পর্যটন খাতের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উদ্যোগ নিতে হবে
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১৫ পিএম | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
চলতি বছর বৈশ্বিক জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৩% বলে আইএমএফ জানিয়েছে। বৈশ্বিক আয়-উন্নতি বৃদ্ধির সাথে সাথে পর্যটন খাতেও উন্নতি শুরু হয়েছে। ডব্লিউটিটিসি সম্প্রতি বলেছে, করোনা মহামারির পর মানুষ আবার ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছে। চলতি বছরের শেষ দিকে বৈশ্বিক পর্যটন খাত মহামারির আগের পর্যায়ে ফিরে যাবে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩৩ সালের মধ্যে বৈশ্বিক পর্যটন খাতের আকার দাঁড়াবে ১৫.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৫০% বেশি। উপরন্তু তখন বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ খাতের হিস্যা দাঁড়াবে ১১.৫%। এছাড়া, তখন পর্যটনখাতে ৪৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অর্থাৎ বৈশ্বিক কর্মসংস্থানের প্রতি নয়জনের একজন জড়িত থাকবে পর্যটনের সঙ্গে। ২০১৯ সালে পর্যটন খাতে ৩৩.৪০ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছিল। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট জুলিয়া সিম্পসন বলেছেন, বর্তমানে পর্যটন খাতের বৃদ্ধির হার ৫.১%। ডব্লিউটিটিসি গত ২৭ এপ্রিল বলেছে, মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাতের অন্যতম বৈশ্বিক পর্যটন। শুধু ২০২০ সালেই খাতটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দিক দিয়ে ১৩ লক্ষ কোটি ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দাবস্থার তুলনায়ও ১১ গুণ বেশি। সে বছর সাত কোটি মানুষ চাকরি হারিয়েছে। পরে ২০২১ সালে ১.১০ কোটি ও ২০২২ সালে ২.১৬ কোটি কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধার হয়। মহামারির আগে কর্মসংস্থান ছিল ৩৩.৪০ কোটি। বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২৯.৫০ কোটি। সংস্থাটির পূর্বাভাস মতে, ভ্রমণ ও পর্যটনের ক্ষেত্রে চীন ২০৩২ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে। ২০২২ সালে দেশটির অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। ২০৩২ সালের মধ্যে চীনের জিডিপিতে এ খাতের অবদান ৩.৯০ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে পারে, যা ২০২১ সালে ছিল ৮১,৪৩০ কোটি ডলার।
সাম্প্রতিক সময়ে মানুষ ভ্রমণের জন্য ধরিত্রীর মহাকাশ, চাঁদ, মঙ্গলসহ নানা গ্রহ-উপগ্রহের পথে পা বাড়িয়েছে। কিছু মানুষ মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন। বাণিজ্যিকভাবে অসংখ্য মানুষের মহাকাশে ভ্রমণে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। সে জন্য বহু মহাকাশযান তৈরি করছে বিভিন্ন কোম্পানি। টিকেট কাটাও হয়ে গেছে। সর্বোপরি মহাকাশ এখন অর্থনৈতিক কর্মকা-ের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে প্রচ- প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্বখ্যাত ধনকুবের জেফ বেজোস, রিচার্ড ব্যানিসোন ও ইলন মাস্ক অগ্রগামী। যুক্তরাষ্ট্রের পর চীন ঘোষণা করেছে, সে ২০২৫ সাল থেকে মহাকাশ পর্যটন চালু করবে। তাতে যাত্রি প্রতি ব্যয় হবে ২-৩ মিলিয়ন ইউয়ান। সর্বোপরি মানুষ সাগর ও মহাসাগরের তলদেশেও যাচ্ছে অজানাকে জানার, অদেখাকে দেখার জন্য। সম্প্রতি টাইটনিকের ধ্বংসাবশেষ দেখার জন্য কয়েকজন মহাসাগরের তলদেশে গিয়ে সকলেই মৃত্যুবরণ করেছে সংশ্লিষ্ট যান ধ্বংস হয়ে। গ্রিসের ইজিয়ান সাগরের নিচে তৈরি করা হয়েছে যাদুঘর, যাতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে প্রাচীন যুগের নানা জিনিসপত্র, যা দেখার জন্য অসংখ্য মানুষ সেখানে গমন করে। দুবাইয়ে রয়েছে গভীর সুইমিং পুল, যা পানির ৬০ ফুট গভীরে অবস্থিত। উপরন্তু দেশটি পর্যটনকেন্দ্র পাম জাবেল আলিতে কৃত্রিম চাঁদ স্থাপনের জন্য ৫০০ কোটি ডলারের প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা আগামী ৪৮ মাসের মধ্যেই শেষ হবে।
