ঢাকা   বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ | ২৯ কার্তিক ১৪৩১

গার্মেন্ট খাতের সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

Daily Inqilab সরদার সিরাজ

১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম

দেশের রফতানির ও চলতি শিল্পের প্রধান খাত গার্মেন্ট গভীর সংকটে নিপতিত! যেমন: রফতানি ও মূল্য হ্রাস, রফতানিকৃত গার্মেন্টের কিছু ফেরত আসা, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন ও বহু কারখানা বন্ধ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, কাঁচামাল ও দক্ষ জনবলের অভাব, ব্যাপক দুর্ঘটনা, শ্রমিকের উৎপাদনশীলতার হার কম ইত্যাদি। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে ২০২২ সালে গার্মেন্ট রপ্তানির হিস্যা ছিল চীনের-৩১.৭%, বাংলাদেশের-৭.৯%, ভিয়েতনামের-৬.১%, তুরস্কের-৩.৫% ও ভারতের-৩.১%। বিভিন্ন তথ্য মতে, ২০২২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র হতে পোশাকের মূল্য পাচ্ছে বর্গমিটারপ্রতি (মার্কিন ডলারে) বাংলাদেশ ৩.১০, কম্বোডিয়া ৩.২০, ভিয়েতনাম ৩.৭১ ও ইন্দোনেশিয়া ৪.৫। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে গার্মেন্ট রপ্তানি থেকে দেশের আয় হয়েছে ৪,৬৯৯ কোটি ডলার, যা দেশের মোট রফতানির ৮৪%। বিজিএমইএ’র সভাপতি গত ১২ নভেম্বর বলেছেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৬,৮৮৫টি পোশাক কারখানা বিজিএমইএ’র সদস্যপদ গ্রহণ করলেও পরবর্তীতে ৩,৯৬৪টি বন্ধ হয়ে গেছে। বিজিএমইএ’র সদস্য ছাড়াও কিছু গার্মেন্ট রয়েছে। সব মিলে বর্তমানে গার্মেন্ট খাতে মোট শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ লাখের বেশি, যার ৮০% নারী। গার্মেন্টের লিংকেজ খাতে প্রায় এক কোটি শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। গত ৭ নভেম্বর এক দৈনিকে প্রকাশ, বর্তমানে পোশাক শ্রমিকের মাসিক নিম্নতম মজুরি (মার্কিন ডলারে): বাংলাদেশে ৭২, ভারতে ১৭১, চীনে ৩০৩, কম্বোডিয়ায় ২০০, ইন্দোনেশিয়ায় ২৪২, ভিয়েতনামে ১৭০ ও পাকিস্তানে ১১০ ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকের মজুরি বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন! অন্যান্য সুবিধাও কম। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারও নামে মাত্র। নিয়োগ পত্র না থাকায় চাকরিরও কোনো নিশ্চয়তা নেই। উপরন্তু অবসরোত্তর/ চাকরিচ্যুতির পর খালি হাতে ফিরতে হয়। সর্বোপরি দেশের মূল্যস্ফীতি সর্বাধিক। ফলে প্রাপ্ত মজুরিতে সংসার চলে না শ্রমিকদের। তাই শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করছে এ বছরের প্রথম থেকেই, যা ইতোমধ্যে বেগবান ও সহিংস রূপ নিয়েছে। গার্মেন্ট শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা অনেক। তাই তাদের ন্যূনতম মাসিক মজুরির দাবিও ভিন্ন। যেমন: ২৩,০০০ টাকা, ২০,৩৯৩ টাকা, ২৫,০০০ টাকা ইত্যাদি। এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্সের মতে, ৪ সদস্যের একটি পরিবারের প্রয়োজন প্রায় ৫১ হাজার টাকা। বিলসের মতে, ৩৩ হাজার টাকা এবং সিপিডির মতে, ২৯,৪১০ টাকা। শেষাবধি সিপিডি গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য মাসিক ন্যূনতম মজুরি ১৭,৫৬৮ টাকা করার সুপারিশ করেছে। এই অবস্থায় গত ৭ নভেম্বর ৬ষ্ঠ বারের মতো ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য ৫৬.২৫% মজুরি বৃদ্ধি করে মাসিক ন্যূনতম মজুরি ১২,৫০০ টাকা (১১৩.৬৩ ডলার), যার মূল মজুরি ৬৩%, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫%, গ্রেড সাত থেকে কমিয়ে পাঁচটি এবং রেশনিং ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত পারিবারিক কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যপণ্য প্রদানের ঘোষণা করেছেন, যা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।

