স্পারসোর খবর কী?

Daily Inqilab সরদার সিরাজ

৩০ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৩২ পিএম | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম

২৩ আগস্ট ভারত চন্দ্র জয় করেছে। তার চন্দ্র বিজয় সমগ্র ভারতবাসীকে আনন্দে আত্মহারা করেছে। বিশ্ববাসীও ভারতের বিজ্ঞানীদের এই ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য ব্যাপক অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিষয়টি টক অব দ্য ওয়ার্ল্ডে পরিণত হয়েছে। চাঁদে অবতরণ করার পর থেকে বিক্রমে থাকা মুন রোভার ‘প্রজ্ঞান’ অবিরাম নানা ছবি ও ডেটা পাঠাচ্ছে এবং নানা পরীক্ষা চালাচ্ছে। এ অভিযানে তাদের প্রায় ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে। এর আগে বিক্রম যাত্রা শুরু করে গত ১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে। এ বিজয়ের ফলে ভারত বিশ্বের এলিট ‘স্পেস ক্লাবে’ জায়গা অর্জন করেছে। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর এটাই প্রথম চন্দ্র অভিযান নয়। এর আগে ২০০৮ সালে চন্দ্রযান-১ এবং ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করেছিল। কিন্তু এ দু’বারই ব্যর্থ হয়েছিল। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের চন্দ্রাভিযান সফল হয়েছে। ১৯৬৯ সালে চাঁদে প্রথম পা রাখেন মার্কিন নভোচারী নীল আর্ম স্ট্রং। তারপর থেকে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন বিশ্ববাসীর কাছে। রাশিয়ার দ্বিতীয় চন্দ্রাভিযান লুনা-২৫ ব্যর্থ হয়েছে গত ১৬ আগস্ট বলে দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস জানিয়েছে। এ দিন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় লুনা-২৫। এটি যাত্রা করেছিল গত ১১ আগস্ট। মহাকাশযানটির চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে হিমায়িত পানির খোঁজ চালানোর টার্গেট ছিল। বৈরী আবহাওয়ার কারণে তৃতীয়বার চাঁদে অভিযান স্থগিত করেছে জাপান। গত ২৮ আগস্ট চন্দ্রযান এইচ২-এর উড়ার কথা ছিল বলে জানিয়েছেন জাপানের মহাকাশ সংস্থা জাক্সার কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

ইসরো চন্দ্র বিজয়েই ক্ষান্ত হয়নি, সংস্থাটির এখন দ্বিতীয় টার্গেট সূর্য অভিযান বলে জানিয়েছেন এর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। এ প্রকল্পের নামকরণ করা হয়েছে আদিত্য-১, যা আগামী ২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করবে। সূর্যের কাছাকাছি মহাকাশযানটির পৌঁছাতে সময় লাগবে ১২০ দিন বলে ইসরো জানিয়েছে। সর্বোপরি সংস্থাটি ২০২৫ সাল নাগাদ প্রথম মহাকাশচারীদের নিয়ে ‘গগনযান অভিযান শুরু করবে’ বলে মি. সোমনাথ জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভবিষ্যতে মনুষ্য বসতি তৈরির সম্ভাবনা আছে।

চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের আনন্দে বিভোর হয়ে অনেক ভারতীয় কিছু উদ্ভট মন্তব্য করেছেন। যেমন: বিক্রম যে স্থানে ল্যান্ড করেছে, সে জায়গাটির নাম ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’ বলে ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার সর্বভারতীয় সভাপতি সন্ন্যাসী চক্রপাণি মহারাজ চাঁদকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা এবং শিবশক্তি পয়েন্টকে চাঁদের রাজধানী করার দাবি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালে সন্ন্যাসী চক্রপাণির আহ্বানে সাড়া দিয়ে করোনার প্রতিষেধক হিসেবে গোমূত্র খেয়ে অসংখ্য হিন্দু মরণাপন্ন হয়েছিলেন!

বিশ্বের বহু দেশের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রয়েছে, যারা সার্বক্ষণিক বিভিন্ন ধরনের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এমনকি মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রেরণের হিড়িক পড়েছে, যা থেকে প্রতিদিন শত কোটি মানুষ টেলিভিশন দেখা, স্মার্ট ফোনের ব্যবহার কিংবা অনলাইনে বিভিন্ন বিল প্রদানসহ নানা সেবা নিচ্ছেন। স্যাটেলাইট ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে ৫৮৫টি করে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হয়েছে। ২০২২ সালের শুরুতে কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজারের ওপরে। বর্তমানে সে সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ২০২১ সালে প্রকাশিত এসআইএর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহাকাশ অর্থনীতির আকার এখন ৩৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। ভবিষ্যতে মহাকাশ অর্থনীতি আরও বড় ও শক্তিশালী হবে। সিটি গ্রুপের মতে, ২০৪০ সালের মধ্যে মহাকাশ শিল্পের বার্ষিক আয় ১ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছবে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচটি মহাকাশ সংস্থা মিলে ১৯৯৮ সালে ২৪ বছর মেয়াদী আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) স্থাপন করেছে। অনেক দেশের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা সেখানে গিয়ে নানা পরীক্ষা করেছেন ও করছেন। নাসা বলেছে, ২০৩১ সালে আইএসএস পৃথিবীতে ভেঙ্গে পড়বে। অন্যদিকে, চীন নিজস্ব উদ্যোগে একটি মহাকাশ স্টেশন তৈরি করেছে কিছুদিন আগে। উপরন্তু সেখানে একটি মহাকাশ ক্লাসরুম স্থাপন করেছে। চীনা নভোচারীরা সেখান থেকে ক্লাস নিচ্ছেন, যা চায়না মিডিয়া গ্রুপ সরাসরি সম্প্রচার করছে। নভোচারীরা মহাকাশ স্টেশনে তাদের জীবনযাপন ও বিভিন্ন কার্যক্রমের বর্ণনা দিচ্ছেন। রাশিয়ারও একটি মহাকাশ স্টেশন ছিল, যা ২০০১ সালে ভেঙ্গে পড়েছে পৃথিবীতে। মহাকাশ বাজারের বড় অংশ স্যাটেলাইট। মহাকাশ বিনোদনেরও কেন্দ্র হয়ে উঠছে। প্রথমবারের মতো রাশিয়ার মহাকাশে শুট করা ফিচার ফিল্ম ‘দ্য চ্যালেঞ্জ’ গত ২০ এপ্রিল, ২৩ দেশটির একটি সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একটি সিনেমার শুটিং করবে মহাকাশে। ইউরোপের এক নারী নভোচারী মহাকাশে টিকটক ভিডিও করে প্রকাশ করেছেন। মহাকাশ আইনও আছে।

ভারতের ইসরোর সাফল্যের পর দেশে সর্বাধিক আলোচ্য বিষয় হচ্ছে, স্পারসোর সাফল্য কী? স্পারসো হচ্ছে, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান। এর যাত্রা শুরু ১৯৬৮ সালে এপিটি গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে। তারপর ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের মহাকাশ ও বায়ুম-লীয় গবেষণা কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ ল্যান্ডসেট প্রোগ্রামকে একীভূত করে স্পারসো গঠন করা হয়। ১৯৮৫ সালে স্পারসোকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যাস্ত করা হয়। স্পারসো নিয়ে বিস্তারিত খবর এক দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে গত ২৪ আগস্ট, যার সারাংশ হচ্ছে: দীর্ঘদিনেও স্পারসোর নিজস্ব কোনো স্যাটেলাইট প্রযুক্তি প্রোগ্রাম, মহাকাশ উৎক্ষেপণ স্টেশন, কক্ষপথ, নিজস্ব স্যাটেলাইট এবং এ সংক্রান্ত প্রযুক্তি সম্পর্কিত গবেষণাগার করা হয়নি। সংস্থাটি পরিচালনার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড রয়েছে, যার একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য। এছাড়া, সংস্থাটির ১৬টি কারিগরি বিভাগ, পাঁচটি সহায়ক শাখা এবং সাভারে অবস্থিত একটি আঞ্চলিক দূর অনুধাবন কেন্দ্র রয়েছে। মোট ১৬৯টি অনুমোদিত পদ রয়েছে, যার বিপরীতে ৯১ জন কর্মরত আছেন। স্পারসো গবেষণা ও প্রায়োগিক প্রতিষ্ঠান হলেও প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পর ২০১০ সালে প্রথম গবেষণার জন্য তহবিল দেওয়া শুরু করে সরকার। এর আগে বিজ্ঞানীরা স্বতন্ত্রভাবে কিংবা কোনো প্রকল্পের আওতায় গবেষণা করতেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বরাদ্দ বাড়লেও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সংকটের কারণে তা ভালোভাবে গবেষণায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। গবেষণার জন্য অন্য দেশের স্যাটেলাইটের ডেটা ব্যবহার করা হয়। কখনো কিনে, কখনো বিনা পয়সায় বিদেশি স্যাটেলাইট থেকে ডেটা নেওয়া হয়। ফলে বছরে গড়ে একটি করেও গবেষণা হচ্ছে না। অর্থাৎ বিদেশি অনুদানে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকা সাধারণ মানের একটি গ্রাউন্ড স্টেশন (স্যাটেলাইট থেকে বার্তা গ্রহণ-সংরক্ষণ কেন্দ্র) ছাড়া দেশে মহাকাশ প্রযুক্তির অবকাঠামো নেই। স্পারসোর চেয়ারম্যান হিসেবে বিসিএস ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে আগে এমনও চেয়ারম্যান যোগ দিয়েছেন, যারা সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসনে লেখাপড়া করেছেন। প্রশাসন ক্যাডার থেকে তারা আসায় মহাকাশ বিষয়ে তাদের জ্ঞান থাকে না। এসব নানা কারণে প্রতিষ্ঠার ৪২ বছরেও স্পারসো সত্যিকারের একটি জাতীয় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে বৈশ্বিক মহাকাশ অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবদান নেই বললেই চলে। স্পারসোতে বর্তমানে সরকারের কোনো প্রকল্প চলমান নেই।

উল্লেখ্য যে, দেশের প্রথম ও একমাত্র স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করা হয় ২০১৮ সালের ১২ মে, যার সাথে স্পারসোর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি নির্মাণ, উৎক্ষেপণ হয়েছে অন্য দেশে। স্থানটিও রাশিয়ার কাছ থেকে ভাড়া নেয়া। ব্যয়ও বিদেশি ঋণের টাকায়। দ্বিতীয়ত: এটি উৎক্ষেপণের পর ব্যাপক ঢাক ঢোল পেটানো হলেও এর রিটার্ন কী তা ভুল করেও বলা হয়নি, এখনো বলা হচ্ছে না। এদিকে, এর ভাড়ার মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসছে।

অবশ্য, স্পারসোর উন্নয়নের জন্য ২০২০ সালে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের রূপকল্প অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে দুটি স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন এবং দেশের উপযোগী ভূপর্যবেক্ষণ উপগ্রহের উন্নয়ন ও কক্ষপথে স্থাপনের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করা। ২০২৪ সালের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু এসব বাস্তবায়ন করার জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করেছিল সংস্থাটি, যা এখনো ঝুলে আছে। ফলে মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজে হাত দেওয়ার বিষয়টি দূর অতীত। মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনায় রয়েছে ভূপর্যবেক্ষণ উপগ্রহ উন্নয়নের লক্ষ্যে পরীক্ষাগার স্থাপন, মহাকাশ পর্যবেক্ষণ টেলিস্কোপ স্থাপন, দেশের নিজস্ব দূর অনুধাবন স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপন এবং মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নয়ন, ব্যবহার ও প্রয়োগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা প্রভৃতি। আর নিজস্ব প্রযুক্তিতে ভূপর্যবেক্ষণ উপগ্রহের উন্নয়ন ও কক্ষপথে স্থাপনসহ বেশ কিছু বিষয় রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায়। স্পারসোর সাবেক এক কর্মকর্তা বলেন, স্পারসোর দাঁড়ানোর জন্য পরিবেশ নেই। এটা যে বৈজ্ঞানিক সংস্থা, এটা সরকার হয়তো বোঝে না বা ইচ্ছার ঘাটতি রয়েছে। বৈজ্ঞানিকভাবে একে বিকশিত করার চেষ্টা করলে দাঁড়াবে, নাহলে এমনই থাকবে। অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশ অর্থনীতির যে বিশাল আকার দাঁড়াবে, তার ন্যূনতম অংশ ধরতে চাইলে প্রথম দিকের বিনিয়োগগুলো সরকারকে করতে হবে। পরে নীতিমালা করে দিতে হবে। তারপর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে এ শিল্প বিকশিত হবে। যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ কর্মসূচিতে এক ডলার বিনিয়োগ করে আট ডলারের অর্থনৈতিক সুবিধা পায়।

অর্থাৎ স্পারসোর তেমন কোনো সাফল্য নেই। তথা অংকুরেই রয়ে গেছে। অথচ, বর্তমান সময় হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। এসব ক্ষেত্রে যারা যত অগ্রগামী হচ্ছে তারা তত টেকসই উন্নতি করছে। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে আমাদের। নতুবা কাক্সিক্ষত উন্নতি হবে না। কাক্সিক্ষত উন্নতির জন্য এবং বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এবং মহাকাশ বাণিজ্যের অংশীদার হওয়ার জন্য স্পারসো প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে হবে সরকারকে। উপরন্তু অবিলম্বে অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী লোক নিয়োগ করতে হবে। সেখানে বেতন-ভাতা, সুবিধাদি ও মর্যাদা বাড়ানো হলে দক্ষ লোকের অভাব হবে না। উপরন্তু স্বল্পমেয়াদীর প্রস্তাবিত প্রকল্প দ্রুত অনুমোদন করা দরকার। পাশাপাশি জাতিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মনস্কা করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে ব্যাপকভাবে। দ্বিতীয়ত: বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের মূল্যায়ন করতে হবে। নতুবা তারা দেশে থাকবে না। বিদেশে চলে যাবে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ বিদেশে চলে গেছেন। মনে রাখতে হবে যে, প্রশাসনিক কাজ আর বৈজ্ঞানিক কাজ এক নয়। প্রশাসনিক কাজ হচ্ছে ক্লারিকাল তথা সাধারণ কাজ। আর বৈজ্ঞানিক কাজ হচ্ছে সর্বোচ্চ মেধা, সাধনা ও শ্রমের কাজ। তেমনি অন্য স্পেশালাইজড শিক্ষা এবং কাজও। তাই স্পেশালাইজড শিক্ষিতদের সর্বাধিক মূল্যায়ন হওয়া আবশ্যক। কিন্তু তা হচ্ছে না। বাস্তবে ঘটছে বিপরীত। প্রশাসনের লোকদের সুবিধাদি ও ক্ষমতা বেশি। তাই বিশেষায়িত শিক্ষিতদের অনেকেই প্রশাসনের চাকরিতে ঢুকছেন। এতে দেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এটা আইনগতভাবে বন্ধ করা আবশ্যক। নতুবা অদূর ভবিষ্যতে দেশে বিশেষায়িত পেশাজীবীর আকাল সৃষ্টি হবে।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বিহারীরা কেমন আছে
পিলখানা হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্ব্যর্থহীন উচ্চারণ
বিহারিরা কেমন আছে
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
আরও

আরও পড়ুন

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি  বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

২০২৫ সালে নিম্নমাধ্যমিক-মাধ্যমিকে ৭৬ দিনের ছুটির তালিকা প্রকাশ

২০২৫ সালে নিম্নমাধ্যমিক-মাধ্যমিকে ৭৬ দিনের ছুটির তালিকা প্রকাশ

খুলনা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার পথে যুক্ত হচ্ছে ট্রেন জাহানাবাদ

খুলনা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার পথে যুক্ত হচ্ছে ট্রেন জাহানাবাদ

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিন

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিন

আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং এর হামলায় আহত ৩

আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং এর হামলায় আহত ৩

মাদারীপুরে পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

মাদারীপুরে পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব হলেন সরওয়ার আলম

প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব হলেন সরওয়ার আলম

তোমাদের হাতে উড়তে থাকবে সমৃদ্ধ স্বনির্ভর  বাংলাদেশের বিজয় কেতন - সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোঃ মঈন খান

তোমাদের হাতে উড়তে থাকবে সমৃদ্ধ স্বনির্ভর বাংলাদেশের বিজয় কেতন - সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোঃ মঈন খান

দৌলতপুরে পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান : গ্রেফতার-২

দৌলতপুরে পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান : গ্রেফতার-২