বাংলাদেশের পর্যটন খাতের অগ্রগতি তেমন নেই! যে সামান্য মানুষ দেশের ভেতরে ভ্রমণ করে, তার অধিকাংশই দেশীয়। বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা নগণ্য। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ভ্রমণ ও পর্যটন উন্নয়ন সূচকে-২০২২ মতে, ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১০তম (২০১৯ সালে ছিল ১১৩তম)। এর আগে প্রকাশিত সংস্থাটির সূচকে ১৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২০১৭ সালে ১২৫তম ও ২০১২ সালে ১১৮তম। ওই তালিকায় ভারত ৩৪তম, শ্রীলঙ্কা ৭৭তম ও নেপাল ১০২তম। যা’হোক, সংস্থাটির সূচক-২০২২ মতে, বাংলাদেশের জিডিপিতে ভ্রমণ ও পর্যটন খাতের অবদান ২.২% ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান ১.৮%। বাংলাদেশের চেয়ে দুর্বল অবকাঠামো নিয়েও নেপালের জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ৯%। সংস্থাটি বলেছে, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পর্যটনখাত যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও পর্যটনশিল্প নবজাতক পর্যায়েই রয়ে গেছে। সংস্থাটির অন্য এক রিপোর্ট মতে, ২০২০ সালে জিডিপিতে পর্যটনখাতের অবদান ছিল সিঙ্গাপুরে ৭০%, তাইওয়ানে ৬৫%, হংকংয়ে ৫৫%, ফিলিপাইনে ৫০% ও থাইল্যান্ডে ৩০%। এমনকি অস্ট্রিয়ার ছোট্ট শহর হলস্ট্যাট, যার জনসংখ্যা মাত্র ৭০০; কিন্তু সেখানে ভরা মৌসুমে দৈনিক পর্যটকের সংখ্যা দাঁড়ায় গড়ে ১০ হাজার।
পর্যটন খাতে বাংলাদেশের আয় সার্কদেশগুলোর মধ্যেও কম। বর্তমানে এই খাত থেকে বার্ষিক আয় করে মার্কিন ডলারে বাংলাদেশ প্রায় ৭৬.১৯ মিলিয়ন, ভারত ১০,৭২৯ মিলিয়ন, মালদ্বীপ ৬০২ মিলিয়ন, শ্রীলঙ্কা ৩৮৫ মিলিয়ন, পাকিস্তান ২৭৬ মিলিয়ন ও নেপাল ১৯৮ মিলিয়ন। খবরে প্রকাশ, ২০২১ সালে বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক এসেছে মাত্র ১,৩৫,১৮৬ জন। তবে ইউএসএইড এর মতে, বাংলাদেশে যেসব বিদেশি পর্যটক আসে তাদের মধ্যে ভ্রমণের উদ্দেশে আসে মাত্র ৫%। বাকিরা বাংলাদেশের গার্মেন্টশিল্প, উন্নয়নপ্রকল্প ও এনজিওর কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাজে আসে। গত ১২ নভেম্বর এক দৈনিকে প্রকাশ, বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলোতে প্রতি বছর ভ্রমণ করছে প্রায় দেড় কোটি পর্যটক। তন্মধ্যে বিদেশি পর্যটক মাত্র ৩-৫%। দেশে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কম হওয়ার কারণ হিসাবে পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এ দেশের মানুষের মানসিকতাকে দায়ী করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের চেয়ে তুরস্ক, ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মানুষ বেশি রক্ষণশীল। তবুও সেসব দেশে বিদেশি পর্যটকের ঢল নামে প্রতি বছরই। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত আয়া সোফিয়া স্থাপনাটি ২০২০ সালের ২৪ জুলাই গ্র্যান্ড মসজিদ হিসেবে যাত্রা শুরু করার পর থেকে বছরে স্থানীয় ও বিদেশি মিলে প্রায় ৩০ লাখ পর্যটক স্থানটি পরিদর্শন করছে। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ২.৬৮ কোটি বিদেশি পর্যটক তুরস্কে এসেছে। সৌদি আরবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে পর্যটন আয় হয়েছে ৯৮৬ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২৫% বেশি। উপরন্তু সৌদি আরব পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ‘নুসুক’ নামক একটি ডিজিটাল অ্যাপ চালু করেছে, যার মাধ্যমে ১২০টি সেবা পাওয়া যাচ্ছে। তাই বলে কি এ দেশের মানুষ ভ্রমণ পিপাসু নয়? নিশ্চয়। তাই প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে যায়। বিবিএস’র তথ্য মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৯,২১,৫২০ বাংলাদেশি পর্যটক বিদেশে গেছেন, যার ৬০ ভাগের বেশি ভারতে। ভারতের পর্যটকদের তালিকায় ২০২২ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ও ২০২১ সালের আগে টানা পাঁচ বছর শীর্ষস্থানে ছিল বাংলাদেশ।
অথচ প্রাকৃতিক সুন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। এখানে রয়েছে অসংখ্য পাহাড়, নদী, বিল, হাওর, বন, ধর্মীয় স্থান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ও ম্যানগ্রোভ। এছাড়া, এ দেশের ঋতু বৈচিত্র্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। সর্বোপরি সরকারিভাবে ১,০৫১টি টুরিস্ট স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে অনেক হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ, ক্যাফেটেরিয়া, রেস্তোরাঁ বারসহ পর্যটন কর্পোরেশনের মোট ৪৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টি পরিচালনা করছে পর্যটন কর্পোরেশন। বাকি ১৩টি বেসরকারিভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে ১৪০০ জন ট্যুরিস্ট পুলিশ। সম্প্রতি সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় বিলাসবহুল ও দৃষ্টিনন্দন হাউজবোট আকৃষ্ট করছে পর্যটকদের। তবে, সার্বিকভাবে দেশের পর্যটন খাতের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। যার অন্যতম কারণ: পাঁচ দশক অতিক্রান্ত হলেও দেশের পর্যটনশিল্প কীভাবে এগিয়ে যাবে, তার কোনো মহা পরিকল্পনা হয়নি। দ্বিতীয়ত: পর্যটনশিল্পের বিকাশে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তরের কাজের সমন্বয়ের জন্য ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি জাতীয় পর্যটন পরিষদ গঠন করা হয়, যার সভাপতি প্রধানমন্ত্রী এবং সদস্য সচিব বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব। পরিষদের বছরে অন্তত দুটি সভা করার কথা। কিন্তু পরিষদ গঠনের পর গত ৩০ বছরে সভা হয়েছে মাত্র তিনটি। সর্বোপরি পর্যটন সংস্থার লোকজনের কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। দুর্নীতি ও চাঁদাবাজিও ব্যাপক। ভালো যোগাযোগ, যানবাহন, নিরাপত্তা, হোটেল, দোভাষী, পরিবেশ ইত্যাদিরও অভাব প্রকট। দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোকে তুলে ধরতে পর্যাপ্ত প্রচারণাও নেই। দূতাবাসগুলো থেকেও পর্যটন বিষয়ক তথ্য পাওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ নেই, তথ্য নেই সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতেও। পিএটিএ প্রকাশিত তথ্য ছকে এ অঞ্চলের সব দেশের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বাংলাদেশের কোনো তথ্য সেখানে নেই। ২০১৬ সালে শিল্প নীতিতে পর্যটনখাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পর্যটনকে এখনো শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তাই এই খাতের শ্রমিকরা চাকরিচ্যুত হওয়াসহ শ্রম-অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পর্যটন খাতের উন্নতির সর্বাধিক অন্তরায় হচ্ছে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, হয়রানি ও নিরাপত্তাহীনতা। যেমন: কিছুদিন আগে খবরে প্রকাশ, এক পর্যটন কেন্দ্রে এক নারী ও এক পুরুষকে একত্রে বসে থাকতে দেখে এক পুলিশ জিজ্ঞাসা করেন, আপনারা কারা? প্রতিত্তোরে পর্যটকরা বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী। তখন পুলিশ পুনরায় বলেন, বিবাহের কাবিননামা দেখান। খবরটি প্রকাশের পর তা নিমিষের মধ্যেই টক অব দি কান্ট্রিতে পরিণত হয়। তার পর থেকে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নারীদের গমন কমে গেছে! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা এক নিবন্ধে বলেন, ভুটানের এক বৌদ্ধ ভিক্ষুককে নিয়ে উত্তর বঙ্গের এক তীর্থস্থান পরিদর্শনে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে এক হাতি এসে গাড়ির সামনে দাঁড়ায়। ড্রাইভার তাকে কিছু টাকা দেয়। কিন্তু তাতে খুশি হয়নি হাতিটি। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ শুরু করে। তাই প্রাণ ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে আমরা ভৌ দৌড়। পরে সেই ভিক্ষুটি আর গন্তব্যস্থানে যাননি। ঢাকায় ফিরে এসেছেন। এ তো গেল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পশুর পশুত্ব। এছাড়া, অসংখ্য মানুষ রয়েছে, যাদের কারণে দেশের পর্যটন খাতের সর্বনাশ ঘটছে অহরহ। কক্সবাজারের এক হোটেল মালিক বিবিসিকে বলেন, রাতে পর্যটকদের নিরাপত্তা তো দূরে থাক, আমরাই নিরাপত্তার অভাব বোধ করি। টোয়াব বলেছে, ‘মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত পর্যটন। শুধু আমাদের ট্যুর অপারেশন খাতেই ৫,৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবুও এই খাতের উদ্যোক্তারা কোনো প্রণোদনা পায়নি। অন্যদিকে, ২০২০ সালের শেষের দিকে বিটিবির সিইও বলেন, ‘পর্যটন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বড় বিষয় হতে পারে। হতে পারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাতিয়ার। আগে এই খাতে সেভাবে মনোযোগ দেওয়া হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী ২৫ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা পর্যটনের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছি। এর ভিত্তিতে পর্যটন খাতকে নতুন করে সাজানো হবে। কিন্তু যা এখনো হয়নি!’
গত ২৩ মে পর্যটন উন্নয়ন বিষয়ক এফবিসিসিআই’র সভায় বক্তারা বলেন, পর্যটনের সঙ্গে সরাসরি ১০৯টি খাত ও পরোক্ষভাবে ১১০০টি খাত সংযুক্ত। প্রতি ১ জন পর্যটকের জন্য ১০টি প্রত্যক্ষ ও ৩৫টি পরোক্ষ কর্মসংস্থানের তৈরি হয়। পর্যটনের উন্নয়নের জন্য এসডিজির অন্তত ৬টি লক্ষ্য সরাসরি জড়িত। বাকি লক্ষ্যগুলোও পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত। তাই পর্যটনের বিকাশ না হলে ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজি অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। সেজন্য পর্যটনের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সম্প্রতি খবরে প্রকাশ,২০৫০ সাল নাগাদ এশিয়া হবে পর্যটকদের গন্তব্য। তখন পৃথিবীর প্রায় ৫০% পর্যটক ভ্রমণ করবে এশিয়ায়। অন্য এক খবরে প্রকাশ, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পর্যটকের সংখ্যা ১০০ কোটিরও বেশি। ২০২৫ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬০ কোটি। পর্যটন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিপুল সংখ্যক পর্যটকের প্রায় ৭৩% ভ্রমণ করবে এশিয়ায়। বাংলাদেশ যদি এ বিশাল বাজারের বড় অংশীদার হতে পারে তাহলে পর্যটনের হাত ধরেই বদলে যেতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতি। হ্যাঁ, দেশের সার্বিক উন্নতি ও বেকারত্ব হ্রাস করার জন্য দেশের পর্যটন খাতের আয় কমপক্ষে জিডিপির ১০%-এ উন্নীত করতে হবে। সে লক্ষ্যে দ্রুত পর্যটন খাতের সব প্রতিবন্ধকতা দূর, ২৫ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনা প্রণয়ণ ও বাস্তবায়ন, পর্যটনকে শিল্পের মর্যাদা প্রদান এবং জাতীয় পর্যটন পরিষদের নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠান করা আবশ্যক।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা