মুহম্মদ সা. প্রশংসিত বার্তাবাহক
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:২৩ পিএম | আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম
‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’র সাথে ওতপ্রোতভাবে বিজড়িত রয়েছেন ‘মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ’ (সা.)। এই অনুপম বাণীর আভিধানিক মর্ম, ‘আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ উপাস্য নেই, মুহম্মদ (সা.) তাঁর প্রেরিত রসুল।’ এর ব্যাখ্যা সুদূর প্রসারী, যা স্বীয় জবানে, জানে ও জরুরি রূপে কর্মে রূপান্তরিত করা ঈমানের বৈশিষ্ট্য। তা ক্বোরআন হাদিসে মূল উৎস। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভ সম্ভব নয়। তাঁকে ব্যতীত সৃষ্টি জগতের জল্পনা-কল্পনাও নেই। কবির ভাষায়: ‘চন্দে ছুজম দর-ফিরাক্কত ইয়া মুহম্মদ মুস্তাফা, কয়-ববিনম আঁ-জামালত ইয়া মুহম্মদ মুস্তাফা।’ রসুলুল্লাহ (সা.)-কে স্বাগতের অভিসিক্তে সর্বজনীন খুশির পয়গাম নিয়ে আসে ‘ফাতেহা দোয়াজ দাহম’। অনুসন্ধিৎসুদের তত্ত্ব-তালাশে প্রতীয়মান, সৃষ্টিকর্তার আদেশ-বর্তিকায় হযরত আদম (আ.) থেকে যুগ-যুগান্তের ঘূর্ণিতে একলক্ষ চব্বিশ হাজার মতানৈক্যে দু’লক্ষ চব্বিশ হাজার নবীর শুভাগমন ঘটে, যাতে শান্তির বাণীর প্রকল্পে একেশ্বরবাদের প্রকাশ পায়। সব শেষে স্রষ্টার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ ও প্রশংসিত রসুল (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুন রবিউল আউয়াল সোমবার শুভলগ্নে আরবের মক্কা নগরে বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু পবিত্র কাবা’র নিকটবর্তী স্থানে মা আমিনার গৃহে আত্মপ্রকাশ করেন। নির্ণেয় তারিখ থেকে ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ বা ‘ফাতেহা দোয়াজ দাহম’ সারা বিশ্বে উদযাপিত হয়ে থাকে। সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ রসুলের (সা.) পূর্বাভাসে পিতা আব্দুল্লাহর মৃত্যু হলেও পরবর্তী স্বল্পতায় মাতা আমিনা আল্লাহ পাকের মর্জিতে আলমে দুনিয়া ত্যাগ করেন।
রসুলুল্লাহ (সা.) জীবনে বহু ধরনের বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে ৬১১ খ্রিস্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি (১৭ রমজান) ৪০ বছর বয়সে পরম কৌশলী সুমহান আল্লাহ পাকের আদেশে নবী বা রসুল হিসাবে ঘোষিত হন। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে পুণ্যময় মক্কা থেকে মদিনা শরিফ অভিনন্দিত হন। তার প্রত্যাবর্তনের তারিখ থেকে হিযরত বা হিজরি সন গণনা করা হয়। প্রথম হিজরিতে মসজিদে নববী স্থাপন, যেখানে প্রতি নামাজের ফজিলত পঞ্চাশ হাজারের সম্পূরক। দ্বিতীয় হিজরিতে আজান, জাকাত ও রোজা নির্ধারিত এবং বদরের যুদ্ধ। অতঃপর তৃতীয় হিজরিতে ওহুদের যুদ্ধ পৃথিবীর ইতিহাসে দুঃখ ও শোচনীয় অধ্যায় রচনা করে। ৬ষ্ঠ হিজরিতে খন্দকের যুদ্ধ ও হুদাই বিয়ার সন্ধি এবং পর্দা প্রথা তৎসঙ্গে পবিত্র হজ্বের তাৎপর্য ও তা জরুরি বলে গুরুত্ব আরোপিত হয়। ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে বা ৭ম হিজরিতে মদ্যপান সম্পূর্ণভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়। ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে বা ৮ম হিজরীতে মক্কা শরিফ বিজয় করেন তিনি। ৬৩১ খ্রিস্টাব্দে বা ৯ম হিজরিতে তাবুক অভিযানের পর ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে বা ১০ম হিজরিতে স্বীয় পবিত্র জীবনের সর্বশেষ হজ্বব্রত পালন করেন অগণিত সঙ্গী সাহাবী বা অনুগামী নিয়ে। উক্ত সাহাবীদের হৃদয়তন্ত্রীতে ছিল জেহাদি প্রয়াস। স্বার্থবাদী বিধর্মীদের জুলুম-অত্যাচার ও ধর্মীয় হস্তক্ষেপ রোধ করত অন্যায়ের বিপক্ষে ন্যায়ের রক্তেরাঙা সংগ্রাম ছিল তাঁদের আদর্শ। নিষ্ঠুর জেহাদ ক্রান্তির অন্তরালে বৈপ্লবিক সংগ্রামের সুপ্ত রেখায় মিলিত হয়ে যাঁরা শহিদ হয়েছে তাঁরাই বেহেশতের মানচিত্রে ধন্য হয়েছেন। এতে জেহাদকালের মল্লভূমিতে প্রতি নামাজের সমন্বয়ে বিশ হাজারের মর্যাদা রাখে। আবার ওয়ারাসাতুল আম্বিয়াদের প্রভাবে ও তথ্যাদির চ্যানেলে ধর্মীয় প্রগতির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে মানসুর হয়ে যাঁরা শক্তভাবে হাল ধরেছে তাঁরাই মনজিলে মাকসুদে, সিরাতে মুসতাক্কিমে পৌঁছেছে।
সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহপাক যুগে যুগে তাঁর বান্দাদের হেদায়তের অভিপ্রায়ে ওহী কিতাব, পয়গাম, সহিফা এমনকি তা ব্যতিরেকেও অসংখ্য নবী বা রসুল পাঠিয়েছেন, তন্মধ্যে কারও মতে অনুমেয় ৩১৩ বা ৩১৫ জন ছিলেন পয়গামপ্রাপ্ত রসুল। তথ্যাদির সহন ক্ষমতায় নিরাপত্তার প্রযুক্তিতে সংযত রাখার বাস্তবায়নে আসমানি কেতাবের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ক্বোরআন মজিদ। এতে ২৫ জন নবী বা রসুলের নাম প্রকাশ পায়। মূলত স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ নবী রিসালাতের অগ্রদূত হযরত মুহম্মদের (সা.) প্রতি এ অতুলনীয় কেতাব নাজেল হয়েছে, যা শব্দালঙ্কারের পরিপাট্যে, ছন্দের সুবিন্যাসে, ভাষার মাধুর্যে ও ভাবের গাম্ভীর্যে এ দুনিয়ায় অতুলনীয় ও অদ্বিতীয় মহাগ্রন্থ হলেও অলৌকিকত্বের দিক দিয়ে একেবারেই অনুপম। সমস্যাবহুল পরিক্ষেত্রে আচমকা রূপের ক্রমবিকাশে পবিত্র ক্বোরআন হচ্ছে সত্যের প্রাণকেন্দ্র। তাই তো অতীতের তুচ্ছ কথার রেফারেন্স টেনে আজ চ্যালেঞ্জের বার্তায় ইন্টারনেট ম্যাসেজের যুগ পেরিয়ে যাওয়ার পথে। যৌক্তিকতার খসড়া প্র্যাকটিসে অবর্ণনীয় সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার বর্ণোজ্জ্বল রূপ পরিগ্রহ করছে আল ক্বোরআন। সত্যতা নিয়ে সন্দিহানের বিতর্কে সকলের সার্বিক সহযোগিতায় নিত্যানন্দে রাজনৈতিক অথবা অরাজনৈতিক আলোচনা চক্রে নৈতিকতার ক্ষেত্রে একমাত্র ক্বোরআন হাদিসই যথেষ্ট। তথ্যাদির চ্যানেলে প্রচারিত ও বিশেষজ্ঞের প্রভাবে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ নিয়ে ধর্মীয় প্রগতির লক্ষ্যে যাঁরা শক্তভাবে হাল ধরছে তাঁদের জীবন অবশ্যই ধন্য। ধর্মীয় উপাসনার কেন্দ্রস্থল খানায়ে কাবা’র মোকাবিলাতে প্রতি নামাজের পরিলক্ষ্যে এক লক্ষের সমকক্ষ। রসুলুল্লাহর (সা.) আগমন স্থান সেই কাবা শরিফ সংলগ্ন স্থান থেকে ২৫০ মাইল বা ৩৭৫ কিমি উত্তরে মসজিদে নব্বীর পাশে রিয়াজুল জান্নাত অর্থাৎ পবিত্র মদিনায় বিশ্ব নবীর (সা.) রওজা শরিফ প্রত্যক্ষদর্শিতার অনুধাবনে তাঁর প্রতি সাক্ষাতের সাক্ষ্য দেয়।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তোফাজ্জলের জানাজায় মানুষের ঢল, দাফন হলো বাবা-মা ও ভাইয়ের কবরের পাশে
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
গণপিটুনিতে হত্যা: ঢালাওভাবে ছাত্রদের বিজয়কে খাটো করতে আওয়ামী মিডিয়ার আস্ফালন, সমালোচনার ঝড়
সাবেক এমপি ইয়াকুবসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে
ভারতকে ৩৭৬ রানে গুটিয়ে দিল বাংলাদেশ, হাসানের ৫
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরো ১৫০ অনিয়মিত বাংলাদেশি
দোয়ারাবাজার সীমান্তে মহিষসহ মাছের চালান জব্ধ
সিলেটে ১৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার, নারী গ্রেফতার
আশ্বিনকেও ফেরালেন তাসকিন
কক্সবাজার পাহাড়তলীতে অনৈতিক কাজে অতিষ্ঠ মানুষ, বাধা দেয়ায় বাসার মালিকের উপর হামলা
অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির খসড়া পাঠিয়েছে ইইউ
তাসকিনের জোড়া আঘাত, লিটনের রেকর্ড
ডিবির আলোচিত ডিসি মশিউর গ্রেপ্তার
১৯৯ রানের জুটি ভাঙলেন তাসকিন
গণপিটুনিতে দুই মাসে ৩৩ জনের মৃত্যু
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় প্রশ্ন তুললেন জয়
মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন খুলছে আজ
বিচিত্রার সম্পাদক দেওয়ান হাবিব আর নেই
জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হত্যা : ৮ শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