স্মরণীয় যে, ২০১৮ সালে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি আট হাজার টাকা করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন যাবত দেশে নিত্যপণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকরা চলতি বছরের শুরু থেকেই বেতন বৃদ্ধির দাবি করছে। তৎপ্রেক্ষিতে সরকার গত এপ্রিলে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করেন। গত ২২ অক্টোবরে বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিক প্রতিনিধিরা ২০,৩৯৩ টাকা ও মালিক প্রতিনিধিরা ১০,৪০০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করে। অতঃপর গত ৭ নভেম্বর সরকার ১২,৫০০ টাকার খসড়া নিম্নতর মজুরি ঘোষণা করে, যার খসড়া গেজেট প্রকাশিত হয়েছে গত ১২ নভেম্বর। তাতে কোন আপত্তি থাকলে তা নিয়ম অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের ১৪ দিনের মধ্যে মজুরি বোর্ডের কাছে পাঠাতে হবে। অতঃপর এ মাসেই চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশিত হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মজুরি মেনে নেওয়ার জন্য গার্মেন্ট শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিজিএমইএ নতুন মজুরির আলোকে পোশাকের মূল্য সমন্বয় করার জন্য বৈশ্বিক ১৬টি ব্র্যান্ড ও এএএফএকে চিঠি দিয়েছে ।

১৩ নভেম্বর এক দৈনিকে প্রকাশ, গত তিন দশকে দেশে গার্মেন্ট রপ্তানি বেড়েছে ২৪ গুণ আর মজুরি বেড়েছে ১৩ গুণ। দ্বিতীয়ত: বর্তমান ঘোষিত বর্ধিত মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে মূল্যস্ফীতি ৩-৪ গুণ বেশি। তাই বেশিরভাগ শ্রমিক ঘোষিত মজুরি প্রত্যাখ্যান করে ৫ দফা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। বর্ণিত ৫ দফার অন্যতম হচ্ছে ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করে বৃদ্ধি করা, সব গ্রেডে একই হারে মজুরি বৃদ্ধি করা, প্রতিবছর ১০% হারে মজুরি বৃদ্ধির বিধান করা, ষষ্ঠ ও সপ্তম গ্রেড বাতিল করে পাঁচটি গ্রেড করা ও শিক্ষানবিশের বিধান বাতিল করা। এছাড়া, কতিপয় সংগঠন ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি করেছে। শ্রমিকরা আরো বলেছে, সরকারের দাবি অনুযায়ী মজুরি বৃদ্ধি ৫৬.২৫% হয়নি, ইনক্রিমেন্টের হিসাবে ৩৯% বেড়েছে, যা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১৪১-এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তবুও আন্দোলন দমন করার জন্য পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে। তাতে এ পর্যন্ত ৪ শ্রমিক নিহত, বহু শ্রমিক আহত, অনেক মামলায় বহু শ্রমিক গ্রেফতার হয়েছে। অনেক কারখানা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হওয়ায় মালিকরা সেসব বন্ধ করে দিয়েছে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নীতি গ্রহণ করেছে। সরকারের অনেকেই বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে সরকারি বা ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যারা চাকরিতে প্রবেশ করে তারাও ২০ হাজার টাকার মতো বেতন পান। তাই গার্মেন্টকর্মীদের মজুরি আরো বৃদ্ধির দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। গার্মেন্ট আন্দোলনে বিএনপির কালো হাত ও বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে, ভাড়াটে লোকরা আন্দোলন করছে ইত্যাদি। আন্দোলন এলাকায় ব্যাপক পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করে শ্রমিক দমন-নিপীড়ন বৃদ্ধি, ভাংচুরের বহু মামলায় কয়েক হাজার শ্রমিককে আসামী ও অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শ্রমিকদের দমন-নিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছে স্কপ, জাপা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অনেকেই। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তর শ্রমিকদের ওপর চালানো সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপভিত্তিক ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন বলেছে, বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের দারিদ্রসীমার উপরে উঠতে মাসে ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা হওয়া প্রয়োজন। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের নূ্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা হওয়া বাঞ্ছনীয়।

শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বজায় রেখে গার্মেন্টের উন্নতি সম্ভব নয়। তাই গার্মেন্ট শ্রমিকদের প্রধান দাবি সর্বশেষ ঘোষিত মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে পুনর্নির্ধারণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে। সেটা শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী না হলেও সিপিডির সুপারিশকৃত মজুরি হতে পারে। তাতে কারো আপত্তি থাকবে না। কারণ, সিপিডি একটি নিরপেক্ষ ও দক্ষ সংস্থা। সকলের আস্থা আছে সংস্থাটির প্রতি।সর্বোপরি সব গার্মেন্ট শ্রমিকের জন্য স্থায়ী রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। ইতোপূর্বে গার্মেন্ট মালিকদের অনেকেই বলেছেন, ক্রেতারা পোশাকের মূল্য বাড়ালে শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সম্প্রতি ক্রেতারা বাংলাদেশের গার্মেন্টের মূল্য বাড়াতে রাজি হয়েছে বলে গত ৯ নভেম্বর জার্মান বেতারে প্রকাশ। উক্ত খবর মতে, এইচঅ্যান্ডএম, গ্যাপ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড শ্রমিকদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ থেকে কেনা পোশাকের মূল্য বাড়াতে রাজি হয়েছে। সে কারণে এবং অপচয় ও মালিকদের ভোগ-বিলাস বন্ধ করলে শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরি দিতে কোনো অসুবিধা হবে না। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিলেই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাবে। শ্রমিকরা কর্মে ফিরে যাবে। ইতোমধ্যেই গত ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধকৃত কারখানার কিছু খুলেছে এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে।

দেশের অনেক গার্মেন্টের পরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাল নয়।তাই প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে জানমালের অনেক ক্ষতি হয়। কয়েক বছর আগে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের দাবির প্রেক্ষিতে গার্মেন্ট পরিদর্শনকালে যেসবের পরিবেশ উন্নত করা সম্ভব নয়, সেসব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকীগুলোর পরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানসম্মত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো অনেক গার্মেন্ট পরিদর্শন করা বাকী রয়েছে। সেসব দ্রুত পরিদর্শন করে পরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানসম্মত করতে হবে। তাহলে দুর্ঘটনা কমে যাবে। দেশের বেশিরভাগ গার্মেন্টের মালিক শ্রমিকদের নিয়োগ পত্র, নিয়মিত বেতন ও ওভার টাইম দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। উপরন্তু এসব কারণে শ্রমিকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করে। অনেকেই ঘনঘন চাকরি বদলায়, যা উন্নতির চরম অন্তরায়। তাই এসব অন্যায় দ্রুত বন্ধ করা জরুরি। দেশের বেশিরভাগ গার্মেন্ট আবাসিক এলাকায় হওয়ায় নানা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই সব গার্মেন্ট মূল শহরের বাইরে স্থানান্তর করার যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার। সম্প্রতি বেশিরভাগ কারখানা ঠিক মতো গ্যাস, বিদ্যুৎ ও কাঁচামাল পাচ্ছে না, মূল্যও অত্যধিক। ফলে, উৎপাদনের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এসব সংকট দ্রুত দূর করা প্রয়োজন। বিদেশে হাই কোয়ালিটির পোশাকের চাহিদা ও মূল্য বেশি। তবুও আমাদের সেসব পোশাক রফতানির পরিমাণ কম, মোট পোশাক রফতানির মাত্র ২০%। এতে মোট রফতানির পরিমাণ ও লাভ কম হচ্ছে। তাই উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরির দিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। গার্মেন্ট রফতানিকারী দেশগুলোর মধ্যে আমাদের উৎপাদনশীলতার হার কম। যা শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অদক্ষতার কারণেই হচ্ছে। তাই উচ্চতর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। দেশে গার্মেন্ট তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালের অধিকাংশই আমদানিকৃত। ফলে লাভ কম হয়। তাই কাঁচামাল দেশে তৈরি বাড়াতে হবে। এতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এলডিসি উত্তরণোত্তর জিএসপি সুবিধা বন্ধ হবে। তাতে দেশের রফতানি খাত চরম সংকটে পড়বে। তাই পশ্চিমা দেশে জিএসপি প্লাস পাওয়ার জন্য সরকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পশ্চিমারা কারখানার পরিবেশের উন্নতি, শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি প্রদান ও আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করার শর্ত দিয়েছে। সে প্রেক্ষিতে সম্প্রতি শ্রম আইন-২০২৩ সংশোধন করা হয়েছে। এটা দ্রুত বাস্তবায়ন এবং বাকী শর্তগুলো পূরণ করা আবশ্যক। তাহলে জিএসপি প্লাস পাওয়া সহজতর হবে। ইতোমধ্যেই দেশের এনএপি বাস্তবায়ন ও শ্রম খাতের উন্নতি পর্যালোচনা করে দেখার জন্য ইইউয়ের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে। তারা সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করছে। সব নিয়ম পালন করেই গার্মেন্ট রফতানি করা হয়। তবুও সম্প্রতি পশ্চিমা ক্রেতারা নানা ত্রুটির অজুহাতে অনেক গার্মেন্ট ফেরত দিচ্ছে। গার্মেন্ট দেশের রফতানি ও কর্মসংস্থানের প্রধান খাত। তাই এ খাতের অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য ক্রেতাদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। নতুবা প্রতিযোগীরা সুযোগ নেবে। উপরন্তু পশ্চিমা দেশের বাইরেও গার্মেন্ট রফতানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। আন্দোলনের কারণে যেসব শ্রমিক নিহত ও আহত হয়েছে, তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, সব মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে অবিলম্বে। তাহলে শ্রমিকদের অসন্তোষ কমবে। বিজেএমইএ নিহত ৩ শ্রমিকের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। এটা ভালো উদ্যোগ। তাই এটা সরকারেরও করা দরকার। সাম্প্রতিক আন্দোলনের কারণে পোশাকের ক্রেতা মহলে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন ও রফতানির পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিজিএমইএ’র সভাপতিও সম্প্রতি বলেছেন, তৈরি পোশাক খাতে চলমান অস্থিরতা নিয়ে বিদেশি ক্রেতারা উদ্বিগ্ন এবং তারা আপাতত নতুন অর্ডার দিচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, ঢাকা ও গাজীপুরের গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি দ্রুত নিঃষ্পত্তি না হলে তা দেশের সব অঞ্চলের গার্মেন্টে ছড়িয়ে পড়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাহলে দেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

লেখক:সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আন্তঃনগর ট্রেনের সময় পরিবর্তন করুন
জনপ্রশাসনে মেধাশূন্যতা : কারণ ও প্রতিকার
ভারতীয় হেজিমনি ও আওয়ামী লীগের আত্মঘাতী রাজনীতি
বিতর্ক পরিহার করতে হবে
কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত
আরও

আরও পড়ুন

লিসান্দ্রো মার্তিনেজকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পাচ্ছেনা আর্জেন্টিনা

লিসান্দ্রো মার্তিনেজকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পাচ্ছেনা আর্জেন্টিনা

খালাস পেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক এপিএস অপু

খালাস পেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক এপিএস অপু

পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক তল্লাশি

পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক তল্লাশি

আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ১৮.৪৬ বিলিয়ন ডলার

আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ১৮.৪৬ বিলিয়ন ডলার

অফিস-আদালতসহ সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয় : রিজভী

অফিস-আদালতসহ সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয় : রিজভী

পার্লামেন্টে ক্ষমা

পার্লামেন্টে ক্ষমা

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তায় নতুন প্রহরী: রোবট কুকুর!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তায় নতুন প্রহরী: রোবট কুকুর!

লুকিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করায় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে বহিস্কার

লুকিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করায় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে বহিস্কার

মাকে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ছেলে গ্রেফতার

মাকে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ছেলে গ্রেফতার

সীমান্তে ৪ বাংলাদেশী নারী আটক

সীমান্তে ৪ বাংলাদেশী নারী আটক

গুলি বর্ষণকারী ৭৪৭ পুলিশ শনাক্ত গ্রেফতারের উদ্যোগ নেই

গুলি বর্ষণকারী ৭৪৭ পুলিশ শনাক্ত গ্রেফতারের উদ্যোগ নেই

সিলেটে মতবিনিময় সভা করলো নেজামে ইসলাম পার্টির

সিলেটে মতবিনিময় সভা করলো নেজামে ইসলাম পার্টির

স্বামী স্ত্রীকে শর্ত লাগিয়ে তালাক দেওয়ার পর শর্ত উঠিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে।

স্বামী স্ত্রীকে শর্ত লাগিয়ে তালাক দেওয়ার পর শর্ত উঠিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে।

আন্তঃনগর ট্রেনের সময় পরিবর্তন করুন

আন্তঃনগর ট্রেনের সময় পরিবর্তন করুন

জনপ্রশাসনে মেধাশূন্যতা : কারণ ও প্রতিকার

জনপ্রশাসনে মেধাশূন্যতা : কারণ ও প্রতিকার

ভারতীয় হেজিমনি ও আওয়ামী লীগের আত্মঘাতী রাজনীতি

ভারতীয় হেজিমনি ও আওয়ামী লীগের আত্মঘাতী রাজনীতি

বিতর্ক পরিহার করতে হবে

বিতর্ক পরিহার করতে হবে

ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে যাবে না

ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে যাবে না

নির্বাচনে হারার পর প্রথমবার জনসমক্ষে বাইডেন ও কমলা

নির্বাচনে হারার পর প্রথমবার জনসমক্ষে বাইডেন ও কমলা