছে। আজকের বিশ্ব একই প্রকার বাস্তবতার সম্মুখীন। ভোগবাদী সভ্যতার উত্তুঙ্গ বাড়াবাড়ির ফল হিসেবে ক্লাইমেট চেঞ্জ ও নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এইডস, করোনাভাইরাসসহ প্রতিকূল বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছে মানব সমাজ। পশ্চিমাবিশ্বে সমকামিরা একে গর্ব হিসেবে নেয়। এটা তাদের বায়োলোজিক্যাল ডিজঅর্ডারের কারণেও হতে পারে। যখন কোনো দেশে পাপাচার বেশি হয়ে যায়, তখন সে দেশে আল্লাহর তরফ থেকে গজব নেমে আসে। এ গজব যেমন প্রাকৃতিকভাবে আসে, তেমনি মনুষ্যসৃষ্ট হিসেবেও আসে। উন্নত বিশ্বের কোনো কোনো দেশে যেভাবে প্রাকৃতিক ও অস্বাভাবিক বিপর্যয় দেখা যায়, তা ঐ পাপাচারের কারণে হতে পারে বলে ধর্মপ্রাণ মানুষ মনে করে। তবে আমাদের দেশে যেভাবে প্রকাশ্যে ক্লাব খুলে এ প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তা খুবই শঙ্কার বিষয়। এটা সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে চরম অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেবে। প্রকৃতির স্বাভাবিক প্রবণতা এবং পরমকরুণাময় আল্লাহর নির্দেশিত পথকে অস্বীকারের পাশাপাশি সমকামিতার মত অবৈধ ও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ কর্মকা-ের ফলে পৃথিবীতে মহাবিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষার বিষয়গুলোকে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিকৃত যৌনাচার ও সমকামিতার মত ব্যাধির বিস্তার রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার ইউনিটের তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারের মা-বাবা, অভিভাবক ও সমাজের বয়জ্যেষ্ঠদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। উঠতি বয়সী ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া সন্তান ও নিকটাত্মীয়দের গতিবিধির ওপর খেয়াল রাখার পাশাপাশি সন্তান ও পোষ্যদের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে উৎসাহিত করতে হবে। অশ্লীলতা, বিকৃত যৌনাচার এবং সমকামিতার মতো অপরাধের প্রচলিত শাস্তির বিধান প্রয়োগে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথেষ্ট তৎপর হতে হবে। সকলের সম্মিলিত তৎপরতা ও সচেতনতায় সমাজ থেকে এ ধরণের ঘৃণ্য অপকর্ম ও পাপাচার রোধ করতে হবে।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ
ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি
এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!
ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র
স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?
চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১
পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি
যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত
১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান
জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন